
স্টাফ রিপোর্টার, মির্জাপুর ॥
নিজের খেয়ে মন্টু ভাই, ট্রাক মার্কায় ভোট চায়, সব যাবে ফাকে, ভোট যাবে ট্রাকে, শেখ হাসিনার নিশ্চয়তা কেন্দ্রে গিয়ে দিবো ভোট ট্রাকে। এসব শ্লোগানে মুখরিত মির্জাপুরের অলি গলি। স্বতন্ত্র্র প্রার্থীর কর্মী সমর্থকরা এসব শ্লোগান দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর এনায়েত হোসেন মন্টুর পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন। আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা। অলিগলি ও রাস্তায় শোভা পাচ্ছে ব্যানার-পোস্টার। তবে এরমধ্যে নৌকা ও ট্রাকের প্রার্থীদের প্রচারণাই সবচেয়ে বেশি।
বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, মির্জাপুর উপজেলায় একটি পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়ন নিয়ে টাঙ্গাইল-৭ আসন। উপজেলার ১৩৫টি ওয়ার্ডে নৌকা ও ট্রাকের ক্যাম্প করা হয়েছে। নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এই ক্যাম্প থেকেই নৌকার পক্ষে প্রচারণার কাজ করছেন। এসব নির্বাচনী ক্যাম্পে বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কর্মী সমর্থকদের ভিড় থাকে বেশি। এরমধ্যে অনেক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী স্বতন্ত্র প্রার্থী মন্টুর পক্ষে ‘নিজ খরচে’ই প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এছাড়া এ উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার রয়েছে প্রায় ৯০০। এসব পরিবারের ভোটাররা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান খান আহমেদ শুভ (নৌকা) ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর এনায়েত হোসেন মন্টু (ট্রাক) মার্কায় ভোট দিবেন। তারা সমাবেশ করে একক কোন প্রার্থীকে ভোট দিবেন না এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা জানিয়েছেন।
তারা বলছেন, দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছেন। উৎসব মূখর ভোট করতে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মীর শরীফ মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার তাহরীম হোসেন সীমান্ত, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য ইবিএস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মধুমতি ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালক রাফিউর রহমান ইফসুফজাই সানি ও জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) খন্দকার আব্দুল হাফিজ, মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও হংকং শাখা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ লিটন, সহসভাপতি সাইদুর রহমান বাবুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু রায়হান সিদ্দিকী, সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রানা, শামীম আল মামুন, দপ্তর সম্পাদক জহিরুল হকসহ আওয়ামী লীগ যুবলীগ, কৃষকলীগ, শ্রমিকলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ট্রাকের পক্ষে ভোট চাচ্ছেন। একাধিক গ্রুপে বিভক্ত হয়ে প্রচারণার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
এছাড়া মির্জাপুর পৌরসভার মেয়র সালমা আক্তার, উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শামীমা আক্তার শিফা, ভাইস চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম, বহুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুু সাইদ সাদু, বাঁশতৈল ইউপি চেয়ারম্যান হেলাল দেওয়ান, আজগানা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের শিকদার, ফতেপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ুন তালুকদার, আনাইতারা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলমসহ কয়েকজন বর্তমান ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থীর ট্রাক প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করছেন বলে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের সাধারণ ভোটার ও নেতারা জানিয়েছেন। ভোটারদের কেন্দ্রে আনাই মূল চ্যালেঞ্জ নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন বলে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু রায়হান সিদ্দিকী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আল মামুন জানিয়েছেন।
এদিকে এবারের সংসদ নির্বাচনে একজন প্রার্থী ভোটার ও আসনপ্রতি কত টাকা খরচ করতে পারবেন তা নির্ধারণ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
প্রজ্ঞাপন থেকে জানা যায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, একজন প্রার্থীর নির্বাচনী খরচ ২৫ লাখ টাকার বেশি হবে না। ভোটারপ্রতি ব্যয় ১০ টাকা। তবে ভোটার সংখ্যা যাই হোক, প্রার্থীর ব্যয় সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকার বেশি হবে না। এজন্য নেতাকর্মীরা নিজের টাকা খরচ করছেন বলে জানা গেছে।
সরেজমিন কয়েকটি ক্যাম্পে গিয়ে দেখা যায়, নেতাকর্মী ও সমর্থকরা সেখানে ভিড় করে আছেন। সেখান থেকে পুরুষ এবং নারীদের আলাদা গ্রুপে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। তারা ভোটারদের কাছে ভোট চাইছেন। নির্বাচনের এসব কার্যক্রমে প্রার্থীর পক্ষ থেকে খরচ দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরাও নির্বাচনী কার্যক্রমে নিজেদের অর্থ ব্যয় করছেন।
এ আসনে খান আহমেদ শুভ (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী মীর এনায়েত হোসেন মন্ট মন্টু (ট্রাক), গোলাম নওজব চৌধুরী (হাতুড়ী), আরমান হোসেন তালুকদার (গামছা), জহিরুল ইসলাম জহির (লাঙ্গল), মঞ্জুর রহমাান মজনু (মশাল), মোক্তার হোসেন (গোলাপ ফুল) ও রুপা রায় চৌধুরী (ডাব) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।