স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইলের তিনটি আসন থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ও তাঁর দুই ভাই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে কাদের সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
কাদের সিদ্দিকীর বড় ভাই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সাবেক সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এ আসনে তাঁদের অপর ভাই মুরাদ সিদ্দিকীও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মুরাদ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী বুধবার (২৯ নভেম্বর) সখীপুরে তাঁর মনোনয়নপত্র জমা দেন। লতিফ সিদ্দিকী বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে কালিহাতীতে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন। এ সময় কাদের সিদ্দিকী, ছোট ভাই কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ নেতা আজাদ সিদ্দিকী, লতিফ সিদ্দিকীর স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য লায়লা সিদ্দিকী তাঁর সঙ্গে ছিলেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মুরাদ সিদ্দিকী কালিহাতীতে মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর আগে মুরাদ সিদ্দিকী বেলা ১১টার দিকে টামাইল সদর আসনের মনোনয়নপত্র জমা দেন।
বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকীর স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার প্রসঙ্গে কাদের সিদ্দিকী বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে সখীপুরের হামিদপুর বাজারে পথসভায় বলেন, 'লতিফ ভাইকে বলেছিলাম, কালিহাতীতে গামছা (কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নির্বাচনী প্রতীক) থেকে নির্বাচন করার জন্য। লতিফ ভাই আমাকে বললেন, "আমি স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করব। তুমি আমাকে সহযোগিতা করবে।" আমি বলেছি, আপনি আমার বড় ভাই। কালিহাতীতে আমি আপনাকে সমর্থন করব। সেখানে আমার দলের কাউকে গামছা থেকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না।
কাদের সিদ্দিকী ১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে টাঙ্গাইল-৮ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৯ সালে প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর মতবিরোধ হয়। পরে তিনি পদত্যাগ করে উপনির্বাচনে অংশ নেন। বহুল আলোচিত সেই নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন। পরে তিনি কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ গঠন করেন। এই দলের প্রার্থী হিসেবে ২০০১ সালে কাদের সিদ্দিকী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
অন্যদিকে লতিফ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সাতবার সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন। তিনি পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে একটি অনুষ্ঠানে হজ, তাবলিগ জামাত ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করেন। এ জন্য তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার ও মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণ করা হয়। সংসদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেন। গত সেপ্টেম্বরে তিনি কালিহাতীতে আনুষ্ঠানিক গণসংযোগ শুরু করেন। তাঁর কর্মসূচিতে কাদের
সিদ্দিকীসহ পরিবারের সবাই-সহায়তা করলেও ছোট ভাই মুরাদ সিদ্দিকী বিরোধিতায় নামেন। মুরাদ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৪ ও টাঙ্গাইল-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। না পেয়ে দুই আসনেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।