সাদ্দাম ইমন ॥
তথ্য বা সংবাদের চাহিদা মানুষের চিরকালের। তবে এই চাহিদা আরও বেড়েছে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। কি শহরে, কি গ্রামে একই আলাপ আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন। টাঙ্গাইলের প্রতিটি গ্রাম ও শহরের যান্ত্রিক শব্দের মধ্যে চাপা দিতে পারেনি আগামী সংসদ নির্বাচনী শোরগোল। বর্তমান প্রজন্মের হাতে হাতে স্মার্টফোন। সংবাদপত্রের আপডেট ডিজিটাল ডিভাইসগুলোতে চলে আসছে। স্ট্রিমিং হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। কে কত আগে টাটকা খবর পেতে পারে তাই নিয়েই যেন প্রতিযোগিতা।
একদিনে যেমন সরকার দলীয় নতুন-পুরাতন প্রার্থীরা সভা-সমাবেশের মধ্য দিয়ে শহর ও গ্রামগঞ্জের মাঠ গরম করে তুলছেন। ঠিক তেমনি বিরোধী দলগুলোও সরকার পতনের জন্য লোকসমাগম করে আন্দোলন গড়ে তোমার চেষ্টা করছেন। এসব কারণে টাঙ্গাইলে এবারের শীত মৌসুম গরম উত্তাপ ছড়াবে সর্বত্রই।
বর্তমানে সাধারণ মানুষ এসব খবর নিয়েই মেতে থাকছেন। তবে সবচেয়ে বড় ভয় দেখা দিয়েছে অতিরঞ্জিত খবর নিয়ে। গুজব ডালপালা মেলছে। টাঙ্গাইলের সুধীজনরা বলছেন, শিক্ষিতজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিষয়গুলো জানার পর ক্রসচেক করে। তারপর বিশ্বাস করবে কিনা সিদ্ধান্ত নেয়। সচেতন মানুষের বেশির ভাগই অন্তত গুজব ছড়ায় না। আবার কোনো খবর ভাইরাল হয়ে আমজনতার কাছে পৌঁছলে মিঠেকড়া কথা যোগ হতে থাকে। এক কান থেকে চার কান হয়ে প্রতিটি কানেই নতুন নতুন আজগুবি কথা যোগ হয়ে প্রকৃত কথাটি উদ্ভট হয়ে বাতাসে ভেসে বেড়ায়।
এদিকে গ্রামের কৃষক ও দিনমজুরদের থাকে নানা ব্যস্ততা। এর মধ্যেই কাজ শেষে চা’র স্টলে আড্ডা বাদ যায় না। এসব আড্ডায় অনেক কথার মধ্যে যোগ হয় রাজনীতির আলাপ। টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মগড়া গ্রামের কৃষক বাসেত আলী ফসলের মাঠে পরিচর্যার মধ্যে কথা বলাবলি করেন। একটি কমন কথা, ইলেকশন এগিয়ে আসছে। গ্রামে নতুন মানুষের আনাগোনা শুরু হয়েছে। স্পষ্ট হয়ে ওঠে, গ্রামের মানুষ ভোটের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। অপর কৃষক আব্বাস আলী বললেন, যে যত কথাই বলুক- এবার সবাই ভোট দিতে আসবে। কিভাবে এমন মন্তব্য করলেন জানতে চাইলেন উত্তর দেন, হাট-বাজারে বিভিন্ন স্থানে গিয়ে নানাজনের সঙ্গে কথা বলে খবরাখবর রেখে, হাওয়া কোনদিকে বইছে তা তিনি বুঝতে পারেন।
অপরদিকে স্মার্টফোনে নজর তরুণদের। প্রবীণদের টেলিভিশনে জোরালো হবে। নির্বাচন কমিশন বিষয়টি নিয়ে কথা হয় সচেতন লোকজনের সঙ্গে। তারা বলেন, দৈনন্দিন জীবনে অনেক বিষয়ের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বড় একটি ভূমিকা পালন করছে। আগামী সাধারণ নির্বাচনকে ঘিরে এই ভূমিকা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী জানুয়ারিতে দ্বাদশ সাধারণ নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় ধার্য করেছে। এই হিসেবে সামনে শীত মৌসুমে দ্বাদশ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। হাতে সময়ও খুব কম। নির্বাচন নিয়ে মানুষের উৎসাহ বেশি। পক্ষ-বিপক্ষের তুমুল বিতর্ক এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। এই বিতর্ক যতটা হবে মাঠে, তারচেয়ে বেশি হবে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তথ্য-প্রযুক্তির অগ্রযাত্রায় ‘খবরাখবর না জানলে অতৃপ্ত রয়ে যায় দিনগুলো। দেশের মানুষ এখন নিজেদের জীবন প্রবাহের খবরের সঙ্গে উৎসারিত তথ্য ক্ষুধা মেটাতে জানতে চায় দেশের সকল খবর।