
জাহিদ হাসান ॥
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইলের ৮টি আসনে প্রচারণার কাজ শুরু হয়েছে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই। প্রচারণার অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন, লিফলেট ও মাইকিং। সকল প্রস্তুতি শেষে মাইক ব্যবসায়ীরা এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। গত (১৮ ডিসেম্বর) থেকে আগামী (৫ জানুয়ারি) পর্যন্ত প্রচারনা করতে পারবে প্রার্থীরা।
‘মা বোনদের বলে যাই … মার্কায় ভোট চাই’, ‘মায়ের কোলে শিশুর ডাক…ভাই জিতে যাক’, ‘উড়ছে পাখি দিচ্ছে ডাক … ভাই জিতে যাক’, ‘মাগো তোমার একটি ভোটে… ভাই যাবে জিতে’, ‘পদ্মানদীর দুই কূল … জিতে যাবে…’, ‘… ভাইয়ের দুই নয়ন, ….বাসীর উন্নয়ন’ ইত্যাদি স্লোগান আর কোরাসে মুখরিত হয় উঠছে টাঙ্গাইল জেলার ৮টি সংসদীয় আসন। ফলে মাইকের দোকান ও ব্যবসায়ীরা পুরনো মাইক সার্ভিসিং ও ঘষামাজা করে সচল করে প্রচারে ব্যবহার করছে। রঙ চড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে নতুন রূপ। নতুন মাইক বিক্রিও বেড়েছে। এই মাইকগুলোর প্রতিটি ভাড়া হচ্ছে ক্ষেত্রবিশেষে এক-দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত। সাধারণত কালেভদ্রে শোক সংবাদ প্রচার ও সভা-সমাবেশ ছাড়া মাইকের তেমন কদর থাকে না। ভাড়াও হয় কম। সবচেয়ে বেশি মাইকের ব্যবহার করা হয় নির্বাচনী প্রচারণাতেই। অন্য সময়ে দোকানগুলোতে কেবল মাইক সাজিয়ে রাখা হয় গুদাম ঘরে। সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে গুদামে সাজিয়ে রাখা সেই মাইকগুলো এখন বের করে সার্ভিসিং করে প্রচারণা করা হচ্ছে। মাইকের ভেতর কোনো সমস্যা আছে কিনা তা দেখে নিচ্ছেন বিক্রেতারা।
মাইক সার্ভিসের কর্মচারী শফিকুল ইসলাম বলেন, এরই মধ্যে তার দোকানের মাইকগুলো বুকিং হয়ে গেছে। গত (১৭ ডিসেম্বর) থেকে আগামী (৫ জানুয়ারি) পর্যন্ত তার কোনো মাইক নেই। আর মাইক সার্ভিসিংয়ের জন্যও কোনো অবসর নেই। এখন সব মাইক মাঠে প্রচারনায় চলছে। এ সময় তাদের ব্যবসা জমজমাট হয়ে ওঠে বলেও জানান মাইক সার্ভিসের এই কর্মচারী। ঝঙ্কার মাইক সার্ভিসের স্বত্ত্বাধিকারি আজগর হোসেন বলেন, সারা বছর প্রায় অলস সময় পার করতে হয় তাদের। তবে নির্বাচন এলে মাইকের কদর বেড়ে যায়। এ কারণে নির্বাচনের আগে দোকানের মাইকগুলো ঠিকঠাক করে রাখতে হয়। তার প্রত্যাশা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এবার মাইকের ভালো ব্যবসা হবে। গত নির্বাচনের চেয়ে এবার ভাল ব্যবসা হবে। এবার সব আসনে উৎসবমুখর পরিবেশেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তাই প্রচারণার কাজে মাইকের চাহিদাও বেশি।
সাউন্ড সিস্টেমের স্বত্ত্বাধিকারি খোকন মিয়া বলেন, মিছিল, সভা-সমাবেশের এই প্রচারের অন্যতম অনুষঙ্গ হচ্ছে ‘মাইক’। বছরের নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোটামুটি ব্যস্ত সময় কাটাতে হয় এই পেশার মানুষদের। বাকি সময় অনেকটা নিরুত্তাপ থাকে মাইকপাড়া। এর ওপর এবার সংসদ নির্বাচন। তাই নির্বাচন উপলক্ষে অন্য বছরের তুলনায় এবারের মৌসুমে ভালো সময় কাটবে বলেই আশা করা হচ্ছে। মাইক ব্যাবসায়ী শাহজাহান মিয়া বলেন, নির্বাচনী প্রচারণা, মিছিল, সভা-সমাবেশের অন্যতম অনুষঙ্গ মাইক। দিনভর পাবলিসিটি চলতে থাকে বিভিন্ন প্রার্থীদের। তাই মাইকের সংখ্যা বাড়িয়েছি। পর্যাপ্ত ব্যাটারি সচল করে রাখার কাজ করছি। এর সাথে পাবলিসিটি করার জন্য সুকণ্ঠের কয়েকজনের সাথে চুক্তি করে তাদের বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় রেখেছি।