সাদ্দাম ইমন ॥
বঙ্গমাতা জাতীয় গোল্ডকাপ (অনূর্ধ্ব-১৭) ফুটবলের কোয়ার্টার ফাইনালের খেলা চলাকালীন সময়ে জ্ঞান হারালেন দুই বালিকা খেলোয়াড়। পরে তাদেরকে দ্রুত টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রবিবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে ভুঞাপুর উপজেলার দুই বালিকা খেলোয়াড় (চাঁদনী ও শীলা) মাঠে খেলা চলাকালীন সময়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
এদিকে চরম অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে টাঙ্গাইল স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ (অনূর্ধ্ব-১৭) ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। টানা দুই দিন মাঠে থেকে প্রত্যক্ষ করা যায়, টাঙ্গাইল স্টেডিয়ামের দুটি মাঠে বালক ও বালিকা ফুটবল খেলা চলছে। এখানে রেফারীরা খেলা পরিচালনা করছেন। দুটি মাঠের খেলার ফলাফলসহ বিভিন্ন তথ্য দেওয়ার জন্য একজন কর্মকর্তাও এ বিষয়ে দায়িত্বরত নাই। যে কারনে খেলার তথ্যগুলি রেফারীদের নিকট থেকে নেওয়া। কতিপয় রেফারীরা প্রতিটি খেলার তথ্য সঠিকভাবে দিতে পারেন না। এছাড়া খেলার মাঠে খেলোয়াড়দের জার্সি দেখে বুঝার উপায় নাই এটা কোন দল? সঠিক সময়ে তারা জার্সি পায়নি এটা বিভিন্ন উপজেলা দলের অভিযোগ জেলা ক্রীড়া অফিসের বিরুদ্ধে। ফুটবল টুর্নামেন্টটি অনূর্ধ্ব-১৭ বয়সী বালক-বালিকাদের। অথচ বিভিন্ন দলের অভিযোগ অনেক দলেই বয়স লুকিয়ে বেশি বয়সি খেলোয়াড়দের মাঠে নামাচ্ছেন। দুটি মাঠে খেলা হলে দুটি খেলা পরিচালনার জন্য যথেষ্ট টেকনিক্যাল কমিটি থাকার কথা, যা মাঠে পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে মাঠে কোন খেলোয়াড় ব্যথা কিংবা জ্ঞান হারালে তাদের চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। রবিবার (৮ অক্টোবর) ভুঞাপুর উপজেলার দুই বালিকা খেলোয়াড় (চাঁদনী ও শীলা) মাঠে খেলা চলাকালীন সময়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এ সময় তাদের পর্যাপ্ত চিকিৎসা মাঠে দেওয়া সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে সাংবাদিক মোজাম্মেল হক ও ভূঞাপুর উপজেলা সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম রতনের সহযোগিতায় তাদের দুইজনকে দ্রুত টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। বর্তমানে তারা দু’জনই সুস্থ্য আছেন। এছাড়া প্রচার-প্রচারণার অভাবে টাঙ্গাইল স্টেডিয়ামে দিনব্যাপী ফুটবল খেলা হলেও মাঠে দর্শকের উপস্থিতি খুবই কম।
খেলা চলাকালীন সময়ে জ্ঞান হারানো দুই বালিকা খেলোয়াড় বিষয়ে টাঙ্গাইল জেলা ক্রীড়া অফিসার আল আমিন সবুজ টাঙ্গাইল নিউজকে বলেন, একটি মেয়ে মাঠে আসার সময় গাড়িতে বমি করায় সে আর দুপুরে খায়নি। না খেয়ে সে মাঠে খেলতে নেমে জ্ঞান হারায়। এছাড়া অপরজন মাঠে আঘাত প্রাপ্ত হয়ে জ্ঞান হারায়। পরে দ্রুত তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাদেরকে স্যালাইন দেয়ার পর তাদের দু’জনের জ্ঞান ফিরে আসে। অসুস্থ্য মেয়েদের বাড়িতে খবর দেয়া হলে তারা হাসপাতালে চলে আসে। বর্তমানে তারা দুইজন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তাদের সকল চিকিৎসার খরচ আয়োজক কমিটি থেকে বহন করা হবে।
জানা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ (অনূর্ধ্ব-১৭) ফুটবল টুর্নামেন্টের ৮টি কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত। রোববার (৮ অক্টোবর) দিনব্যাপী টাঙ্গাইল স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসন ও জেলা ক্রীড়া অফিসের আয়োজনে এবং জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহযোগিতায় বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনাল বিজয়ী দলগুলো হলো- বালক (অনূর্ধ্ব-১৭) বিভাগে দেলদুয়ার, সখীপুর, গোপালপুর ও ঘাটাইল উপজেলা এবং বালিকা (অনূর্ধ্ব-১৭) বিভাগে কোয়ার্টার ফাইনাল বিজয়ী দলগুলো হলো- ধনবাড়ী, গোপালপুর, মির্জাপুর ও বাসাইল উপজেলা ফুটবল দল। এসব বিজয়ী দলগুলো সোমবার (৯ অক্টোবর) সেমিফাইনাল খেলায় অংশগ্রহণ করবে।
রোববার (৮ অক্টোবর) দিনের শুরুতে বালক বিভাগে দেলদুয়ার উপজেলা (২-০) গোলে মির্জাপুর উপজেলাকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠে। দ্বিতীয় সখীপুর উপজেলা ও নাগরপুর উপজেলার ম্যাচটি (১-১) গোলে ড্র অবস্থায় খেলা নাগরপুর ফুটবল দল মাঠে খেলায় রেফারিংয়ে ভুল ধরে মাঠ থেকে বের হয়ে গেলে অসমাপ্ত থাকে। ৩য় খেলায় গোপালপুর উপজেলা (৩-১) ভূঞাপুর উপজেলাকে এবং শেষ খেলায় ঘাটাইল উপজেলা (৩-১) গোলে ধনবাড়ী উপজেলাকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠে। বালিকা বিভাগে দিনের প্রথম খেলায় মির্জাপুর উপজেলা দেলদুয়ার উপজেলার সাথে ম্যাচটি গোলশুন্য ড্র হলে টাইব্রেকারে মির্জাপুর উপজেলা (৬-৫) গোলে জয়ী হয়। দ্বিতীয় খেলায় ধনবাড়ী উপজেলা (৭-০) গোলে টাঙ্গাইল পৌরসভাকে এবং গোপালপুর উপজেলা (২-০) গোলে ভূঞাপুর উপজেলাকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠে। নাগরপুর উপজেলার বালিকা ফুটবল দল মাঠে না আসায় বাসাইল উপজেলা ওয়াকওভার পেয়ে সেমিফাইনালে উঠেছে। সোমবার (৯ অক্টোবর) বালক ও বালিকা উভয় গ্রুপের সেমিফাইনাল ম্যাচগুলি অনুষ্ঠিত হবে।