বিএনপির অবরোধে টাঙ্গাইলের রাজপথ দখলে আওয়ামী লীগ

টাঙ্গাইল টাঙ্গাইল সদর রাজনীতি লিড নিউজ

সাদ্দাম ইমন ॥
তিন দিন অবরোধ কর্মসূচির প্রথম দিনে মাঠে নেই বিএনপি। সকাল থেকে অবরোধ কর্মসূচির প্রথম দিনে টাঙ্গাইল জেলা ও উপজেলার আশপাশের সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) বিএনপির ডাকা তিন দিন অবরোধ কর্মসূচির প্রথম দিনে রিকশা, ভ্যান, সিএনজি, লেগুনা ও মোটরসাইকেলের পাশাপাশি চলছে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও ট্রাক। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে যানবাহনের সংখ্যাও। অবরোধ চলাকালে বিএনপি নেতাকর্মীদের কাউকে রাজপথে দেখা যায়নি। অবরোধের সমর্থনে বিএনপি-জামায়াতের কাউকে পিকেটিং করতেও দেখা যায়নি। বিএনপির ডাকা সেই অবরোধে টাঙ্গাইলের রাজপথ দখলে রেখেছে আওয়ামী লীগ। নাশকতা বা কোনো ধরনের অপ্রীতিকর অবস্থার জন্য পুলিশের নিরাপত্তা জোরদার রয়েছে। সব ধরনের যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও দুরপাল্লার যানবাহন চলাচল মহাসড়কে কম দেখা গেছে।
অবরোধের সমর্থনে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের কোনো কর্মসূচির দেখা না মিললেও জনগণের জানমাল রক্ষা ও জনজীবনের নিরাপত্তায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন। সকালে মহিলা আওয়ামী লীগ অবরোধের প্রতিবাদে শহরে শান্তি মিছিল করেছে। এ সময় জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌসি আক্তার রুনু বলেন, আমরা ভোর থেকে অবস্থান নিয়েছি। বিএনপি-জামায়াতের কোনো অস্তিত্ব নেই। সবকিছু ঠিক আছে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় আমরা সতর্ক। শুনেছি বিএনপি-জামায়াত এখানে আসবে, তবে তাদের কোনো দেখা নেই। দেশের সম্পদ আমাদের রক্ষা করতে হবে।
বাসস্ট্যান্ট ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ বাস কাউন্টার বন্ধ। কয়েকটি কাউন্টার খোলা থাকলেও যাত্রী সংকট রয়েছে। আতঙ্কে অনেকে বাস ছাড়তে পারছে না। সড়কেও যান চলাচল একেবারে কম। তবে এখনো কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে সতর্ক অবস্থান নিতে দেখা গেছে। অবরোধের প্রথম দিনে দূরপাল্লার বাস কম চলাচল করছে। তবে অভ্যন্তরীন সকড়কগুলোতে যথারীতি যান চলাচল করতে দেখা গেছে। এছাড়া ঢাকা-টাঙ্গাইল ও বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে ট্রেন চলাচল ছিল স্বাভাবিক। পরিবহন শ্রমিক ও মালিকরা বলছেন, বাস চলাচলের সিদ্ধান্ত রয়েছে। এ কারণে ভোর থেকে কাউন্টার খোলা রাখা হয়েছে। কিন্তু যাত্রী সংকট রয়েছে। তাই বাস ছাড়া হচ্ছে না। বিভিন্ন পরিবহনের কাউন্টার যাত্রী শূন্য দেখা গেছে। যাত্রী না থাকায় বাস কাউন্টারের লোকজনদের বসে থাকতে হচ্ছে বলে জানান তারা। তবে যাত্রীরা ঝুঁকি এড়াতে সিএনজি, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে গন্তব্যে ছুটছেন। শহরের অভ্যন্তরীণ প্রধান সড়কসহ পাড়ামহল্লার সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
টাঙ্গাইল জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শরফুদ্দীন বলেন, মানুষের জীবনযাত্রা ও যানমাল স্বাভাবিক রয়েছে। এরপরও শহর ও মহাসড়কে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
গত (২৮ অক্টোবর) মহাসমাবেশে হামলা, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ আন্দোলনরত বিভিন্ন দলের সহস্রাধিক নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, বাড়ি বাড়ি তল্লাশি, হয়রানি ও নির্যাতনের প্রতিবাদ এবং সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে (৩১ অক্টোবর) ভোর থেকে আগামী (২ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সারাদেশে মহাসড়ক, রেল ও নৌপথে অবরোধ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। বিএনপির এই অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণার পর জামায়াতে ইসলামীও তিনদিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে। সরকারবিরোধী অন্যান্য দলগুলোও এই অবরোধ কর্মসূচিতে সমর্থন দিয়েছে।

 

 

১৩৪ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *