বিএনপির হামলায় নিহত পুলিশ সদস্যের নাগরপুরের বাড়িতে চলছে আহাজারি

টাঙ্গাইল নাগরপুর লিড নিউজ

হাসান সিকদার ॥
ঢাকায় বিএনপির মহাসামবেশে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিহত পুলিশ সদস্য আমিরুল ইসলাম পারভেজের বাড়িতে চলছে আহাজারি। তার পরিবারের সদস্যরা এমন করুণ মৃত্যু কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। শনিবার (২৮ অক্টোবর) বিকালে পুলিশ সদস্য আমিরুল ইসলাম পারভেজের মৃত্যুর খবর টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার দপ্তিয়র ইউনিয়নের ফয়েজপুর গ্রামে পৌছায়। এরপর থেকে ওই বাড়িতে নেমে আসে বিষাদের ছায়া। নিহত পুলিশ সদস্যের পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা সেকান্দার মোল্লাসহ পরিবারের সকলেই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।।
জানা যায়, নিহত পুলিশ সদস্য আমিরুল ইসলাম পারভেজ বিগত ২০০৯ সালে পুলিশে যোগদান করেন। তারা দুই ভাই ও এক বোন। চাকুরির সুবাদে পারভেজ পরিবার নিয়ে ঢাকাতেই থাকতেন। গ্রামের বাড়িতে তার বৃদ্ধ বাবা-মা ও ভাই থাকে। তিনি বিগত ২০১২ সালে মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলার বোলদার ইউনিয়নে বিয়ে করেন। তার ৬ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। পারভেজ ডিএমপিতে কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন। শনিবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বিএনপি-জামায়াত সদস্যদের পৈশাচিক হামলায় মৃত্যুবরণ করেন।

এদিকে ছেলের মৃত্যুতে বৃদ্ধ বাবা-মা ও তার স্ত্রীসহ বাড়ির লোকজন নির্বাক হয়ে পড়েছেন। তাদের কান্না ও আহাজারিতে যেন আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির মৃত্যুতে তারা চোখে মুখে যেন অন্ধকার দেখছেন। কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছেন পারভেজের একমাত্র বোন শেফালী আক্তার। মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছেন তার অবুঝ শিশু মেয়ে। নিহত পুলিশ সদস্যের পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা সেকান্দার মোল্লা বলেন, বিএনপি-জামায়াতের বর্বরোচিত হামলায় আমার ছেলের মৃত্যুতে এখন কি করে চলবে সংসার। ওর একমাত্র শিশু মেয়ে তানহার (৬) ভবিষ্যত জীবন অনিশ্চিয়তার মধ্যে পড়ে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা নাঈম মিয়া, আব্দুর সাত্তার, আজাহার উদ্দিনসহ অন্যান্যরা বলেন, নিহত পারভেজের পরিবারে বৃদ্ধ বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবাসহ মা, ভাই-বোন ও স্ত্রী এবং ৬ বছরের শিশু মেয়ে থাকেন। তার পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। তাদের বাড়িতে শোকের মাতম চলছে।
নাগরপুর উপজেলার দপ্তিয়র ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম ফিরোজ সিদ্দিকী বলেন, বিএনপির সমাবেশে সংঘর্ষে নিহত হওয়ার খবর পেয়েছি। ওই পুলিশ সদস্যের বাড়ি মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলায় ছিল। কিন্তু নদী ভাঙনে তাদের বসতভিটা হারিয়ে পাশর্^বর্তী টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার দপ্তিয়র ইউনিয়নের ফয়েজপুর গ্রামে এসে বসবাস শুরু করেন। ফয়েজপুরে বসবাস করলেও এখনও তারা দৌলতপুর এলাকার ভোটার।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, ওই পুলিশ সদস্যের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকায় প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর মরদেহ তার গ্রামের বাড়িতে আনা হবে। নিহতের পরিবার যেভাবে চাইবে সেভাবেই জানাজা ও দাফনের কাজ হবে। তার পরিবারের পাশে দাঁড়ানোসহ সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া মরহুমের শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা ও সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি।

২৩২ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *