ধর্ষণ মামলার বাদি এশার মৃত্যুর ঘটনায় টাঙ্গাইল থানায় মামলা

আইন আদালত টাঙ্গাইল টাঙ্গাইল সদর লিড নিউজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনিরের বড় ভাই ও টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এবং জেলা বাস কোচ মিনি বাস মালিক সমিতির মহাসচিব গোলাম কিবরিয়া বড় মনিরের বিরুদ্ধে দায়ের করা ধর্ষণ মামলার বাদির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়েছে। শনিবার (১৮ নভেম্বর) রাতে মির্জা আফরোজ এশার বড় বোন মির্জা লুনা বাদি হয়ে আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। মামলায় এশা মির্জার ভাই মির্জা জিয়াউর হাসান জনি ও সৌরভ নামের এক যুবককে আসামি করা হয়েছে। রবিবার (১৯ নভেম্বর) সকালে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টাঙ্গাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ছালাম মিয়া।
এর আগে আলোচিত ধর্ষণ মামলার বাদি মির্জা আফরোজ এশার (২২) নিজ বাসা থেকে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (১৮ নভেম্বর) বিকালে সদর উপজেলার করটিয়া ইউনিয়নের করের বেতকার নিজ বাসার তৃতীয় তলায় এশার মরদেহটি পাওয়া যায়। মির্জা আফরোজ এশা করের বেতকা গ্রামের মৃত লতিফ মির্জার মেয়ে। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা এ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধুম্রজাল।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে নিজ বাসার বেডরুমের ভিতরে এশার শিশু পুত্রের কান্না শুনতে পান এক নারী। পরে আশপাশের লোকজনকে জানালে তারা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ খবর পেয়ে ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পায়। সন্ধ্যায় ক্রাইমসিনের টিম এসে মরদেহ উদ্ধার করে। পরে রাতে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে মর্গে প্রেরণ করে।
টাঙ্গাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ছালাম মিয়া জানান, শনিবার (১৮ নভেম্বর) রাতে আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগ এনে এশা মির্জার বড় বোন মির্জা লুনা মামলা দায়ের করেন। মামলায় এশার বড় ভাই মির্জা জিয়াউর হাসান জনি ও সৌরভ নামের একজনকে আসামি করেছে। লাশ টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। রবিবার (১৯ নভেম্বর) ময়নাতদন্ত করা হবে। ময়নাতদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের গত (৫ এপ্রিল) রাতে টাঙ্গাইল সদর থানায় এশা মির্জা বাদি হয়ে গোলাম কিবরিয়ার বড় মনির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলায় এশা ধর্ষণের কারণে অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। পরে গত (৬ এপ্রিল) দুপুরে আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেন ওই কিশোরী। মামলা দায়েরের পর গোলাম কিবরিয়া উচ্চ আদালত থেকে অন্তর্র্বতীকালীন জামিন লাভ করেন। পরে নিম্ন আদালতে হাজির হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। গত (৩০ জুন) টাঙ্গাইল শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে এশা পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। পরে আদালতের নির্দেশে এশার গর্ভে জন্ম নেয়া শিশুর ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার প্রতিবেদনে জন্ম নেওয়া ওই শিশুটির পিতা বড় মনি নন। পরে আদালত গত (৯ অক্টোবর) গোলাম কিবরিয়া বড় মনিকে গত (১১ জুলাই) উচ্চ আদালতের দেওয়া জামিন বহাল রাখেন। পরে তিনি মুক্তি লাভ করেন। ধর্ষণের এই মামলাটি টাঙ্গাইলের পুলিশ ব্যুারো অব ইনভেস্টিগেশন (পিপিআই) তদন্ত করছে।

 

 

 

৬২৭ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *