স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গোলাম কিবরিয়া বড় মনিরের বিরুদ্ধে দায়ের করা ধর্ষণ মামলার বাদী কলেজ ছাত্রী মির্জা আফরোজ এশার (২২) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় সৌরভ পাল (২৯) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত সৌরভ পাল টাঙ্গাইল পৌরসভার থানাপাড়া এলাকার শ্যামল পালের ছেলের। শনিবার (১৮ নভেম্বর) রাতে ওই এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে রবিবার (১৯ নভেম্বর) সকালে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া ইউনিয়নের (পৌর শহরের বাহিরে) করের বেতকায় অবস্থিত এশা মির্জার নিজ বাসায় গিয়ে দেখা যায় শুনসান নিরবতা। তৃতীয় তলায় ওই বাসায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ওই বাসার অন্যান্য ফ্লাটের বাসিন্দা ও এলাকাবাসী এশা মির্জার বিষয়ে কোন কথাই গণমাধ্যমে বলতে চাচ্ছেন না। নিহত এশা মির্জার অবুঝ শিশু বাচ্চা মা’র জন্য শুধুই কান্না করছে। বর্তমানে ওই বাচ্চা নিহত এশা মির্জার বড় বোন লুনা মির্জার কাছে রয়েছে। এশা মির্জার এমন মৃত্যুতে টাঙ্গাইল জেলার রাজনৈতিক মহলে নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
টাঙ্গাইল সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস সালাম মিয়া জানান, শনিবার (১৮ নভেম্বর) রাতে আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগ এনে এশা মির্জার বড় বোন লুনা মির্জা আপন বড় ভাই জনি মির্জা ও সৌরভ নামের একজনকে আসামি করেন। মরদেহ টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। রবিবার (১৯ নভেম্বর) ময়নাতদন্ত করা হবে। ময়নাতদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোঃ শরফুদ্দীন বলেন, টাঙ্গাইল সদর মডেল থানায় এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। পুলিশ রাতেই একজনকে গ্রেফতার করেছে। আইনগত সকল বিষয়ে আমরা সজাগ থেকে এ হত্যার বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছি। ময়নাতদন্ত শেষে রিপোর্ট পেলে এই হত্যার বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।
চলতি বছরের (৫ এপ্রিল) রাতে টাঙ্গাইল সদর থানায় এশা বাদি হয়ে আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলায় এশা ধর্ষণের কারণে অন্তঃসত্তা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। পরে ৬ এপ্রিল দুপুরে আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেন ওই কিশোরী। মামলা দায়েরের পর গোলাম কিবরিয়া বড় মনি উচ্চ আদালত থেকে অন্তরবর্তিকালিন জামিন লাভ করেন। পরে দিন আদালতে হাজির হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত (৩০ জুন) টাঙ্গাইল শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে এশা পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। পরে আদালতের নির্দেশে এশার গর্ভে জন্ম নেয়া শিশুর ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার প্রতিবেদনে জন্ম নেওয়া ওই শিশুটির পিতা গোলাম কিবরিয়া নন বলে জানা যায়। পরে আদালত গত (৯ অক্টোবর) গোলাম কিবরিয়াকে (১১ জুলাই) উচ্চ আদালতের দেওয়া জামিন বহাল রাখেন। পরে তিনি কারা মুক্তি লাভ করেন। ধর্ষণের এই মামলাটি টাঙ্গাইলের পুলিশ ব্যুারো অব ইনভেস্টিগেশন (পিপিআই) তদন্ত করছে।