ভূঞাপুরে ৪২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে যমুনা তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ॥ প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন

টাঙ্গাইল ভূঞাপুর লিড নিউজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥
প্রতি বর্ষা মৌসুমে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীর তীব্র ভাঙনের শিকার হয় নদীপাড়ের মানুষ। যার কারণে বসতভিটা, ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব চরাঞ্চল এবং তীরবর্তী এলাকার মানুষ। ভাঙন রক্ষায় এলাকাবাসীর দাবি উঠে নদী তীরে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের। ইতোমধ্যে ৪২৩ কোটি ৬৪ লাখ ৩১ হাজার টাকা ব্যয়ে উপজেলার অর্জুনা ইউনিয়নে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কাজ করা হয়েছে। ফলে স্বস্তি পাচ্ছেন নদী ভাঙন এলাকার হাজারও পরিবার।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, দুই প্রকল্পের প্রথমটি উপজেলার অর্জুনায় স্থায়ী প্রতিরক্ষা প্রকল্পের প্রতিরক্ষা বাঁধ কাজের দৈর্ঘ্য ৫.৮৫০ কিলোমিটার ও ড্রেজিং কাজের দৈর্ঘ্য ৬.১২৫ কিলোমিটার। এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ২৬২ কোটি ৭৬ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। কাজটি বাস্তবায়নে ভিন্ন ভিন্ন ঠিকাদারের মাধ্যমে বিগত ২০১৭ সালের জুন মাসে শুরু হয়ে সম্পন্ন হয় বিগত ২০২২ সালে। ফলে রক্ষা পায় ১৫ হাজার হেক্টর ফসলি জমি। দ্বিতীয় প্রকল্পে গোপালপুরের কাউলিবাড়ি থেকে শাখারিয়া পর্যন্ত ভরুয়া-বটতলা প্রকল্পে প্রতিরক্ষা বাঁধ কাজের দৈর্ঘ্য ৩ কিলোমিটার এবং ড্রেজিং কাজের দৈর্ঘ্য ৩.৪০০ কিলোমিটার। এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৬০ কোটি ৮৭ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। কাজটি বাস্তবায়নে পৃথক পৃথক ঠিকাদারের মাধ্যমে ২০১৭ সালের জুন মাসে শুরু হয়ে সম্পন্ন হয় ২০২২ সালে। ফলে ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পায় কোটি কোটি টাকার স্থায়ী সম্পদ।
এদিকে, গত সোমবার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার অর্জুনা ইউনিয়নে যমুনা নদীর তীর ভাঙন রক্ষায় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রথম সংশোধনী বাঁধ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে অতিথি ছিলেন টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনির। বিশেষ অতিথি ছিলেন টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী খন্দকার মিজানুর রহমান, গোপালপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ইউনুস ইসলাম তালুকদার ঠান্টু প্রমুখ।

অপরদিকে, যমুনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের ফলে ওই এলাকার ভূঞাপুর-তারাকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়ক, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মন্দির, হাট-বাজার, বসতভিটা ও ঘরবাড়ি রক্ষা পাবে। বাঁধের ফলে এলাকায় বন্যা দেখা দিবে না। আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নসহ এলাকার উন্নয়ন নিরাপত্তা ও জাতীয় অর্থনীতিতে বিরুপ প্রভাব ফেলবে না। পাশাপাশি বাঁধের কারণে দারিদ্র বিমোচন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। অর্জুনা ইউপি চেয়ারম্যান দিদারুল আলম খান মাহবুব বলেন, বন্যার সময়ে প্রতি বছর ব্যাপকারে নদী ভাঙন হতো। ফলে শতশত পরিবারের লোকজন নিঃস্ব হয়ে রাস্তায় ও আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ও স্থানীয় সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনিরের উদ্যোগে নদী তীর প্রতিরক্ষা বাঁধটি সম্পন্ন হয় এবং ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেন।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনির বলেন, উপজেলার অর্জুনা থেকে ভরুয়া পর্যন্ত যমুনা নদীর ভাঙনে প্রতি বছর অসংখ্য পরিবারের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেত। তীব্র এই ভাঙন রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলা মাত্রই তিনি ৪২৩ কোটি ৬৪ লাখ ৩১ হাজার টাকা ব্যয়ে যমুনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধটি করে দিয়েছেন। যা এ এলাকার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। একইসঙ্গে নদী শাসনে ড্রেজিং কাজও করা হয়েছে। যারফলে এলাকার মানুষ আর নদী ভাঙনের শিকার হবে না। এছাড়া গোবিন্দাসী থেকে নিকরাইল এলাকায় দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ কাজের প্রক্রিয়া চলমান। মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে এমপি হিসেব নয়, জনগণের সেবক হয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। পাশাপাশি বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নৌকায় ভোট প্রার্থনা করছি।

১১৬ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *