স্টাফ রিপোর্টার, মির্জাপুর ॥
মির্জাপুরে পোশাক কর্মী নার্গিস কাওছার সাদিয়ার (৪৩) হত্যায় জড়িত সহোদর দুই ভাই টাঙ্গাইলের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধি দিয়েছেন। আসামীরা হলেন জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার বাগারচর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের উজির আলীর ছেলে হাসেম মিয়া ও হান্নান মিয়া। মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সন্ধায় টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধী দেন। আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পশুপতি বিশ্বাস ও নওরিন করিম তাদের জবানবন্ধী রেকর্ড করেন বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) এটিএম জহিরুল হক জানিয়েছেন। সোমবার (২০ নভেম্বর) রাতে গাজীপুর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকার কাপড়ের ব্যবসা করতেন।
পুলিশ জানান, গত শনিবার (১৮ নভেম্বর) রাতে উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের মজিদপুর গ্রাম থেকে অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার নতুন বান্দুরা গ্রামের মতিউর রহমানের মেয়ে বলে পুলিশ শনাক্ত করে। এ ঘটনায় গত সোমবার (২০ নভেম্বর) তার মেয়ে জুইয়ারিয়া জান্নাতি কুমু বাদি হয়ে মির্জাপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। মির্জাপুর থানার মামলা নং-১১।
মামলার বিবরণে জানা যায়, সাদিয়া গাজীপুরে জেলার কোনাবাড়ী থানায় আরামবাগ মিতালী ক্লাব সংলগ্ন ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। তিনি সেখানে একটি পোশাক কারখানায় চাকুরীর সময় কাপড় ব্যবসায়ী হাশেম মিয়ার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। হাশেম মিয়া বিয়ের কথা বলে তাঁর কাছ থেকে বিভিন্ন ভাবে ৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। তিনি হাশেমকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে হাশেম তালবাহানা করতে থাকে। পরে সে ধার নেয়া ৮ লাখ টাকা ফেরত চান। এ নিয়ে তাদের মধ্যে দুরত্বেও সৃষ্টি হয়। এরমধ্যে হাসেম তাঁর দুই ভাই হাসান ও হান্নানকে সঙ্গে নিয়ে সাদিয়াকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন কৌশলে হাশেম তাঁকে ওই স্থানে নিয়ে আসে। পরে ভাইদের সহযোগিতায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হত্যার পর লাশ ফেলে পালিয়ে যান। পুলিশের উপপরিদর্শক মামরার তদন্তকারী কর্মকর্তা এটিএম জহিরুল হক তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় জড়িত দুইজনকে গ্রেপ্তার করেন।
মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের গত মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সন্ধায় টাঙ্গাইলের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধী দিয়েছেন। পলাতক হাসানকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।