স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীর চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। যেদিকে চোখ যায়-সেদিকেই ভুট্টা গাছের পাতায় সবুজের সমারোহ। আবহাওয়া অনূকূলে থাকায় শুরুতেই ভুট্টা চাষে ভালো ফলনের স্বপ্ন দেখছেন ভুট্টা চাষি কৃষকরা। কিন্তু কৃষকদের এমন স্বপ্ন ভঙ্গ করে দিচ্ছে ফল আর্মিওয়ার্ম নামে এক ক্ষতিকারক পোকা। কীটনাশক ব্যবহার করেও ক্ষতিকর এ পোকা দমন করতে পারছেন না। ফলে দুশ্চিন্তায় দিশেহারা ভুট্টা চাষি কৃষকরা।
সরেজমিনে উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের গাবসারা, কালিপুর, জয়পুর, রেহাইগাবসার, চন্ডীপুর, রুলী ও পুংলীপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখে গেছে, যমুনার চরে ভুট্টা জমিতে ভোর থেকে চরাঞ্চলের কৃষকরা আগাছা দমনে কাজ করছে, কেউ বীজ রোপণ করছেন, জমি প্রস্তুত করছেন, কেউ পানি দিচ্ছেন, কেউ ভুট্টা গাছের পুরনো পাতা ছেঁটে দিচ্ছেন, বেশি ভাগই চাষিরা ক্ষতিকর পোকা নিধনে নানা ধরণের কীটনাশক স্পে করছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত মৌসুমের ২০২২-২৩ অর্থ বছরে এ উপজেলায় ৩ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়। এতে চাষিরা ভাল ফলন পেয়েছেন। চলতি মৌসুমে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ৩ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হচ্ছে। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় এবার ৪০ হেক্টর জমিতে বেশি চাষ হয়েছে। প্রণোদনার আওতায় চরাঞ্চলে কৃষদের মাঝে ভুট্টা বীজ ও কীটনাশক বিনামূল্যে প্রদান করা হয়।
উপজেলার কালিপুর গ্রামের ভুট্টা চাষির আব্দুর আলিম বলেন, গতবারের মতো এবারও ৮ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। কিন্তু শুরুতেই ভুট্টা পাতায় ফল আর্মি ওয়ার্ম পোকার উৎপাতে অতিষ্ঠ ও দুশ্চিন্তায় পড়েছি। কিন্তু কীটনাশক প্রয়োগ করেও এ পোকা দমন করতে পারছি না। নতুন যে কুশিগুলো বের হচ্ছে তার প্রায় সবই কেটে ফেলছে। যার ফলে শুকিয়ে যাচ্ছে গাছ। এভাবে পোকার উপদ্রব চলতে থাকলে আর লাভের মুখ দেখতে পাব না।
ভূঞাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, বীজ শোধন না করা, এসএফএন এনপিভি (ফউলিজেন) স্পে না করা, ব্রাকন হেবিটর অবমুক্ত না করা ও বালাইনাশক সঠিক মাত্রায় ব্যবহার না করায় ভুট্টা গাছের পাতায় ফল আর্মিওয়ার্ম পোকার উপদ্রব দেখা দিয়ে থাকে। চাষিদের দুশ্চিন্তার কিছু নেই। সঠিক নিয়মে কীটশনাক ব্যবহারে পোকার উপদ্রব হ্রাস যাবে। উপ-সহকারী কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগ সব সময় কৃষকদের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে।