স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের নৌকার মিছিলে রবিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বর্তমান সংসদ সদস্য স্বতন্ত্র (ঈগল) প্রতীকের প্রার্থী ছানোয়ার হোসেনের সমর্থকদের গুলির অভিযোগ উঠেছে। গুলিতে ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ তিনজন আহতের ঘটনায় থানার মামলা হয়েছে। সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইল সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন আহত রোকনের বাবা ফজলুল রহমান। মামলায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২০-২৫ জনকে আসামী করা হয়েছে।
গুলিতে আহতরা হলেন- বাঘিল ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান রোকন, যুবলীগ কর্মী এমদাদুল হক ও সিয়াম। তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। এ ঘটনায় আব্দুর রাজ্জাক ও আকাল মিয়া আকালুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আওয়ামী লীগ মনোনীত (নৌকা) প্রতীকের প্রার্থী এডভোকেট মামুন অর রশিদ বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী ছানোয়ার হোসেন তার কর্মী সমর্থকদের নিয়ে এই নির্বাচনের পরিবেশ বানচাল ও নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য আজকে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। রবিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে বাঘিল ইউনিয়নের যুগনি হাটখোলা এলাকায় নৌকার মিছিলে তারা অর্তকিত গুলিবর্ষণ করেন। সেখানে বাঘিল ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রোকন ও আমাদের কর্মী এমদাদুল হক ও সিয়ামকে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। পরে তাদের টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার পর অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। তারা মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য তিনি জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলার বাহিনীতের কাছে অনুরোধ জানান।
এ বিষয়ে স্বতন্ত্র (ঈগল) প্রতীকের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন বলেন, আমার কোন নেতাকর্মী এই ঘটনার সাথে জড়িত নয়। তারা নিজেরাই এই নাটক সাজিয়ে নির্বাচনে যেনো ভোটাররা মাঠে না আসে সে ব্যবস্থা করছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিবো। আমার নেতাকর্মীরা কখনোই এই ধরনের হামলা করবে না। নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ দেওয়া আছে। গত কয়েক দিনে আমার বেশকয়েকজন নেতাকর্মীর উপর হামলা করে আহত ও অফিস ভাঙচুর করেছে নৌকার প্রার্থীর লোকজন। সুষ্ঠু তদন্ত করে কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে সেটা বের করার দাবি করছি।
টাঙ্গাইল সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লোকমান হোসেন বলেন, এ ঘটনায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাতনামা করে মামলা দায়ের করেছেন আহত রোকনের বাবা ফজলুল রহমান। স্বতন্ত্র (ঈগল) প্রতীকের প্রার্থীর দুই সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকীদের গ্রেপ্তার করার জন্য অভিযান চলমান রয়েছে।
উল্লেখ, টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের স্বতন্ত্র (ঈগল) প্রতীকের প্রার্থী ও বর্তমান এমপি ছানোয়ার হোসেন দুইবারের সংসদ সদস্য। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। তিনি এবার মনোনয়ন দেয়া পাননি। মনোনয়ন পেয়েছেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এডভোকেট মামুন অর রশিদ।
এ আসনে আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর ছোট ভাই মুরাদ সিদ্দিকী (স্বতন্ত্র মাথাল), মোজাম্মেল হক (জাতীয় পার্টি লাঙ্গল), এডভোকেট খন্দকার আহসান হাবিব (স্বতন্ত্র কেটলি), হাসরত খান ভাসানী (বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি একতারা), শরিফুজ্জামান খান (তৃণমূল বিএনপি সোনালী আঁশ), তৌহিদুর রহমান চাকলাদার (বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-নোঙ্গর)। তবে জামিলুর রহমান মিরন (স্বতন্ত্র-ট্রাক) নির্বাচন থেকে সরে গিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন।
টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৩৪ হাজার ১৯৪ জন। পুরুষ ভোটার ২ লাখ ১৭ হাজার ৪৭২, নারী ভোটার ২ লাখ ১৬ হাজার ৭২২ জন।