ভূঞাপুরে যমুনার দুর্গম চরে দিনে লাখ টাকার মুলা বিক্রি

কৃষি টাঙ্গাইল টাঙ্গাইল স্পেশাল ভূঞাপুর লিড নিউজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥
চলতি বছরে শুকনো মৌসুমের টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীর পানি কমে যাওয়ায় ছোট-বড় অসংখ্য পলি মাটিযুক্ত বালুচর জেগে উঠেছে। ফলে নদীর পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষকরা রোপণ করে ছিলেন মুলাসহ নানা ধরণের রবি ফসল। আবহাওয়া অনূকূলে থাকায় এ বছর ব্যাপকহারে দুর্গম যমুনা নদীর চরাঞ্চলে পাতা মুলার চাষ হয়েছে। আর এই মুলা বিক্রি করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন খেটে খাওয়া চরাঞ্চলের শতশত কৃষক।
জানা যায়, যমুনা নদী চরাঞ্চলের কৃষকরা উৎপাদিত মুলা ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী, পাথাইলকান্দি, কুঠিবয়ড়া বাজার, নলিন বাজারে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পাইকারি দরে বিক্রি করছেন। এতে করে প্রতিদিন লাখ টাকার উপরে মুলা বিক্রি করে থাকেন তারা। পাইকারি দরে মুলা কিনতে উপজেলার বিভিন্ন সবজি পাইকরি ক্রেতারা উপচেপড়া ভিড় করেন অস্থায়ীভাবে গড়ে ওঠা মুলার হাট।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভূঞাপুর-তারাকান্দি আঞ্চলিক জেলা মহাসড়কের উপজেলার অর্জুনা ও গাবসারা চরাঞ্চলের কৃষকরা তাদের চাষ করা মুলা নৌকা যোগে প্রতিদিন ভোর থেকে নলিন বাজারে ও কুঠিবয়ড়া বাজারে নিয়ে আসেন। সেখান থেকে আশ-পাশের বিভিন্ন পাইকাররা তাদের থেকে ন্যায্যমূলে মুলা কিনে নেন। অপেক্ষাহীন দ্রুত সময়ে মুলা বিক্রি ও ভাল দাম পাওয়ায় কৃষকরাও অনেক খুশি। গাবসারা ইউনিয়নের বাসুদেবকোল গ্রামের কৃষক নূর আলম বলেন, গতবারের চেয়ে নদীতে এবার অনেক চর জেগেছে। মাসখানেক আগে আমার জমি জেগে ওঠে। সেখানে মুলার বীজ রোপণ করেছিলাম। কোন ধরণের কীটনাশক ছাড়াই মুলা চাষ ভাল হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় হাটে নিয়েও বিক্রি করতে হচ্ছে না। পাইকাররা বাড়িতে এসে মুলা কিনে নিচ্ছেন।
আরেক মুলা চাষি কৃষক রতন আলী বলেন, প্রতিদিন চর থেকে মুলা উঠিয়ে ভোরে নলিন বাজারে ৫০০ আঁটি মুলা এনেছিলাম। ভূঞাপুর কাঁচা বাজারের এক সবজি বিক্রেতা ১২’শত টাকা দরে কিনে নিয়েছেন। ৬ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। আমি একা নই, আমার মতো অসংখ্য কৃষকরা ননিল বাজারে সকালে পাইকারি দরে মুলা বিক্রি করে থাকেন। প্রথম অবস্থায় ভাল দামে বিক্রি করতে পারছি। জগৎপুরা গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, যমুনার নলিন নৌকা ঘাটের বাজারটি ঐতিবাহী একটি হাট। প্রতিবছর শুকনো মৌসুমে এইদিনে চরাঞ্চলের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত বিভিন্ন শাকসবজি পাইকারি বিক্রি করে। ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত লাখ টাকার বেশি মুলা কেনাবেচা হয়। অনেক দূর-দূরান্তের সবজি ব্যবসায়ীরা এখান থেকে মুলাসহ বিভিন্ন সবজি কিনেন। ননিল বাজারে দ্রুত সময়ে সবজির আড়ৎ গড়ে উঠবে।
ভূঞাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, যমুনা নদীর পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাঠ পর্যায়ে চরাঞ্চলের কৃষকদের নিয়ে সবজি চাষাবাদে উদ্বুদ্ধকরণ করা হয়। সে কারণে এবার মুলার ফলন হয়েছে বেশি। অল্প সময়ে কম পুঁজিতে বেশি লাভ হয় বলে চাষিরা মুলা চাষে ঝুঁকছেন। কৃষকরা এবার ভাল দামও পেয়েছেন। এছাড়া অন্যান্য শাকসবজি চাষাবাদের জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়। উপজেলা কৃষি বিভাগ সব সময় কৃষকদের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে।

 

২০৬ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *