জাহিদ হাসান ॥
আর মাত্র ৭২০ ঘন্টা পর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অর্থাৎ ৪৩ হাজার ২০০ মিনিট পর দেশের বহু কাঙ্খিত এ নির্বাচন আগামী (৭ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হবে। আর এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পাল্টে গেছে টাঙ্গাইলের রাজনৈতিক পরিস্থিতি। তফসিল ঘোষণার পর থেকেই পুরো টাঙ্গাইল জেলায় নির্বাচনের আমেজ বইছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর তা আরও জোরালো হয়েছে। নির্বাচন হবে, কি হবে না- এক সময় কারও কারও মধ্যে এমন আশঙ্কা থাকলেও এখন সেই পরিস্থিতি পাল্টে গেছে বলা চলে। বর্তমানে সারাদেশসহ পুরো টাঙ্গাইল জেলাই নির্বাচনমুখী।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, টাঙ্গাইল জেলার ৮টি আসনে এবার প্রতিটি ভোটকক্ষের জন্য একটি করে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স রাখা হবে। এছাড়া প্রতি কেন্দ্রে একটি করে অতিরিক্ত ব্যালট বাক্স দেওয়া হবে। ভোট গ্রহণের জন্য ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন।
এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ পর্যন্ত কেমন হবে তা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার শেষ নেই। তফসিল ঘোষণার পর থেকেই আলোচনায় প্রাধান্য পেয়েছে এ বিষয়টি। বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে এলে কিভাবে আসবে এটিও এখন আলোচনায় স্থান পাচ্ছে। বিএনপিসহ কিছু রাজনৈতিক দল এখনো রাজপথে আন্দোলনের নামে আগুন দিয়ে গাড়ী পুড়ানো কার্যক্রমে থাকলেও আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল নির্বাচনের মাঠে সক্রিয়। প্রার্থীরা দলে দলে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেছেন। এ কারণে বিএনপির নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি এখন অনেকটাই ম্নান হয়ে গেছে। ইতোমধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রার্থী, কর্মী-সমর্থক ও সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে আগ্রহ বেড়েছে। তবে কেউ কেউ মনে করছেন, রাজপথের বিরোধী দল বিএনপিও তাদের সমমনা দলগুলোকে নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিলে এ নির্বাচন নিয়ে সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে আরও বেশি আগ্রহ বৃদ্ধি পেতো এবং নির্বাচন হতো আরও উৎসবমুখর পরিবেশে।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে বিএনপির আন্দোলন এবং সরকার ও নির্বাচন কমিশনের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশী-বিদেশী মহলের চাপের কারণে একটি গুমোট পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। কিন্তু প্রতিবেশী দেশ ভারত ও রাশিয়া বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করায় ও তফসিল ঘোষণাকালে নির্বাচন কমিশনের সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থার আশ্বাসে দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি পাল্টে যায়। দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচন নিয়ে নেতিবাচক চিন্তা করা মানুষের মধ্যে অনেকেই ইতিবাচক ধারায় ফিরে এসেছে। আর আওয়ামী লীগসহ অনেক দল পুরোদমে নির্বাচনের মাঠে সক্রিয় হওয়ায় মানুষ দ্রুত নির্বাচনমুখী চিন্তাভাবনা শুরু করে। নির্বাচন কমিশন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই মাঠে তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে ছোট-বড় রাজনৈতিক দলগুলো। এই দলগুলোর প্রার্থীসহ সর্বস্তরের নেতাকর্মী এখন নিজ নিজ এলাকায় গণসংযোগসহ বিভিন্নভাবে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন। তাদের পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ তাদের স্বজন ও শুভানুধ্যায়ীরাও নিজ নিজ সংসদীয় এলাকায় গণসংযোগ শুরু করেছেন।
আর যারা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তাদের স্বজনদের মধ্যে যারা প্রবাসে অবস্থান করছেন তারাও এখন বিভিন্নভাবে নির্বাচনী প্রচারে শরিক হয়েছেন। প্রবাসীদের মধ্যে অনেকে ছুটি নিয়ে দেশে চলে আসছেন। আর যারা দেশে আসতে পারছেন না তারা বিদেশে বসেই পছন্দের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন। কেউ কেউ প্রার্থীদের জন্য আর্থিক সাপোর্টও দিচ্ছেন বলে জানা যায়।