কালিহাতীর স্বাস্থ্য সহকারী শান্তর বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন

কালিহাতী টাঙ্গাইল দুর্নীতি লিড নিউজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অধীনে স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে কর্মরত শহিদুল ইসলাম শান্ত বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এতে সিভিল সার্জনের নির্দেশে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সত্যতা পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস কর্তৃপক্ষের।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, এলেঙ্গা পৌরসভার চরভাবলা গ্রামের শহিদুল ইসলাম শান্ত স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে কালিহাতীতে দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত আছেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ থাকলেও নেওয়া হয় না কোন ব্যবস্থা। তিনি নিয়মিত অফিস করেন না। সরকার দলীয় কতিপয় নেতার ছত্রছায়ায় শান্ত গড়ে তুলেছেন একটি শক্তিশালী চক্র। তিনি রাজনৈতিক মঞ্চে ভাষণসহ দলীয় কর্মকান্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। শক্তির দাপটে ভাবলা-ধলাটেংগর এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ঘাট গড়ে তুলেছেন। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়কের এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব পর্যন্ত পরিবহনের মাধ্যমে চোরাই মালামাল লোড-আনলোড করে গুদামজাত ও স্থানান্তর করে চোরাই মালের রমরমা ব্যবসার সাথে যুক্ত বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলার সাহস পায় না। বলতে গেলেই নেতার ভাষায় হুমকি দেন।
ঢাকা-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের পূর্বপাড় থেকে এলেঙ্গার ভাবলা, সল্লা, আনালিয়াবাড়ীর বিভিন্ন পয়েন্টে ট্রাক, বাস, লড়িসহ বিভিন্ন পরিবহনে আনা চোরাই মালামাল লোড-আনলোড ও ক্রয়-বিক্রয়ের নিরাপদ পয়েন্ট হিসেবে বেছে নিয়েছেন চোরাকারবারিরা। প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত ওই সকল পয়েন্টে প্রকাশ্যে চলে চোরাই মাল লোড আনলোড ও ক্রয়-বিক্রয়। চোরাই ব্যবসায়ীরা তাদের মালামাল গুদামজাত করার জন্য চরভাবলা ও বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বপাড়ে রেল স্ট্রেশন এলাকায় বেশকয়েকটি ঘর ভাড়া নিয়ে গোডাউন হিসাবে ব্যবহার করে নিরাপদে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। তারা বিভিন্ন ট্রাক, বাস, লড়িতে করে দেশের বিভিন্নস্থান থেকে আসা রড, স্টীলসীট, কেরোসিন ডিজেল, পেট্রোল, অকটেন, গম, ভুট্টা, আদা রসুন, জিরা, এলাচ, লংসহ মশলা জাতীয় পণ্য, ভারতীয় শাড়ী এমনকি বিভিন্ন নেশা জাতীয় পণ্যের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন যাবত নির্বিঘ্নে চোরাই মালের ব্যবসা করে রাতারাতি অর্থবিত্তের মালিক বনে গেছেন। প্রতিটি পয়েন্টে তাদের ১০/১২ জন শ্রমিক সারারাত পরিবহনে আসা চোরাই মালামাল লোড-আনলোড করে গুদামজাত ও স্থানান্তরের কাজ করে থাকেন। পরিবহন চালক সুপারভাইজার ও হেলপারদের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করে তারা নির্ধারিত পয়েন্টে ওইসব মালামাল আনলোড করে এবং মূল্য পরিশোধ করে থাকেন।
এ বিষয়ে এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির অফিসার ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম জানান, এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেত পূর্ব পর্যন্ত এই এলাকাটি বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানার অধিনে। এছাড়া আমাদের অংশে আমরা সবসময়ই তদারকি করে থাকি। বঙ্গব্ধু সেতু পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর আশরাফ জানান, এ থানায় আমি নতুন এসেছি। মহাসড়কে চোরাকারবারি হয়ে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইন বলেন, খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযুক্ত শহিদুল ইসলাম শান্ত সাংবাদিকদের জানান, চোরাই মালামাল লোড-আনলোড ও ক্রয়-বিক্রয়ের কাজে আমি জড়িত নই। তবে আমরা টাকা দিয়ে বালুর ব্যবসা করি। এছাড়া আমি নিয়মিত অফিস করি।
এসব বিষয়ে টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা: মিনহাজ উদ্দিন মিয়া বলেন, শহিদুল ইসলাম শান্ত নিয়মিত অফিস করেন না। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে অবৈধ বালু ব্যবসা ও চোরা কারবারে জড়িত থাকার একাধিক অভিযোগ পেয়েছি। ফলে কালিহাতী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে তদন্ত কমিটি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে অভিযোগের সত্যতা পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

৪০২ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *