টাঙ্গাইলে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদক গ্রুপের মারামারিতে আহত ৩

অপরাধ টাঙ্গাইল টাঙ্গাইল সদর লিড নিউজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইলে পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে দীর্ঘ দিনের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারি ও কোপাকুপির ঘটনা ঘটেছে। এতে ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হেলাল ফকিরসহ তিনজন মারাত্মক আহত হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে জেলা পরিষদ রোডের জেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস সংলগ্ন ইয়াকুবের মোটরসাইকেল গ্যারেজের সামনে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শহরের কাগমারা, ম্যাসের মার্কেট, হাউজিং, মির্জা মাঠ, দক্ষিণ কাগমারা, তেতুঁলতলা, কাঠাঁল বাগান, কলাবাগানসহ বিভিন্ন এলাকা নিয়ে টাঙ্গাইল পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডটি গঠিত।
এ ঘটনায় আহতরা হচ্ছেন- টাঙ্গাইলে পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সাবেক কাউন্সিলর ও সাবেক সেনা সদস্য হেলাল ফকির (৫৫) ও তার ছেলে ইব্রাহিম ফকির (২৩) এবং ওই ওয়ার্ডের সভাপতি হুমায়ুন রশিদ আকন্দ সোনার মামাতো ভাই আব্দুল্লাহ আকন্দ (৩২)। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকালে বিএনপি ও জামায়াতের ডাকা তিন দিনের অবরোধ বিরোধী মিছিল করতে ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হুমায়ুন আকন্দ সোনা এবং সাধারণ সম্পাদক হেলাল ফকির তাদের অনুসারীদের নিয়ে মহাসড়কে যায়। বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়কে অবরোধ বিরোধী মিছিল শেষে ফেরার পথে শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে চলন্ত অবস্থায় সাধারণ সম্পাদক হেলাল ফকিরের অনুসারীরা সভাপতি হুমায়ুন রশিদ আকন্দ সোনার মোটরসাইকেল বহরের কর্মীদের সঙ্গে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এতে দুইপক্ষের কয়েকটি মোটরসাইকেল রাস্তায় পড়ে কয়েক কর্মী সামান্য আহত হয়। তাৎক্ষণিকভাবে শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌরসভার মেয়র সিরাজুল হক আলমগীর উভয়পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করে দেন।
পরে দুপুরে ওই ঘটনার জের ধরে আদালত প্রাঙ্গণে ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর হেলাল ফকিরের কথিত সেরেস্তার সামনে ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হুমায়ুন রশিদ আকন্দ সোনার মামাতো ভাই আব্দুল্লাহ আকন্দকে আটকে রেখে মারপিট করে। খবর পেয়ে সভাপতির অনুসারীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে হেলাল ফকিরের অনুসারীদের উপর হামলা করে। এ সময় উভয়পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলায় ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর হেলাল ফকির ও তার ছেলে ইব্রাহিম ফকির এবং ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হুমায়ুন আকন্দ সোনার মামাতো ভাই আব্দুল্লাহ আকন্দ মারাত্মক আহত হয়।

মারামারির এ ঘটনায় ৩নং ওয়ার্ডের লোকজন জানান, স্থানীয় পর্যায়ে আওয়ামী লীগের দলীয় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হুমায়ুন রশীদ আকন্দ সোনা ও সাধারণ সম্পাদক হেলাল ফকিরের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। ইতোপূর্বে সাধারণ সম্পাদকের ছেলে ইব্রাহিম ফকির একই ওয়ার্ডের সভাপতির ভাতিজাকে কুপিয়ে আহত করে। ওই ঘটনা থেকে উভয়ের মধ্যকার বিরোধ প্রকাশ্যে চলে আসে।
এ বিষয়ে ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হুমায়ুন রশিদ আকন্দ সোনা জানান, অবরোধ বিরোধী দলীয় মিছিলে তিনি শতাধিক মোটরসাইকেলসহ অনুসারীদের নিয়ে অংশগ্রহন করেন। প্রথম ঘটনাটি তাৎক্ষণিকভাবে পৌরসভার মেয়র সমাধান করে দেন। পরে আমি বাড়িতে যাওয়ার সময় প্রতিপক্ষরা আমার উপর হামলা করে। পরে আমাকে রক্ষা করার জন্য আমার অনুসারীরা উল্টো হামলা করে।
এ ব্যাপারে ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর হেলাল ফকির বলেন, আওয়ামী লীগের মিছিল ও মিটিং কর্মসূচি শেষে আমি ডিস্ট্রিকে আমার অফিসে বসেছিলাম। এর আগে কর্মীসমর্থকদের মধ্যে সামান্য কথা কাটাকাটির ঘটনা মিমাংসা করে দেন মেয়র সাহেব। পরে এই বিষয়টি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ অন্যান্য নেতাদের জানাই। এরই মধ্যে হুমায়ুন রশীদ আকন্দ সোনার নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসীরা রামদা, চাপাটি দিয়ে আমাদের উপর হামলা করে। হুমায়ুন রশীদ আকন্দ সোনা আমাকে মেরে ফেলার জন্য দীর্ঘ দিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। হুমায়ুন রশীদ আকন্দ সোনা আগে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নেতা ছিল। সে আওয়ামী লীগে যোগদানের পর থেকেই সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এ ঘটনায় দুইপক্ষের কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

২৮৯ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *