কালিহাতীতে মুরাদ সিদ্দিকীর মনোনয়ন প্রত্যাহারে স্বস্তিতে লতিফ সিদ্দিকীর সমর্থকরা

কালিহাতী টাঙ্গাইল টাঙ্গাইল সদর রাজনীতি লিড নিউজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসন থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মুরাদ সিদ্দিকী। এতে স্বস্তি এসেছে তার বড় ভাই এ আসনের অপর প্রার্থী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর সমর্থকদের মধ্যে। তবে মুরাদ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি। তিনি এ আসন থেকে মাথাল প্রতিক নিয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করবেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সাবেক সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৪ আসন থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। একবার তার স্ত্রী লায়লা সিদ্দিকীও সংসদ সদস্য হয়েছিলেন।
২০১৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে একটি আলোচনা সভায় হজ্ব ও তবলিক জামাত সম্পর্কে কটুক্তি এবং সজিব ওয়াজেদ জয় সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করায় লতিফ সিদ্দিকীকে দল থেকে বহিস্কার, মন্ত্রীসভা থেকে অপসারন করা হয়। পরে তিনি সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী হাসান ইমাম খানের সমর্থকদের হামলার মুখে পরেন। পরে তিনি এর প্রতিবাদে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে অবস্থান ধর্মঘট করেন। কোন প্রতিকার না পেয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান।

দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর কালিহাতীতে তিনি কোন কর্মসূচিতে অংশ নেননি। গত সেপ্টেম্বরে তিনি কালিহাতীতে গণসংযোগ শুরু করেন। এদিকে মুরাদ সিদ্দিকীও কালিহাতী থেকে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য তৎপরতা শুরু করেন। ফলে লতিফ সিদ্দিকী গণসংযোগ করতে এসে মুরাদ সিদ্দিকীর সমর্থকদের বাঁধার মুখে পরেন। তাদের অপর ভাই কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তমসহ পরিবারের অন্যান্যরা সবাই লতিফ সিদ্দিকীর পক্ষে অবস্থান নেন।
মুরাদ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৪ ও টাঙ্গাইল-৫ আসন থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম তুলেন। কিন্তু কোন আসনেই মনোনয়ণ না পেয়ে দুই আসন থেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। এতে অনেকটা অস্বস্তিতে পড়েন লতিফ সিদ্দিকীর সমর্থকরা। মুরাদ সিদ্দিকী কালিহাতী থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করায় এখন তারা অনেকটাই স্বস্তি পেয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে লতিফ সিদ্দিকীর অনুসারী মোশারফ হোসেন সিদ্দিকী জানান, দুই ভাই একই আসন থেকে প্রতিদ্বন্দিতা করলে মানুষ সমালোচনা করতো। মুরাদ সিদ্দিকী প্রত্যাহার করায় এখন সে সমালোচনা বা প্রশ্নের সন্মুখিন হতে হবে না।
টাঙ্গাইল-৪ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজহারুল ইসলাম তালুকদার। তবে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের অনেক নেতাকর্মী লতিফ সিদ্দিকীর সাথে রয়েছেন।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, ২০০১ সালের নির্বাচনে লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছিলেন তার ভাই কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম। সে নির্বাচনে লতিফ সিদ্দিকী হেরে যান। এবার মুরাদ সিদ্দিকী প্রার্থী হওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েন লতিফ সিদ্দিকীর সমর্থকরা। মুরাদ সিদ্দিকী যে ভোট পেতেন তার অনেক ভোটই আসতো লতিফ সিদ্দিকীর ভোট ব্যাংক থেকে। যা প্রকারন্তরে লতিফ সিদ্দিকীর জন্য ক্ষতির কারণ হতো।
মুরাদ সিদ্দিকীর সমর্থক আসাদুজ্জামান আরজু জানান, মুরাদ সিদ্দিকী কালিহাতী আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। তিনি টাঙ্গাইল-৫ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দিতা করবেন।

৪৯৪ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *