স্টাফ রিপোর্টার ॥
কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেন, বিএনপি উন্মাদনা শুরু করেছে দেশে নির্বাচন করতে দিবে না। তাদের স্বভাবই এটি। তারা গণতান্ত্রিক চেতনা ও মূল্যবোধ বিবর্জিত দল। বিগত ২০১৪, ২০১৫ সালে যেভাবে তারা আগুন সন্ত্রাস, ভাঙচুর ও তান্ডব করেছিল। সেই একই কায়দায় গত ২৮ অক্টোবর বর্বরোচিত হামলা করেছে। পুলিশকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে। যা কোনক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। বিএনপি আগুন সন্ত্রাস ও সহিংসতার পথ ছেড়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে এবং দেশকে সমৃদ্ধির পথে পরিচালনায় সহযোগিতা করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।
বিএনপির কোন শান্তিপ্রিয় নিরীহ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ভিডিও ফুটেজ দেখে দোষীদের ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করছে। কোনক্রমেই বিএনপির কোন শান্তিপ্রিয় নিরীহ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। টাঙ্গাইলের কোনো উপজেলার বিএনপির একজন নেতাকর্মীকেও গ্রেফতার করা হয়নি। বিএনপিকে নেতৃত্বশূণ্য করার জন্য ধরপাকড় করা হচ্ছে না। বিএনপি নেতারা তাদের কর্মীদের আগুন সন্ত্রাস ও সন্ত্রাস করার জন্য প্ররোচিত করছে, উস্কানি দিচ্ছে। গ্রেফতার করা ছাড়া তাদেরকে নিবৃত্ত করা যাবে না। মানুষের জানমাল, গাড়ি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের সুরক্ষা এবং দোকানপাট খোলা রেখে ব্যবসা-বাণিজ্য অব্যাহত রাখা সরকারের দায়িত্ব। এ লক্ষ্যেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে।
শুক্রবার সকালে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার মুশুদ্দি উত্তরপাড়ায় খামারি অ্যাপের কার্যকারিতা যাচাই ও উচ্চ ফলনশীল জাতের ধানের কর্তন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, বিএআরসি কর্তৃক তৈরি ‘খামারি’ মোবাইল অ্যাপের কার্যকারিতা সরেজমিনে দেখে মন্ত্রী বলেন, দেশের যে কোন মৌজার সুনির্দিষ্টভাবে একটি প্লট বা জমিতে কী ধরনের ফসল হবে, কতটুকু সার, বীজ লাগবে- সব তথ্য খামারি অ্যাপে পাওয়া যাবে। খামারি অ্যাপ ব্যবহার করলে ধান আবাদে সারের পরিমিত ব্যবহার করা যাবে। এতে ধানের জমিতে বিঘা প্রতি সারের খরচ এক হাজার টাকা কমবে। ধানের ফলনও বিঘা প্রতি এক মণ বাড়বে। দেশের চাষিরা ইউরিয়া ও অন্যান্য সার প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ব্যবহার করে। বেশি সার দিলেই বেশি ফলন হয় না। যতটুক দরকার, ততটুকু সার দিতে হবে। এক্ষেত্রে খামারি অ্যাপ কৃষকদের সহায়তা করবে। ব্রি ধান ১০৩ এর নমুনা কর্তন শেষে কৃষিমন্ত্রী আরো বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ দেশে জমি কমছে। ১৭ কোটি মানুষের খাদ্যের যোগান বজায় রাখতে হলে উন্নত ও উচ্চ ফলনশীল জাতের ধানের আবাদ ছড়িয়ে দিতে হবে। নমুনা কর্তনে ব্রি ধান ১০৩ এর বিঘা প্রতি প্রায় ২৫ মণ ফলন পাওয়া গেছে। দেশের অন্যান্য জায়গাতেও একই রকম ফলন পাওয়া গেছে। ব্রি ধান ১০৩ জাতের গড় জীবন কাল ১৩০ দিন (১২৮-১৩৩ দিন)। প্রচলিত জাতের তুলনায় এর বৈশিষ্ট্য হলো, ব্রি ধান ১০৩ এর কান্ড শক্ত, পাতা হালকা সবুজ এবং ডিগ পাতা খাড়া, লম্বা ও চওড়া।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) আয়োজনে ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) সহযোগিতায় বক্তব্য রাখেন কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তারের সভাপতিত্বে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রুহুল আমিন তালুকদার, বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো. বখতিয়ার, বিএডিসির চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক দেবাশীষ সরকার, স্কয়ার হাসপাতালের উপদেষ্টা ডাক্তার সানোয়ার হোসেন, ধনবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনার রশীদ হীরা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মীর ফারুক আহমেদ প্রমুখ।
এর আগে কৃষিমন্ত্রী বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের ধনবাড়ী উপজেলা আঞ্চলিক কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন।