
স্টাফ রিপোর্টার ।।
ঢাকা জেলার ধামরাই বাসস্ট্যান্ডে সেলফি পরিবহনের বাসের ধাক্কায় নিহত ৪১তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশ প্রাপ্ত রুবেল পারভেজের গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের বন্দ্যেকাউলজানীতে চলছে শোকের মাতম। কোন ভাবেই এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছেনা পরিবার ও এলাকাবাসী। বিচার ও পরিবারটির ভরণপোষণের দাবি তাদের ।
এতিম ও দরিদ্র পরিবারে বেড়ে ওঠা রুবেল পারভেজকে নিয়ে মা কুলসুম বেগমের স্বপ্ন ছিলো আকাশ সমান। সেই স্বপ্ন চোখের পলকেই কেড়ে নিলো সেলফি পরিবহনের বাস।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে তার কর্মস্থলে যাওয়ার সময় ধামরাই বাসস্ট্যান্ডে পৌছালে সেলফি পরিবহনের একটি বাস অপর একটি বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাসস্ট্যান্ডে পৌছে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে রুবেল পারভেজসহ অপর দুই পথচারীর ওপর তুলে দেন। এতে ঘটনাস্থলেই রুবেল পারভেজ ও হাসপাতালে অপর একজনের মৃত্যু হয়। দুপুরে রুবেল পারভেজের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে পুরো গ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে।
বাবা না থাকলেও মায়ের কষ্টের জমানো টাকায় রুবেল পারভেজ শত প্রতিকূলতাকে পাশ কাটিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করেন। পরে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের মানিকগঞ্জের ঝিটকা শাখায় চাকরি শুরুর পাশাপাশি বিসিএসের প্রস্তুতি নিয়ে ৪১তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশ প্রাপ্ত হন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল্লাহেল কাফী, বলেন, রুবেল অনান্য শিক্ষার্থীদের থেকে সম্পর্ণ আলাদা ছিলো। মায়ের সহযোগিতায় ও নিজে প্রাইভেট পড়িয়ে পরিবারের অন্য সদস্যদের মুখে খাবার তুলে দেয়ার পাশাপাশি নিজে লেখাপড়া করেছেন। সেলফি পরিবহনের বাসের কারনে দেশ একটি সম্পদ হারালো। এধররের বেপরোয়ারা বাস বন্ধের দাবি তার।
রুবেল ৪১তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশ প্রাপ্ত হওয়ার পর শেষ হয়েছে পুলিশ ভেরিফিকেশনসহ সকল কার্যক্রম। খুব শিগ্রই চাকরিতে যোগ দেয়ার কথা ছিলো তার। তিন বছর আগে রুবেল বিয়ে করেন। তার একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
ঘাতক বাস চালকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও কর্তপক্ষকে নিহতের পরিবারের পাশে দাড়ানোর দাবী স্বজন ও এলাকাবাসীর।