আদালত সংবাদদাতা ॥
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি আত্মসমর্পণ করেছেন। মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইল প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এ সময় আদালতের বিচারক শাহরিয়ার খান মোস্তফা তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
টাঙ্গাইল আদালতের পরিদর্শক তানবীর আহমেদ জানান, আদালতে আত্মসমর্পনের জন্য সকালে সহিদুর রহমান খান মুক্তি আদালতে আসেন। পরে উচ্চ আদালতের আদেশ মোতাবেক অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানো নির্দেশ দেন।
জানা যায়, তথ্য গোপন করে জামিন নেওয়ায় সহিদুর রহমান খান মুক্তির জামিন বাতিল করে উচ্চ আদালত। এছাড়াও ৪৮ ঘন্টার মধ্যে তাকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের জন্য নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।
টাঙ্গাইলের জেল সুপার মোখলেসুর রহমান জানান, উচ্চ আদালতের জামিন সংক্রান্ত কাগজপত্র গত (২২ নভেম্বর) টাঙ্গাইল কারাগারে পৌঁছালে সকল নিয়ম মেনে ওইদিন দুপুরে তাকে জেলখানা থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।
টাঙ্গাইলের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এ্যাডভোকেট এস আকবর খান জানান, টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি ৬ মাসের অন্তবর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেছিলেন আদালত। পরে তথ্য গোপন করার বিষয়টি আদালতের নজরে আসলে তার জামিন বাতিল করে সংশ্লিষ্ট নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।
জানা যায়, বিগত ২০১৩ সালের (১৮ জানুয়ারি) টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদের গুলিবিদ্ধ লাশ তার শহরের কলেজ পাড়ার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার তিন দিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। এই হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বিগত ২০১৪ সালের আগস্টে গোয়েন্দা পুলিশ আনিসুল ইসলাম রাজা ও মোহাম্মদ আলী নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করে। আদালতে এ দুজনের দেওয়া স্বীকারোক্তিতে হত্যার সঙ্গে তৎকালীন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা, তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে। এরপর অভিযুক্তরা আত্মগোপনে চলে যান। সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা বিগত ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আত্মসমর্পণ করেন। প্রায় তিন বছর হাজতবাসের পর তিনি জামিনে মুক্তি পান। এদিকে টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি দীর্ঘ ছয় বছর পলাতক থাকার পর বিগত ২০২০ সালের (২ ডিসেম্বর) আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। তাদের অন্য দুই ভাই এখনও আত্মগোপনে রয়েছেন।