সাদ্দাম ইমন ॥
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলির অন্যতম সদস্য, বর্তমান সরকারের কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনের বর্তমান এমপি। তিনি টানা চারবার এ আসনের প্রতিনিধিত্ব করে আসছেন। বিগত ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এই আসনে বিজয়ী হওয়ার পর থেকে আসনটি আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে। পঞ্চমবারের মতো তিনি দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকের কাছে কোনও নগদ টাকা না থাকলেও এবারের নির্বাচনে তার হাতে রয়েছে ৪৮ লাখ ৭২ হাজার ৬০৩ টাকা। এছাড়াও তার বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট/দোকান বা অন্যান্য ভাড়া বেড়েছে তিনগুণ। তবে তার স্ত্রীর নামেও কোনও টাকা নেই বলে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও একাদশ নির্বাচনে হলফনামায় তার স্ত্রী শিরিন আক্তার বানুর নামে এক লাখ ১৫ হাজার ৫০০ টাকা উল্লেখ করা হয়েছিল। এছাড়া তার বিরুদ্ধে কোনও মামলা নেই।
প্রার্থীর হলফনামা সূত্রে জানা গেছে, দশম নির্বাচনে শেয়ার/সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানতের ওপর আয় না থাকলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৭২৬ টাকা আয় ছিল। তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কয়েকগুণ বেড়ে গেছে এই খাতের আয়। তিনি বাৎসরিক এই খাত থেকে আয় করেন ৭৯ হাজার ৩২৫ টাকা। ব্যাংকে আর্থিক পরিমাণও বেড়েছে তার। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যাংকে ছিল তিন লাখ টাকা। সেখানে একাদশ নির্বাচনে পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ৮১ লাখ ৬৬ হাজার ২০ টাকা। এরপর দ্বাদশে এসে এর পরিমাণ আরও বেড়ে হয়েছে এক কোটি ছয় লাখ ৭৪ হাজার ৮০৬ টাকা। তবে একাদশ নির্বাচনে কৃষিমন্ত্রী ও তার স্ত্রীর নামে বিভিন্ন ব্যাংকে সঞ্চয়পত্র, এফডিআর থাকলেও দ্বাদশ নির্বাচনি হলফনামায় নেই। কৃষিমন্ত্রীর স্বর্ণের পরিমাণ বাড়েনি। একাদশ নির্বাচনে স্ত্রীর নামে পাঁচ তোলা স্বর্ণ থাকলেও এবার সেটিও নেই।
কৃষিমন্ত্রীর স্থাবর সম্পত্তির হিসাবে মিরপুরে ৩ নং সেক্টরে পাঁচতলার আবাসিক ভবনের ১/৪ অংশের মালিকানা, ফ্ল্যাট রয়েছে ঢাকার লালমাটিয়ায়। তবে একাদশ নির্বাচনে দেওয়া হলফনামায় স্থাবর সম্পত্তি হিসেবে মিরপুরের সেনপাড়ার চারটি ফ্ল্যাট ও লালমাটিয়ার ২১৫২ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট। এবং তার স্ত্রীর নামে গাজীপুরের টঙ্গীতে ১৩ কাঠা, দক্ষিণ গোড়ানে ০.৮৯ শতাংশ এবং সাভারে ৫ কাঠা জমি, গোড়ান ঢাকায় বি-৩, এ-৭ ও সি-৯ তে ১১০০ বর্গফুটের দুইটি ফ্ল্যাট ও ১২০০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট, সেখানে তিনটি কার পার্কিংয়ের জায়গা, ঝিলমিল প্রকল্পে রাজউককে অগ্রিম ১৮ লাখ ৮৯ হাজার ৮৯০ টাকা দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ ছিল। যা দ্বাদশ নির্বাচনের হলফনামায় নেই।
একাদশ নির্বাচনের হলফনামায় চাকরির কলামে কোনও আয়ের কথা উল্লেখ করেননি। তবে অন্যান্য (সুনির্দিষ্টভাবে) কলামে সংসদ সদস্য হিসেবে সম্মানী ভাতা ছয় লাখ ৬০ হাজার, সংসদ সদস্য হিসেবে অন্যান্য করমুক্ত আয় ১৯ লাখ ২৬ হাজার ৯৭৫ টাকা এবং মৎস্য চাষ থেকে আয় চার লাখ ৬২ হাজার ৩২০ টাকার কথা উল্লেখ থাকলেও দ্বাদশ নির্বাচনের হলফনামায় অন্যান্যের ঘরে কিছুই উল্লেখ করেননি তিনি। তবে চাকরির কলামে করযোগ্য আয় এবং কর অব্যাহতিপ্রাপ্ত আয় ৩০ লাখ ৬৮ হাজার ৩৫৬ টাকার কথা উল্লেখ করেছেন। এছাড়াও কৃষিমন্ত্রী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় পেশা অবসরপ্রাপ্ত চিফ সায়েন্টিফিক অফিসার উল্লেখ করলেও দ্বাদশ ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনীতি হিসেবে পেশায় উল্লেখ করেছেন।