আউশের মৌসুমে বোরো ধানের আবাদ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ডা. শফিকুল

কৃষি টাঙ্গাইল মধুপুর লিড নিউজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥
আউশ ধানের মৌসুমে বোরো ধান আবাদ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ডা. শফিকুল ইসলাম। এ মৌসুমে বোরো ধান আবাদ করে ভালো ফলনও পেয়েছেন তিনি। ডা. শফিকুল ইসলাম টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার কুড়িবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ভোলা সদর হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
জানা যায়, আউশের মৌসুমে বোরো আবাদ করলে একই জমিতে বছরে তিন বার ধান আবাদ করা যায়। অন্যদিকে এ মৌসুমে প্রাকৃতিক দূর্যোগে ধান নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা যেমন নেই, তেমনই সেচ ও সারের ব্যবহার কম হওয়ায় খরচ কমিয়ে আনা যায় অর্ধেকে। যে কারণে অধিক লাভবান হয়েছেন ডা. শফিকুল ইসলাম। তার সফলতা দেখে ওই গ্রামের অনেক কৃষক এখন আউশের মৌসুমে বোরো ধানের আবাদ শুরু করেছেন।
কথা হয় ডা. শফিকুল ইসলামের সাথে তিনি টাঙ্গাইল নিউজবিডিকে বলেন, আউশের মৌসুমে চার বছর আগে নিজের ২ বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে বোরো ধানের চায়না গোল্ডেন-১ ও দেশিয় ২৮, ২৯ ধান চাষ শুরু করি। আবাদের প্রথম বছরই ব্যাপক সফলতা পায়। এরপর থেকে প্রতিবছরই আউশের মৌসুমে বোরো ধান চাষ করে আসছি। এ বছর ৬ বিঘা জমিতে দেশিয় হাইব্রিড গোল্ডেন-১ চাষ করেছি। আউশের মৌসুমে প্রাকৃতিক কোনো দূর্যোগ না থাকায় এবং প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় বোরো ধানের ফলন হয় অন্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। অন্যদিকে সেচের পানি আর সারের ব্যবহার কম হওয়ায় ধান চাষে তুলনামূলক খরচের পরিমাণ নেমে আসে অর্ধেকে। এ পদ্ধতিতে একই জমিতে বছরে তিনবার ধান চাষ করে অধিক লাভবান হচ্ছি। দামও ভালো পাওয়া যায়। তিনি বলেন, সারাদেশে এ পদ্ধতিতে ধান চাষ ছড়িয়ে দিতে পারলে কৃষক যেমন অধিক লাভবান হবেন। তেমনই খাদ্য শস্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে দেশ। কৃষি বিভাগের সহযোগিতা পেলে সারাদেশেই এ পদ্ধতিতে ধান চাষ ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব হবে। তখন দেশে আর বেকার কেউ থাকবে না।
স্থানীয় কৃষকরা টাঙ্গাইল নিউজবিডিকে জানান, আউশ মৌসুমে বোরো ধান আবাদ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ডা. শফিকুল ইসলাম। এক জমিতে বছরে তিন বার ফলনও পেয়েছেন তিনি। তার দেখাদেখি আমরাও এখন দেশিয় হাইব্রিড গোল্ডেন-১ ধান চাষ করছি। ফলনও খুব ভালো হচ্ছে, দামও ভালো। স্থানীয় কৃষক জামাল মিয়া টাঙ্গাইল নিউজবিডিকে বলেন, ডা. শফিকুলের পরামর্শে গত বছর আউশ মৌসুমে ৪ বিঘা জমিতে দেশিয় হাইব্রিট গোল্ডেন-১ ধান চাষ করেছিলাম। বিঘা প্রতি ৩০ মণ করে ধান পেয়েছি। এছাড়াও বছরে একই জমি তিনবার ধান চাষ করা যায়। চলতি মৌসুমে আবাদ করেছি। আশা করছি গত বছরের মত এবারও ভালো ফলন পাবো। দামও ভালো পাওয়া যাবে। কৃষি বিভাগ থেকে সহযোগিতা করলে আবাদের পরিমাণ আরও বাড়াবো। আরেক কৃষক কাশেম মিয়া টাঙ্গাইল নিউজবিডিকে বলেন, আউশের মৌসুমে বোরো ধান চাষ করে লাভবান হচ্ছেন ডা. শফিকুল। ধান অনেক ভালো হয়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে সহযোগিতা করলে আমিও আগামীতে এ ধান চাষ করবো। এভাবে সবাই ধান চাষ করলে খাদ্যের কোন ঘাটতি থাকবে না। দামের দাম বৃদ্ধি পাবে না।
মধুপুর উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা আনিছুর রহমান টাঙ্গাইল নিউজবিডিকে বলেন, ডা. শফিকুল ইসলাম আউশ মৌসুমে দেশিয় হাইব্রিড গোল্ডেন-১ বোরো ধানের জাত আবাদ করে ভালো ফলন পেয়েছেন। চলতি আউশ বোরো মৌসুমেও তিনি এই ধানের জাত আবাদ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। তার দেখাদেখি স্থানীয় বেশকয়েকজন কৃষকও এই ধানের জাত আবাদ করে ভালো ফলন পেয়েছেন। এ ধানের জাতকে ডা. শফিকুল ইসলাম চায়না গোল্ডেন ১ বলে দাবি করছেন। অন্যান্য জাতের ধানের ফলনের চেয়ে এই জাতের ধানের ফলন বেশি বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন রাসেল টাঙ্গাইল নিউজবিডিকে জানান, ডা. শফিকুল ইসলাম আউশ ধানের মৌসুমে বোরো ধান আবাদ করে মোটামুটি ভালো সাঁড়া ফেলেছেন।

১৭৮ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *