মির্জাপুরে প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ

টাঙ্গাইল মির্জাপুর শিক্ষা

স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার জার্মুকী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওমর আলীর অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী। এ সময় প্রধান শিক্ষক ওমর আলীর বিরুদ্ধে নানা অনীয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ আনেন তারা। বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) দুই শতাধিক শিক্ষার্থী, অভিবাবক ও এলাকাবাসী মিলে বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গলে ঘন্টাব্যাপী এ বিক্ষোভ কর্মসুচি পালন করা হয়। বিক্ষোভ মিছিলে বক্তরা অনতিবিলম্বে দুর্নীতিবাজ এই প্রধান শিক্ষকের অপসারনের দাবি করেন। তারা বলেন, এই প্রধানশিক্ষক এর আগে জার্মুকী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক থাকাকালীন সময়ে কোচিং করানোর নামে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে ২০০ টাকা করে ফি আদায় করে। বিষয়টি তদন্তে প্রমানিত হলে তাকে অনত্র বদলী ও তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রজু করার সুপারিশ করেন তৎকালীন মির্জাপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার ওবায়দুল্লাহ। যাহার স্বারক নং উশিঅ/মির্জা/তদন্ত তারিখ ৬.৬.২০০৭।

পরে ওই শিক্ষক উপজেলার পাকুল্ল্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। সেখানেও তিনি নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। পরে সেখান থেকে উপজেলার মস্তমাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করেন। সেখানে নিয়োমিত বিদ্যালয়ে যাননি তিনি। এত এলাকায় তাকে সমালোচনার জন্ম হয়। চতুরতা করে শুক্রবার বন্দের দিন বিদ্যালয়ে গিয়ে হাজিরা খাতার অনুপস্থিতির পাতা ছিড়ে ফেলে। এবিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন হয়। তদন্তে গিয়ে মির্জাপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার শাহ্ আলম ওই শিক্ষক ওমর আলীর নিকট কৈফত চান। এতে ক্ষিপ্ত অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ওমর আলী শিক্ষা অফিসারের নামে ঢাকা প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা দায়ের করেন। যাহার মামলা নং এটি এ -১২/২০২০ নতুন,পুরাতন ১৭/২০১৮ পুরাতন। পরে মামলাটি মিথ্যা বানোয়াট বলে মামলাটি খারিজ হয়। মামলায় হেরে যান ওই প্রধান শিক্ষক ওমর আলী। একপর্যায়ে উপ-বিভাগীয় কর্মকর্তা ইফতেখার হোসেন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার কারণে দুই বছরের বেতন-ভাতা স্থগিত করেন।

 

সম্প্রতি জার্মুকী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করে বিদায় অনুষ্ঠানের নামে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে ২’শ টাকা করে চাঁদা আদায় করেন। পাশাপাশি বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির স্বাক্ষর না নিয়ে বেতন-ভাতা উত্তোলন করেন। এঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন হয়।
জার্মুকী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ওমর আলী মুঠোফোনে জানান, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা বানোয়াট। যারা তার অপসারন চায় তারা অনেকেই বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবক নয়। তিনি স্থানীয় হওয়ায় প্রতিহিংসার শিকার। ২০০ টাকা চাঁদার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, ওই দুইশ টাকা বিদ্যালয়ে এক শিক্ষকা তুলেছিলেন, পরে তা ফেরৎ দিয়েছেন।

জার্মুকী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি রেজাউল করিম জানান, প্রধান শিক্ষক ইতোপুর্বে সহকারী প্রধান শিক্ষক থাকাকালীন সময়ে কোচিং ফি বাবদ দুইশত টাকা করে আদায় করতো। এছাড়ও শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির কারনেও জরিমানা আদায় করতো। বর্তমানে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর তিনি পরিচালনা পর্ষদের সাথে কোন প্রকার সমন্বয় নেই। এছাড়াও সভাপতির সই ছাড়া বেতন-ভাতা তুলে। যা নিয়ম বর্হিভুত। এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ঠ কমিটি করে তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। তিনি আরও জানান এই প্রধান শিক্ষক এই বিদ্যালয়ে বহাল থাকলে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।

তদন্ত কমিটির প্রধান সখিপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার রাফিউল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) সরেজমিনে তদন্ত করা হয়েছে। আগামি ১৪ কার্যদিবসে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে

১৪১ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *