বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর চেয়ে ছোট ভাই মুরাদ সিদ্দিকীর অর্থ বেশী

টাঙ্গাইল টাঙ্গাইল সদর বাসাইল লিড নিউজ সখিপুর

স্টাফ রিপোর্টার ॥
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তমের মালিকানাধীন সোনার বাংলা প্রকৌশলী সংস্থা (প্রাঃ) লিঃ এর বিপরীতে অগ্রণী বাংক টাঙ্গাইল শাখায় ঋণের কারণে গত দুটি সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেননি। ঋণ খেলাপির কারণে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
বিগত ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জোটে অংশগ্রহণ করেন। তার মেয়ে কুড়ি সিদ্দিকী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দি¦তা করে হেরে যান। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে পরিবার নিয়ে গণভবনে দেখা করার পর প্রেক্ষাপট পাল্টে যায়। বিগত দিনগুলোতে সরকারের সমালোচনা করে বক্তব্য বিবৃতি দিলেও দেখা করার পর থেকে সরকারের পক্ষে সরব হন। সরকার যে তার প্রতি নমনীয় তা লক্ষনীয় বিষয় হয়ে ফুটে উঠে। যাচাই বাছাইয়ে এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার মনোনয়নপত্র টিকে যায়।
টাঙ্গাইল জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে মনোনায়নপত্র দাখিলের হলফনামায় ২১ কোটি ৮০ লাখ ৩১ হাজার টাকা ঋনের কথা উল্লেখ করেছেন। তবে ওই ঋণ গত ২৬ নভেম্বর পুনঃ তফশিলিকরণ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পেশা কৃষি, ব্যবসা, রাজনীতি ও লেখক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কৃষি খাতে আয় উল্লেখ করেছেন ১ লাখ ৫২ হাজার টাকা। ভাড়া হতে আয় দেখিয়েছেন ৪ লাখ টকা। এছাড়াও শেয়ার ও সঞ্চয়পত্র রয়েছে এক হাজার ৩১৮ টাকা। পেশা থেকে আয় ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। তিনি তার দেওয়া হলফনামায় স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির কোন হিসাব উল্লেখ করেননি। শুধু নিজ নামের সম্পত্তির কলামে সংযুক্ত লিখে দিয়েছেন। তিনি এবার টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এদিকে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর ছোট ভাই মুরাদ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে চারবার সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছে। এবারও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। স্নাতক পাশ মুরাদ সিদ্দিকী পেশায় ঠিকাদার। হলফনামায় ব্যবসা হতে ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার ৯০৩ টাকা আয়ের কথা উল্লেখ করেছেন। অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে হাতে নগদ দেখিয়েছেন ৩৪ লাখ ৭০ হাজার একশ’ টাকা। স্ত্রীর নামে রয়েছে ২ লাখ ১৬ হাজার ৭৩ টাকা। বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে ৩০ লাখ ৭৩ হাজার ৮১০ টাকা। স্ত্রী নামে রয়েছে এক কোটি ২১ লাখ ৮৯ হাজার ৬৫৬ টাকা। নিজের রয়েছে একটি জীপ গাড়ি। যার মূল্য উল্লেখ করেছেন ৩৭ লাখ ৪৫ হাজার ও স্ত্রীর একটি প্রাইভেটকারের মূল্য ধরেছেন ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। নিজের ও স্ত্রীর ৬৪ ভরি স্বর্ণ রয়েছে। ইলেকট্রনিক সামগ্রী রয়েছে ১৭ লাখ ৩৫ হাজার ১০০ টাকার। আসবাবপত্র রয়েছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৫০০টাকার। স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে ছাতিহাটিতে এজমালি ৩ একর কৃষি জমি, শহরের আকুর টাকুর পাড়ায় ৬০ শতাংশ জমির উপর পৌত্রিক বাড়ি। এছাড়াও সেনপাড়া পূর্বতায় সাড়ে ৬ শতাংশ জমি রয়েছে। স্ত্রীর নামে টাঙ্গাইল পৌর শহরের আকুর টাকুর পাড়ায় ২১ শতাংশ জমি রয়েছে যার অর্জনকালীন মূল্যে ৯৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা। বাসাইলে ৫১ শতাংশ জমি ও গুলশানে একটি ফ্ল্যাট রয়েছে যার মূল্যে এক কোটি ৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। এছাড়াও শহরের ডিস্ট্রিক গেট সংলগ্ন একটি দোকান রয়েছে যার আনুমানিক মূল্যে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা উল্লেখ করা হয়েছে।
মুরাদ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসন ও টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। মনোনয়ন না পেয়ে তিনি ওই দুই আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। মুরাদ সিদ্দিকী যে কোন একটি আসন থেকে নির্বাচন করতে পারেন বলে শোনা গেছে।

 

৫৪৩ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *