
স্টাফ রিপোর্টার, মির্জাপুর ॥
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে টাঙ্গাইল-৭ মির্জাপুর আসনে টানা ৪০ বছরের জনপ্রতিনিধি ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর এনায়েত হোসেন মন্টু প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। তিনি টানা পাঁচবার উপজেলার গোড়াই ইউপি এবং টানা তিন বারের উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। ১৯৯৪ সাল থেকে তিনি টানা জনপ্রতিনিধিত্ব করছেন। ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক পাওয়ার পর প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থক নিয়ে কুশল বিনিময়ের পাশাপাশি উঠান বৈঠক ও সমাবেশের মধ্য দিয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর এনায়েত হোসেন মন্টু তার বক্তৃতায় বলেন, গোড়াই ইউনিয়নবাসী ১৯৮৪ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত পাঁচবার ইউপি নির্বাচনে বিজয়ী করেছেন। ২০০৯, ২০১৪ ও ২০১৯ সালে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী করেছেন। আমি উপজেলাবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞ। এ আসনের টানা চারবারের এমপি প্রয়াত একাব্বর হোসেনের পাশে থেকে উন্নয়ন কাজে সহযোগিতা করেছি। ২০২১ সালের ১৬ নভেম্বর তিনি মারা গেলে উপজেলাবাসী উন্নয়নের কারিগরকে হারান। আমি তার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার ইচ্ছা নিয়ে এ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। তিনি তার প্রতীক ট্রাক মার্কায় ভোট প্রার্থনা করে এমপি হিসেবে মানুষের সেবার সুযোগ চান। উপনির্বাচনে এ আসনে খান আহমেদ শুভ এমপি নির্বাচিত হন। এবারও তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন প্রত্যাশী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মীর শরীফ মাহমুদ, প্রয়াত একাব্বর হোসেনের ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার তাহরীম হোসেন সীমান্ত, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য ইবিএস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মধুমতি ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালক রাফিউর রহমান ইফসুফজাই সানি ও জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) খন্দকার আব্দুল হাফিজ, মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও হংকং শাখা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ লিটন মীর এনায়েত হোসেন মন্টুকে সমর্থন দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে প্রতিনিয়ত মীর এনায়েত হোসেন মন্টুর গণজোয়ার সৃষ্টি হচ্ছে।
ভোট প্রার্থনাকালে স্থানীয় এলাকাবাসী তাদের নানা সমস্যা তুলে ধরছেন। তিনি এবং তার পক্ষের নেতাকর্মীরা জয়ী হওয়ার পর তা বাস্তবায়ন করা হবে বলে আশ্বাস দিচ্ছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও বাঁশতৈল ইউনিয়নের বাসিন্দা সুরুজ দেওয়ান বলেন, এবার আমরা কোনো দল বুঝি না। স্বাধীনতার পর পাহাড়বাসী প্রার্থী না থাকায় এমপি নির্বাচিত করতে পারেনি। প্রথমবার সুযোগ এসেছে। আশা করি পাহাড়বাসীসহ উপজেলার ভোটাররা স্বতন্ত্রপ্রার্থী মীর এনায়েত হোসেনকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবেন।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সিয়াম বলেন, আমরা এবার বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর এনায়েত হোসেনকেই ভোট দেব। কারণ তিনি টানা ৪০ বছর ধরে জনপ্রতিনিধিত্ব করছেন। তিনি মানুষের কল্যাণে এগিয়ে আসেন। এ জন্যই তাঁকে আমরা ভোট দেব।
ওয়ার্শী ইউনিয়নের বাসিন্দা সুফল খান বলেন, আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর এনায়েত হোসেন মন্টুকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করব।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাইদুর রহমান বাবুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু রায়হান সিদ্দিকী, সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রানা, শামীম আল মামুন, দপ্তর সম্পাদক জহিরুল হকসহ আওয়ামী লীগ যুবলীগ, কৃষকলীগ, শ্রমিকলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ট্রাকের পক্ষে ভোট চাচ্ছেন। একাধিক গ্রুপে বিভক্ত হয়ে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন তারা।
এছাড়া মির্জাপুর পৌরসভার মেয়র সালমা আক্তার, উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শামীমা আক্তার শিফা, ভাইস চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম, বহুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুু সাইদ সাদু, বাঁশতৈল ইউপি চেয়ারম্যান হেলাল দেওয়ান, আজগানা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের শিকদার, ফতেপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ুন তালুকদার, আনাইতারা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলমসহ কয়েকজন বর্তমান ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থীর ট্রাক প্রতীকের প্রচারণা চালাচ্ছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু রায়হান সিদ্দিকী, সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আল মামুন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম বলেন, ভোটারদের কেন্দ্রে আনাই মূল চ্যালেঞ্জ নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণায় উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা অংশ নিচ্ছেন।