স্টাফ রিপোর্টার, মির্জাপুর ॥
নৌকা না পেয়ে সাংসদ খান আহমেদকে ঠেকাতে মনোনয়ন বঞ্চিত চার নেতা টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতা মীর এনায়েত হোসেন মন্টুর ট্রাকে উঠেছেন। শুধু এই চার নেতাই নন, উপজেলা আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্যের ৫৫ জনই স্বতন্ত্র প্রার্থী মন্টুকে সমর্থন দিয়েছেন। এছাড়া পৌর ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের অধিকাংশ নেতাকর্মী নির্বাচনী এই জনসভায় অংশ নেন। তারা নির্বাচনী প্রচারণার প্রথম দিন সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে মির্জাপুর শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে আয়োজিত নির্বাচনী সমাবেশে স্বতন্ত্র প্রার্থী মন্টুর ট্রাক প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন। এ সময় সারা মাঠে নেতাকর্মী ও সমর্থকরা ‘নিজের খেয়ে ট্রাক’ এই শ্লোগান দেন।
মীর এনায়েত হোসেন মন্টু উপজেলার শিল্পাঞ্চল এলাকার গোড়াই ইউপির টানা পাঁচবার এবং উপজেলা পরিষদের টানা তিনবারের চেয়ারম্যান। মীর এনায়েত হোসেন মন্টু গত (২৭ নভেম্বর) উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
বক্তরা বলেন, আমরা তৃণমূলের নেতাকর্মীরা যখন লাঞ্ছিত-বঞ্চিত, তখন মির্জাপুরে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মীর এনায়েত হোসেন মন্টুকে প্রার্থী করেছি। জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থীকে নির্বাচন করার সুযোগ দিয়েছেন। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। ‘আমরা মির্জাপুরের মানুষ, মির্জাপুরের মানুষকে ভোট দিতে চাই। বহিরাগতদের মির্জাপুরে আশ্রয় প্রশ্রয় দেব না।’ এবারের শ্লোগান নিজের খেয়ে মন্টু ভাইয়ের ট্রাক, ‘হটাও টাঙ্গাইল বাঁচাও মির্জাপুর। সকল নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ঐক্যবদ্ধ থেকে প্রতিটি ভোটকেন্দ্র পাহারা দিতে প্রস্তত থাকার আহবান জানান তারা।
আওয়ামী লীগের চার মনোনয়ন বঞ্চিতরা হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মীর শরীফ মাহমুদ, টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনের টানা চারবারের সংসদ সদস্য প্রয়াত একাব্বর হোসেনের ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার তাহরীম হোসেন সীমান্ত, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য রাফিউর রহমান ইউসুফজাই সানি ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অবসরপ্রাপ্ত মেজর খন্দকার আব্দুল হাফিজ। এদের মধ্যে রাফিউর রহমান ইউসুফজাই সানি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিলেও তা প্রত্যাহার করেছেন।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোবারক হোসেন সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে মির্জাপুর পৌরসভার মেয়র সালমা আক্তার, উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শামীমা আক্তার শিফা, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম, জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি মীর দৌলত হোসেন বিদ্যুৎ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আল মামুন, দপ্তর সম্পাদক জহিরুল হক, আওলাদ হোসেন, শরিফুল ইসলাম প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
এই আসনে ৯ জন আওয়ামী লীগ নেতা দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। এদের মধ্যে বর্তমান সংসদ সদস্য খান আহমেদ শুভকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়। নৌকা না পেয়ে ওই চার আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর এনায়েত হোসেন মন্টুকে সমর্থন দিয়ে জনসমাবেশে ট্রাক মার্কায় ভোট প্রার্থনা কওে প্রচারণা শুরু করেছেন। উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৪ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, শ্রমিকলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ছাড়াও দশ সহ¯্রাধিক সাধারণ নারী, পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।
