
স্টাফ রিপোর্টার, মির্জাপুর ॥
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে গান বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন ফতেপুর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ। তিনি নিজেকে ফতেপুর ইউপির মা-বাপ ঘোষণা দিয়ে গান বন্ধ করে দেন। গত বুধবার (৮ নভেম্বর) রাতে তিনি ফতেপুর গ্রামের মধ্যপাড়া এলাকার রহিম পীর নামে এক ব্যাক্তির ওরস মাহফিলে উপস্থিত হয়ে বক্তৃতায় গান বন্ধের ঘোষণা দেন।যার ভিডিও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেন এবং ভিডিওটি ভাইরাল হয়। এ নিয়ে এলাকায় নানা কানাঘুষা চলছে বলে জানা গেছে।এ ঘটনায় আব্দুর রউফ এর বিরুদ্ধে রহিম পীর মির্জাপুর থানায় শুক্রবার (১০ নভেম্বর) লিখিত অভিযোগ করেছেন।
আব্দুর রউফ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি থাকাকালীন বিএনপির মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে বিগত ২০১৭ সালের (১৬ এপ্রিল) নির্বাচনে ওই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরে তিনি একই বছর (২০ আগস্ট) আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। পরবর্তীতে বিগত ২০২১ সালের (১ এপ্রিল) ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন। এরপর বিগত ২০২২ সালের (১৫ জুন) ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হয়ে নৌকা প্রতীকে পুণরায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
এলাকাবাসী জানান, গত বুধবার (৮ নভেম্বর) ফতেপুর গ্রামের ওই এলাকায় রহিম নামে এক পীরের বাড়িতে ওরস মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে রাতে শরিয়ত বয়াতি ও শিল্পী সরকার শিমুর দলের বাউল গান পরিবেশন হওয়ার কথা ছিল। বিগত ২০২০ সালের (২৪ ডিসেম্বর) ধামরাই এলাকায় একটি গানের আসরে শরিয়ত বয়াতি গান পরিবেশন করেন। সেই গানের রেশ ধরে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে বিগত ২০২১ সালের (৯ জানুয়ারি) শরিয়ত বয়াতির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়। দুইদিন পর ওই মামলায় তিনি গ্রেপ্তার হন। পরে আদালত থেকে তিনি জামিনে মুক্তি পান।
এদিকে গত বুধবার (৮ নভেম্বর) রাতে ওই গানের অনুষ্ঠানে গিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ বক্তৃতা করেন। তিনি তার বক্তৃতায় প্রথমে শরিয়ত বয়াতির গানের অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বলেন। পরে তিনি ঘোষণা দেন ফতেপুর ইউনিয়নে কোন প্রকার গান হবে না। তিনি ফতেপুর ইউনিয়নের মা-বাপ ঘোষণা দিয়ে কেউ গানের আয়োজন করলে তার নিজের এবং পুলিশের অনুমতি নিতে হবে বলে জানান। এ নিয়ে এলাকায় নানা কানাঘুষা চলছে বলে জানা গেছে।
ফতেপুর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফের সঙ্গে মুফোঠোনে কথা হলে তিনি বলেন, বিতর্কিত শরিয়ত বয়াতির গান না করার নির্দেশনা থাকায়, গানের আয়োজন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গান বন্ধে ডিএসবির দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা কর্মকর্তা এবং থানার ওসির নির্দেশনাও ছিলো বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে মির্জাপুর থানার ওসি রেজাউল করিম অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার বরে বলেন, বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।