
স্টাফ রিপোর্টার ॥
বাজারে প্রাণিজ আমিষ মাছ, মাংস ও ডিমের দাম আগে থেকেই বেশি। বাড়তি দামেই স্থিতিশীল হয়ে আছে চাল, ডাল, আটা, ময়দা, চিনি ও ভোজ্যতেলের মতো নিত্যপণ্য। এর মধ্যে সরবরাহের ঘাটতিতে সবজির দামও চড়া। খুচরায় অধিকাংশ সবজির দাম কেজি ১০০ টাকার আশপাশে। কয়েকটি সবজির দাম শতক ছাড়িয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের চাপ আরো বেড়েছে। এদিকে প্রায় এক মাস হয়ে গেছে সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। তবু নিয়ন্ত্রণে আসেনি কাঁচাবাজারের পণ্যের দাম। এর মধ্যে সরকার ডিম আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়, আমদানিও করে। কিন্তু এর প্রভাব পড়েনি বাজারে। দাম কমার পরিবর্তে উল্টো বেড়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) টাঙ্গাইল শহরের পার্কবাজার, সিটিবাজার, ছয়আনী বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি। সাধারণ মানের বেগুনের কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা। ভালোমানের গোল কালো রঙের বেগুনের কেজি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। টমেটো ও গাজরের কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা। বরবটি ১০০ থেকে ১১০ টাকা। আর শিমের কেজি পড়ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা।
পার্ক বাজারের সবজি বিক্রেতা আব্দুল করিম বলেন, সবজি কম আসার ফলে দাম বেড়েছে। কয়েক বছরের মধ্যে সবজির এতো দাম দেখা যায়নি। বাজারে করলা, ধুন্দুল, ঝিঙা, কাঁকরোল, কচুমুখীর দাম হাঁকানো হচ্ছে কেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকা। দরদাম করে নিলে একটু কম পাওয়া যাচ্ছে। ভালোমানের একটি লাউ ৮০ থেকে ১০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। কচুর লতি ও চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকার আশপাশে। ৮০ টাকার নিচে আছে হাতেগোনা কয়েকটি সবজি। পটোল ও ঢ্যাঁড়শ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। মুলার কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। আর বাজারে সস্তার সবজি হিসেবে পরিচিত পেঁপেও বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি। দেশি পেঁয়াজের কেজি ১০০ টাকা। আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা। কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি।
সবজির দাম নেমে আসতে আরো কিছুটা সময় লাগবে উল্লেখ করে আড়ত মালিকরা বলেন, বৈরী আবহাওয়ায় শীতের আগাম সবজি নষ্ট হওয়ায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। নতুন সবজি আসার আগে দাম আর কমবে বলে মনে হচ্ছে না। এদিকে ফার্মের মুরগির বাদামি ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি। সোনালি মুরগির দাম রাখা হচ্ছে ৩১০ থেকে ৩৩০ টাকা। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা কেজি। রুই মাছের কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। আর পাঙ্গাশ ও তেলাপিয়ার দাম ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। চাল, ডাল, আটা, ময়দা, চিনি ও ভোজ্যতেলের মতো নিত্যপণ্য উচ্চমূল্যে স্থিতিশীল রয়েছে। বৈরী আবহাওয়ায় শীতের আগাম সবজি নষ্ট হওয়ায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। নতুন সবজি আসার আগে দাম আর কমবে বলে মনে হচ্ছে না।
শহরের থানাপাড়ার বাসিন্দা হাকিম মিয়া পার্ক বাজারে সবজি কিনতে এসে ৬০ টাকায় দুই আঁটি লালশাক কিনে বলেন, সব সবজির দাম বেশি। এজন্য শাক নিলাম। শাকের দামও বেড়েছে। মুদি দোকানের পণ্যের দামও রয়েছে অপরিবর্তিত। তবে মোটা মসুরের ডাল দাম বেড়েছে ৫ টাকা। আগে দাম ছিল ১০৫ টাকা কেজি, এখন তা হয়েছে ১১০ টাকা। এছাড়া ছোট মুসরের ডাল ১৩০, মুগ ডাল ১৩০, খেসারি ডাল ৮০, বুটের ডাল ৯০, ছোলা ৭৫, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭৫, চিনি ১৪০, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৪০, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১২০ ও খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।