
নুর আলম, গোপালপুর ॥
ঝিনাই নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে টাঙ্গাইলের গোপালপুরের হেমনগর ইউনিয়নের বেলুয়া থেকে আলমনগর, ফলদা ও মির্জাপুর ইউনিয়নকে সংযুক্ত করা পাকা রাস্তাটি। বেলুয়া হাঁটের পূর্বপাশ ঘেঁষে বড় কুমুল্লী পর্যন্ত আনুমানিক আধা কিলোমিটার পাকা রাস্তা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে নদীতে নেমে যাওয়ায় অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা। চলছে না এ্যাম্বুলেন্সসহ কোনো গাড়ি, এতে বিপাকে পড়েছে মাদারজানি-কুমুল্লী গ্রামের হাজারো কৃষক, কোমলমতি শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা।
জানা যায়, দুই দপ্তরের রশি টানাটানিতে দীর্ঘ দিনেও কাজটি সম্পন্ন করা যায়নি। এখন কাজটি এলজিইডি করতে রাজি হয়েছে। তাই শীঘ্রই টেন্ডার হবে বলে জানান আলমনগর ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মোমেন। জনপ্রতিনিধিরা সভা-সমাবেশে বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও দীর্ঘদিনেও রাস্তাটি সংস্কার না করায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন অটোরিকশা চালক আব্দুর রহিম। বড় কুমুল্লী গ্রামের বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন বলেন, ঝুঁকি নিয়ে চলাচলে বিভিন্ন সময়ে বিয়ের গাড়ি, সারের গাড়ি, সিমেন্টের গাড়ি, কৃষি পন্যেসহ অন্তত দশটি গাড়ি নদীতে পড়তে দেখেছি। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। আর এখনতো কোথাও কোথাও পায়ে হাঁটার রাস্তাটুকুও অবশিষ্ট নেই।
প্রভাষক রকিব উদ্দিন আতিক জানান, এ্যাম্বুলেন্সসহ যেকোন গাড়ি নিয়ে আলমনগরের দিকে যেতে রাস্তায় থাকে হাঁটু পর্যন্ত কাঁদা। বেলুয়ার দিক দিয়ে যাওয়ার উপায় নেই। মাদারজানি-কুমুল্লী গ্রামের অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে বেলুয়া বাজারের পাশে স্কুলে যেতে হয়। ধান, পাটসহ অন্যান্য কৃষিপন্যসহ অন্যান্য জিনিসপত্র হাটে নিতে ভোগান্তির সীমা নেই। এখন শুধু রাস্তার পাশ দিয়ে সাইকেল নিয়ে চলাচল করা যায়। রাস্তাটি এবরোথেবরো হওয়ায় এতেও ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে বারবার দরখাস্ত দিয়েও প্রতিকার মেলেনি। অটোরিকশা চালক মোমেন আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালাতে হয়। রাস্তা না থাকায় চরম ভোগান্তিতে আছি। সাত বছরের বেশি সময় ধরে রাস্তাটির অবস্থা খুবই খারাপ অবস্থা। চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে মানুষকে। জনপ্রতিনিধিরা বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও দীর্ঘদিনেও রাস্তাটি সংস্কার না করায় চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
গোপালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আলমনগর ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মোমেন বলেন, ওয়াপদা ও এলজিইডির টানাটানিতে এতো দেরি হয়েছে। এখন এলজিইডি রাজী হয়েছে ব্লক ফেলে নদী শাসন করে রাস্তাটি সংস্কার করা হবে। খুব দ্রুতই টেন্ডার হয়ে যাবে। এই রাস্তার জন্য এলাকার মানুষ আমাদের বিভিন্ন কটু কথা বলে। আসলে আমাদের চেষ্টার ঘাটতি নেই প্রক্রিয়াটা অনেক জটিল।
এ ব্যাপারে গোপালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসফিয়া সিরাত বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হবে।