মধুপুরে পরেশ হাগিদক অটিস্টিক বিদ্যালয় পরিদর্শন

টাঙ্গাইল মধুপুর শিক্ষা

হাবিবুর রহমান, মধুপুর ॥
জলছত্র আনারসের বাজার থেকে সোজা পাকা সড়ক। শালবন পেড়িয়ে গেছে লোকালয়ে। বনের ওপারে বেরিবাইদ ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নে উত্তর পশ্চিম অংশে গারো সম্প্রদায়ের বসবাস বেশি। পাশেই ফুলবাড়িয়া উপজেলা। রাবার বাগানের ছায়া সুনিবিড় পরিবেশ। এ ইউনিয়নের মূল প্রধান সড়কগুলো মোটামুটি পাকা। এ পাকা সড়ক ধরে বেরিবাইদ গ্রাম। এক সময় এ গ্রামের চারপাশে বাইদ বেষ্টিত ছিল বলে এ গ্রামের নাম করণ হয় বেরিবাইদ। বাইদ হলো উঁচু জায়গার মাঝে মাঝে বা চালার মাঝ খান দিয়ে বয়ে যাওয়া নিচু খালের চেয়ে বড় আকারের পানি নামার অংশ কে স্থানীয়রা বাইদ নামে অভিহিত করে থাকে। পাকা সড়ক দিয়ে বৈরাগি বাজার পাড় হয়ে গেৎচুয়া গ্রাম। এ গ্রাম বনের পাশ ঘেঁষা। জন বসতির প্রায় সিংহভাগ গারো জনগোষ্ঠীর। এ গ্রামে প্রবেশের প্রথমে চোখে পড়লো একটি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেছে স্থানীয় এক গারো নারী। তিনি মধুপুর উপজেলা পরিষদের দুই বারের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। তার বাবার নামে করেছেন এ প্রতিষ্ঠানটি। তার বাবা পরেশ হাগিদকের নামে বিদ্যালয়ের নাম করণ করেছেন পরেশ হাগিদক অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়। ২০১২ সালে নিজের ২৫ শতাংশ জমি দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের নামে। টিন শেডের ফ্লোর পাকা ঘর। চারটি কক্ষে বিন্যাস করা। সামনে ভাষা শহীদ স্মরণে করা হয়েছে শহীদ মিনার। গেইট করা হয় সুন্দর ভাবে। সামনে মধুপুর বন থেকে বয়ে বেরিবাইদ বাইদ। বাইদে সবুজ ধানে সবুজ আর সবুজ। দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়।
পাশে পাকা সড়ক। চারপাশে গ্রাাম্য প্রকৃতির অপরুপ সান্নিধ্য। এমন একটা পরিবেশে গড়ে উঠা বিদ্যালয়টির ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা দুই শতাধিক বলে জানালেন প্রধাান শিক্ষক আব্দুল জলিল। শিক্ষকসহ অন্যান্য স্টাফ নিয়োগ দেয়া হয়েছে অনেক আগেই। দীর্ঘ এক যুগেও বিদ্যালয়টি এমপিও না হওয়ায় শিক্ষক স্টাফ দিন চলছে অনেক কষ্টে। এমন কষ্টের কথা বললেন প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্যরা।
বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি যষ্ঠিনা নকরেক জানালেন, বিদ্যালয়টি পরিদর্শন হয়ে গেছে। তার আশা দ্রূত এমপিও পাবেন।
সোমবার (৬ নভেম্বর) বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেন ট্রাইবাল ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশন (টস- ২১৩১) মধুপুর শাখার নেতৃবৃন্দ। এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ শিক্ষক মন্ডলি ও সভাপতির সাথে মতবিনিময় করেন। এসোসিয়েশনের সভাপতি রঞ্জিত নকরেক, সহসভাপতি ভরত চন্দ্র বর্মণ, সম্পাদক সুবোধ বর্মণ সরকার , যুগ্ম সম্পাদক অর্পনা দফো, কোষাধ্যক্ষ অর্চনা নকরেক, জয়দেব বর্মন, ময়না রানী বর্মণ, অর্জুন বর্মণ, হেমন্ত চিরান ও পল্লব মৃ সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষকরা জানান, আশপাশের দূরদুরান্ত থেকে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের আনা নেয়া দুপুরের হালকা খাবারসহ অনেক খরচ হয়। খরচের যোগান না থাকায় তাদের পাঠদানে কষ্ট হচ্ছে।
এ সময় ট্রাইবাল ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ সেবা মূলক এ প্র্রতিষ্ঠানের সাথে থাকার প্রত্য্যয় ব্যক্ত করেন।

২৮০ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *