
জাহিদ হাসান ॥
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আহসানুল ইসলাম টিটু এবারও টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসনে নৌকার প্রার্থী। সংসদ সদস্য হওয়ার পর পাঁচ বছরে তাঁর আয় ও সম্পদ দুটিই বেড়েছে। বেড়েছে তাঁর স্ত্রীর সম্পদও। বন্ড ও শেয়ারে এই দম্পতির এখন ৮ কোটি ৭৯ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ। মনোনয়নপত্রের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়।
হলফনামা অনুযায়ী, আহসানুল ইসলাম টিটুর কৃষি থেকে আয় বছরে ৪০ হাজার টাকা বেড়ে হয়েছে ৯৪ হাজার ৩২ টাকা। এখন বাড়ি ভাড়া থেকে বছরে ৭ লাখ ১৭ হাজার টাকা আয় করলেও বিগত ২০১৮ সালে অর্থাৎ একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় এ খাতে তাঁর কোনো আয় ছিল না। ওই সময় নির্ভরশীলদের আয় ছিল ৯ লাখ ১২ হাজার টাকা। যা কমে এখন হয়েছে ৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা। পাঁচ বছরে ব্যবসা থেকে তাঁর আয় ১১ লাখ ৩৪ হাজার থেকে বেড়ে হয়েছে ১৪ লাখ ১০ হাজার টাকা। এমবিএ পাস আহসানুল ইসলাম টিটুর পেশা ব্যবসা হলেও আগের হলফনামায় চাকরি থেকে তিনি আয় দেখান ৮৮ লাখ ১৫ হাজার টাকা। এবার প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টা হিসেবে আয় দেখিয়েছেন ৮৬ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। এছাড়া সংসদ সদস্য হিসেবে ২৩ লাখ ৭৩ হাজার টাকা ভাতা পাওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। অন্যান্য আয় উল্লেখ করা হয়েছে ৪৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। তাঁর শেয়ার, সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত ১৬ লাখ ৫২ হাজার থেকে বেড়ে হয়েছে ২৩ লাখ ৪৬ হাজার টাকা।
আহসানুল ইসলাম টিটুর নগদ অর্থ ৬৬ লাখ ৮৫ হাজার থেকে বেড়ে হয়েছে ১ কোটি ১ লাখ ৯২ হাজার টাকা। তাঁর স্ত্রী আরিয়া ইসলামের নামেও নগদ আছে ৪৬ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। ব্যাংকে জমা ১ কোটি ৫২ লাখ বেড়ে এখন হয়েছে ২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। স্ত্রীর নামেও ব্যাংকে আছে ১৭ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। তাঁর বন্ড, ঋণপত্র ও কোম্পানির শেয়ার রয়েছে ৫ কোটি ৭৮ লাখ ৮৬ হাজার টাকার। যা পাঁচ বছর আগে ছিল ৭২ লাখ ৩৬ হাজার টাকার। স্ত্রীর নামে পাঁচ বছর আগে বন্ড-শেয়ার ছিল ৯০ লাখ ৫৬ হাজার টাকার, যা বেড়ে এখন হয়েছে ৩ কোটি ১ লাখ ১৮ হাজার টাকা।
তবে স্বামী-স্ত্রী দু’জনেরই পোস্টাল সেভিংস সার্টিফিকেটে বিনিয়োগ কমেছে। ৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা কমে এই খাতে এখন স্বামীর বিনিয়োগ ১ কোটি ৪ লাখ এবং ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা কমে স্ত্রীর বিনিয়োগ ১০ লাখ টাকা। ১ কোটি ৩১ লাখ টাকার একটি জিপ রয়েছে আহসানুল ইসলাম টিটুর। স্বর্ণ আছে ৭ হাজার টাকার। উপহার হিসেবে পাওয়া ৮০ তোলা স্বর্ণ রয়েছে স্ত্রীর। ইলেকট্রনিক সামগ্রী রয়েছে ৪ লাখ ৭০ হাজার এবং আসবাব ২ লাখ টাকার। ফ্ল্যাট বাবদ অগ্রিম দেওয়া রয়েছে ৩৪ লাখ টাকা। সন্ধানী এগ্রো ফার্মে নিজের মূলধন ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা এবং অ্যাট কর্নার থাই রেস্টুরেন্ট ৩৮ লাখ টাকা বিনিয়োগ রয়েছে স্ত্রীর নামে। পাঁচ বছরে বিও অ্যাকাউন্টে তাঁর ব্যালেন্স ১৬ লাখ ২৩ হাজার থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৮ লাখ ৩১ হাজার টাকা। বিও অ্যাকাউন্টে স্ত্রীর রয়েছে ১১ লাখ ৯০ হাজার টাকা, যা আগেরবার ছিল ৪ লাখ ৯৫ হাজার।
এমপি হওয়ার পর আহসানুল ইসলাম টিটুর স্থাবর সম্পদ বেড়েছে। কৃষিজমি ১১১ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৭৮ শতাংশ, যার দাম ৫৬ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। নতুন করে দুটি ফ্ল্যাট হয়েছে, যার দাম ১ কোটি ২৯ লাখ টাকা। পাঁচতলা একটি দালান রয়েছে, যার অর্জিতমূল্য ৪৭ লাখ ৬৯ হজার টাকা। এছাড়া তাঁর ১২৪ শতাংশ জমিসহ একটি বাড়ি রয়েছে, যার অর্জিতমূল্য ৭৫ লাখ ১৯ হাজার টাকা। স্ত্রীর নামে ঢাকার গুলশান নাভানা টাওয়ারে রয়েছে ফ্ল্যাট, যার দাম ২৩ লাখ টাকা। সন্ধানী এগ্রো ফার্মে রয়েছে ৫৬২ শতাংশ জমি।