প্রবাসী একমাত্র ছেলেকে ফিরে পেতে কালিহাতীতে মায়ের করুণ আকুতি

কালিহাতী টাঙ্গাইল

স্টাফ রিপোর্টার ॥
সৌদী আরব প্রবাসী একমাত্র ছেলেকে ফিরে পেতে সকলের কাছে আকুতি নিয়ে টিয়া বেগম নামে এক মা রোববার (২২ অক্টোবর) দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তিনি জেলার কালিহাতী উপজেলা সদরের ঘুনিসালেংকা গ্রামের জুলহাস উদ্দিনের স্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে কান্নাড়িত কণ্ঠে লিখিত বক্তব্যে টিয়া বেগম জানান, তার একমাত্র ছেলে রাশেদ সৌদী আরবের রাজধানী রিয়াদের আল মাজাল আল আরাবি গ্রুপে বিগত ২০১৭ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত চাকুরি করেছে। পরে করোনার কারণে কোম্পানীর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেলে তার ছেলে বেকার হয়ে পড়েন। এ সময় তাদের প্রতিবেশি কবির হোসেনের ছেলে সৌদী প্রবাসী সজিব মিয়া (৩০) তার ছেলের সঙ্গে দেখা করে ভালো বেতনে চাকুরির কথা বলে ওই দেশের মালকুয়া নামক স্থানে নিয়ে যায়। রাাশেদকে মালকুয়াতে রেখে তার পাসপোর্ট নবায়ন ও আকামাসহ নানা কাগজপত্র তৈরির জন্য আড়াই লাখ টাকা সজিব দাবি করে। পরে ওইসব কাগজপত্রের জন্য তিনি চলতি বছরের (২৯ আগস্ট) প্রবাসী সজিবের বাবা প্রতিবেশি কবির হোসেনের কাছে দেন।
সংবাদ সম্মেলনে করুণ আকুতি নিয়ে টিয়া বেগম জানান, ওই টাকা প্রবাসী সজিব মিয়া পাওয়ার পর থেকে তিনি ছেলে রাশেদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন না। হঠাৎ একদিন রাশেদ ইন্টারনেটের মাধ্যমে ফোন করে তাকে জানায়, সজিব কাগজপত্র ঠিক করার জন্য তার পাসপোর্টসহ আনুষঙ্গিক কাগজপত্র নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে- তাকে খোঁজে পাচ্ছেন না। সজিবের লোকজন তাকে একটি কক্ষে আটকে রেখেছে- এরপরই সংযোগটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সম্প্রতি সজিব মিয়া দেশে এলে তিনি আত্মীয়স্বজনদের নিয়ে রাশেদের কথা জানতে চাইলে সজিব নানা তালবাহানা করতে থাকে। এমতাবস্থায় দীর্ঘদিনেও ছেলে রাশেদের কোন সংবাদ না পেয়ে তিনি মনে করেন তার দেওয়া উল্লেখিত আড়াই লাখ টাকা আত্মসাত করতে সজিব তার লোকজন দিয়ে রাশেদকে হত্যার পর লাশ গুম করে ফেলেছে।
এ বিষয়ে তিনি টাঙ্গাইল জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি কার্যালয়ের মাধ্যমে সৌদিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে একমাত্র ছেলের কোন সন্ধান পাননি। পরে প্রতিকার পেতে গত (৪ অক্টোবর) টাঙ্গাইলের আদালতে মামলা (সিআর-৭৭৮/২০২৩ইং) দায়ের করেন। মামলা দায়ের করায় প্রতিবেশি কবির হোসেন তাকে নানাভাবে হত্যার হুমকি দেওয়ায় তিনি আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধির ১০৭ ধারায় অপর একটি মামলা দায়ের করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনের এক পর্যায়ে টিয়া বেগম ছেলে রাশেদের কথা বলতে গিয়ে অপকৃতিস্থ হয়ে পড়লে তার আইনজীবী মির্জা আনোয়ার মার্জন মিলু অসমাপ্ত লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এ সময় টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

 

১৪৮ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *