সাদ্দাম ইমন ॥
কয়েক ঘন্টার টানা বৃষ্টি হলেই টাঙ্গাইল শহরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পৌরসভার প্রধান সড়কে হাঁটু পানি জমে থাকে। বৃষ্টির পানির সঙ্গে ড্রেনের পঁচা পানি মিশে ঢুকে পড়ে বাড়ি-ঘরে। এতে বেশি সমস্যায় পড়েন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও ধর্মপ্রাণ মুসুল্লিরা। নোংরা পানি পাড়িয়ে স্কুল-কলেজ ও মসজিদে যেতে হয় তাদের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সকাল থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টির কারণে পৌরসভার প্রধান সড়ক ছাড়াও শহরের আদালতপাড়া, থানাপাড়া, সাহাপাড়া, বেপারীপাড়া, আদি টাঙ্গাইল, ভালুককান্দি, সন্তোষ, কলেজ পাড়া, প্যারাডাইস পাড়াসহ বেশকয়েকটি এলাকার রাস্তায় পানি জমে আছে। বৃষ্টির পানির সঙ্গে ড্রেনের পঁচা পানি মিশে অনেকের বাসা বাড়িতে পানি জমে আছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন পৌরবাসী। যানবাহনসহ পথচারীদের চলাচল চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বেশি সমস্যায় পড়েছেন শিক্ষার্থী ও ধর্মপ্রাণ মুসুল্লিরা। নোংরা পানি পাড়িয়ে স্কুল-কলেজে ও মসজিদে যেতে হচ্ছে তাদের। শুক্রবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে ৬, ৯ ও ১২নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, অনেকের রান্না ঘরে পানি উঠেছে। বাড়ির উঠানে হাটু পানি জমে আছে। ড্রেনেজের ব্যবস্থা না থাকায় পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না।
পৌরবাসী অভিযোগ করে টাঙ্গাইল নিউজকে বলেন, বিগত ১৮৮৭ সালে স্থাপিত টাঙ্গাইল পৌরসভার ১৮টি ওয়ার্ডে আড়াই লাখের বেশি মানুষ বসবাস করে। পৌরসভাটি প্রথম শ্রেনীর হওয়া সত্বেও কাক্সিক্ষত উন্নয়ন হয়নি। রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন না হওয়ায় এবং পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যাবস্থা না থাকায় একটু বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকা। তাদের আরও অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে একটু বৃষ্টিতেই রাস্তাগুলো তলিয়ে যায়। এতে মানুষের চলাচল বিঘিœত হলেও পৌর কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে নজর দিচ্ছে না। সাধারণ নাগরিক সেবা থেকেও বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন তারা।
গৃহিনী নিলুফা বেগম টাঙ্গাইল নিউজকে বলেন, আমরা পৌরসভার মধ্যে বসবাস করি। অথচ আমাদের রাস্তা কোন কিছু নাই জলাবদ্ধতার মধ্যে বসবাস করি। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় আমাদের বাড়ি ঘরে পানি উঠেছে। রান্না ঘরেও পানি উঠেছে। আমরা অনেক কষ্টের মধ্যে আছি। মেয়র ও কাউন্সিলর কেউ আমাদের খোঁজ খবর নেয় না। হারেজ আলী টাঙ্গাইল নিউজকে বলেন, আমাদের পৌরসভা প্রথম শ্রেনীর হওয়া সত্বেও কোন উন্নয়ন হয়নি আমাদের এলাকায়। রাস্তাঘাটের বেহাল দশা মনে হয় না আমরা পৌরসভার মধ্যে বাস করি। এর থেকে একটা ইউনিয়নও ভালো আছে। ড্রেনের কোন ব্যবস্থা নাই। রাস্তার পানি আমাদের বাড়ি ঘরে প্রবেশ করে। পরিবার নিয়ে কষ্টে থাকতে হয়। মেয়রের কাছে দাবি করছি অতি দ্রুত যেন এ রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করা হয়। নবম শ্রেনীর শিক্ষার্থী রাব্বি মিয়া টাঙ্গাইল নিউজকে বলেন, বৃষ্টি হলেই আমাদের রাস্তায় হাটু পানি হয়। পানি পাড়িয়ে আমাদের স্কুলে যেতে হয় অনেক সময় আমাদের জামা-কাপড় নষ্ট হয়। ওভাবেই আমাদের স্কুলে যেতে হয়।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র সিরাজুল হক আলমগীর টাঙ্গাইল নিউজকে জানান, পৌরসভার উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হলে আর কোন দুর্ভোগ থাকবে না।