
স্টাফ রিপোর্টার, মির্জাপুর ॥
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নাশকতা মামলার আসামী বানাইল ইউপি চেয়ারম্যান উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন সিদ্দিকী নৌকা প্রার্থীর উপস্থিতিতে বলেছেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর এনায়েত হোসেন মন্টুর ট্রাক মার্কায় ভোট দেয়া যাবে না। বানাইল ইউনিয়নের কোন ব্যক্তি ওনাকে ভোট দেয় আমি মনে করবো ওই ব্যক্তি বানাইল ইউনিয়নের একজন রাজাকার। তার এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেয়া হলে ভাইরাল হয়।
তিনি গত ২২ ডিসেম্বর বানাইল ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের হাজী বাড়ি মাদরাসার উদ্যোগে আয়োজিত ওয়াজ মাাহফিলে তিনি একথা বলেন। আব্দুল্লাহ আল মামুন টাঙ্গাইল জেলা ও মির্জাপুর উপজেলা ওলামাদলের আহবায়ক।
তিনি গত ৩০ অক্টোবর মির্জাপুর থানার নাশকতা মামলায় গ্রেপ্তার হন। তিনি সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন বলে জানা গেছে। তার এই বক্তব্যে নির্বাচন আচরণবিধি ভঙ্গ এবং হুমকি প্রদানের অভিযোগে স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর এনায়েত হোসেন মন্টু রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) সহকারী রিটার্নিং অফিসার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাকিলা বিনতে মতিনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
জানা গেছে, গত ২২ ডিসেম্বর বানাইল ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের হাজী বাড়ি মাদরাসার উদ্যোগে ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী খান আহমেদ শুভ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
এসময় বানাইল ইউপি চেয়ারম্যান উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন সিদ্দিকী বলেন, মীর এনায়েত হোসেন মন্টু ১৫ বছর ধরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আর আমি গত দুই বছর ধরে বানাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছি। এই দুই বছরে বানাইল ইউনিয়নের বন্টনের ৭০ লাখ টাকা, পাঁচটি টিউবওয়েল বরাদ্ধ ছিল। আমাকে জেলে পাঠিয়ে ওই বরাদ্ধ অন্য জায়গায় দিয়েছেন। একটি টিআর/কাবিখা ছিল সেটিও অন্য জায়গায় দিয়েছেন। যে ব্যক্তি আমার বানাইল ইউনিয়নকে দেখতে পারে না, বানাইল ইউনিয়নের ভোট নিয়ে পাশ করে, আজকে বানাইল ইউনিয়নের মানুষের জন্য বরাদ্ধকৃত টাকা তিনি সরিয়ে নিয়ে আত্মসাত করেছেন। এই ব্যক্তি এমপি হওয়ার জন্য নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন, আমি বানাইল ইউনিয়নবাসীর কাছে করজোড় অনুরোধ করতে চাই এই ব্যক্তি যেন বানাইল ইউনিয়নবাসীর ভোট না পায়। বানাইল ইউনিয়নবাসী তাকে বর্জন করবে এটাই আহবান জানাই। বানাইল ইউনিয়নের কোন ব্যক্তি ওনাকে ভোট দেয় আমি মনে করবো ওই ব্যক্তি বানাইল ইউনিয়নের একজন রাজাকার। এমপি মহোদয় এখানে বসে আছেন, তিনি আমাকে ৫ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। আমি ৪০টি রাস্তা করেছি। দলের নেতারা তখন বলেছিলেন মামুনকে বরাদ্ধ দেন আমরা আপনার সাথে থাকবো না। এমপি সাহেব বিপাকে পড়ে যান। তাকে সব দিকেই সামাল দিতে হয়। ওনাদের কথা এমপি মেহাদয় শুনলেও ওনারা এখন এমপি মেহাদয়ের সঙ্গে নাই। তাদের কথায় যদি ভোট দেন, ওনি যদি (স্বতন্ত্র) এমপি হন তাহলে বরাদ্ধকৃত টাকা তাদের পকেটে যাবে, তাহলে গলা পানি দিয়ে হাঁটতে হবে।
তার এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেয়া হলে ভাইরাল হয়। তার দেয়া বক্তব্যে উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে বলে জানা গেছে। বানাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন সিদ্দিকীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।
স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর এনায়েত হোসেন মন্টু বলেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ বানোয়াট ও কাল্পনিক। ওই ইউপি চেয়ারম্যান পুলিশের দায়েরকৃত নাশকতা মামলার একজন আসামী। সম্প্রতি তিনি জামিনে এসেছেন। একটি মহল তাকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে এমন কথা বলিয়েছেন বলে মনে করি। তিনি সহকারী রিটার্নিং অফিসার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাকিলা বিনতে মতিনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে জানান।
সহকারী রিটার্নিং অফিসার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাকিলা বিনতে মতিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বলেন, তিনি ট্রেনিং এ আছেন। অভিযোগ দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।