
সাদ্দাম ইমন ॥
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে টাঙ্গাইল জেলার ৮টি আসনে নির্বাচনী হাওয়া বইছে পুরোদমে। প্রতিদিন মৃদু শীতের আগমনী বার্তার সাথে সাথে গ্রামের প্রতিটি পাড়া ও মহল্লার চায়ের দোকানগুলোতে জম্পেস আড্ডায় চলছে নির্বাচনী আলোচনা ও সমালোচনা। পাশাপাশি প্রার্থীদের পক্ষে চলছে মিছিল, সভা-সমাবেশ, বৈঠক। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটারদের মধ্যে জল্পনা-কল্পনার যেন শেষ নেই। সরকার গঠনের নির্বাচন হওয়ায় আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে। প্রত্যাশা শুধু একটাই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের পরিবেশ চান ভোটাররা। এই আলোচনা এখন সকল চায়ের দোকানে দোকানে। এসব চায়ের দোকানগুলোতে নারী ভোটারদের উপস্থিতি না দেখা গেলেও তারা দলবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইছেন।
আগামী (৭ জানুয়ারির) নির্বাচন কেমন হবে, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে প্রতিটি আসনে প্রার্থীগের অতীত ও বর্তমান কর্মকান্ড-পর্যালোচনা, মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে আওয়ামী লীগের কারা কারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নৌকার বিরুদ্ধে লড়াই করছেন, তারা নির্বাচিত হলে এলাকার উন্নয়নে কতোটুকু অবদান রাখতে পারবেন। এসব খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে সকাল থেকে মধ্যরাত অবধি আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়েছে শহর ও গ্রামের চায়ের দোকানগুলোতে। টাঙ্গাইল জেলার ৮টি আসনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পাটি, জাসদ, তৃণমূল বিএনপি, এনপিপি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ মনোনীত ও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সদর উপজেলার হুগড়া বাজারের একটি চায়ের দোকানে আড্ডারত স্থানীয় প্রবীণ ও নবীন ভোটারদের মাঝে উপস্থিত হয়ে শোনা গেছে তাদের নির্বাচনী খোশ গল্প। কেউ তার পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে কথা বলে তার সাফাই গাইছেন। আবার অপর একজন অন্য প্রার্থীর ভূয়সী প্রশংসা করছেন। দোকানগুলোতে চা-সিগারেট পান করতে করতে অনেকেই নির্দ্বিধায় কোন একটি প্রার্থীর পক্ষে নিজের অবস্থান জানান দিচ্ছেন। তবে সকল ভোটারদের একটাই প্রত্যাশা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ পরিবেশে ভোট গ্রহণ। দেলদুয়ার উপজেলার লাউহাটী বাজারের বিভিন্ন চা দোকানে গিয়ে দেখা যায় চা সেবীদের আড্ডা। বাজারের দক্ষিণ পাশের একটি চা দোকানে অন্তত ১০-১২ জন বিভিন্ন বয়সী ভোটার নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করছেন। ভোটাররা কেউবা এগিয়ে রাখছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে। আবার কেউবা এগিয়ে রাখছেন আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীকে। ভোটাররা বর্তমান সংসদ সদস্যর উন্নয়ন নিয়েও বেশ আলোচনা করছেন। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের মধ্য দিয়ে সৎ ও আদর্শবান প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে চায় সাধারণ ভোটাররা।
মির্জাপুর উপজেলার ভোটার খালেদ হাসান বলেন, এ উপজেলায় বিভিন্ন শিল্প-কারখানাসহ অন্যান্য খাতে উন্নয়ন হয়েছে। তবে গ্রামীণ সড়কগুলোতে তেমন সংস্কার হয়নি। আমরা সাধারণ ভোটার হিসেবে দাবি আগামীতে যে সরকারই আসুক আমাদের রাস্তাঘাটগুলো ভালোভাবে নির্মাণ করে দিবে। চায়ের দোকানে বসে সাধারণ ভোটার নয়ন মিয়া বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে যে উন্নয়ন হয়েছে, তাতে আবারও শেখ হাসিনা আবারও প্রধানমন্ত্রী হবে বলে আমি আশাবাদী।
সব মিলিয়ে মৃদু শীতের আগমনী বার্তার সাথে টাঙ্গাইল জেলার ৮টি আসনেই এখন পুরোদমে নির্বাচনী হাওয়া বইছে। এর মধ্যে বিশেষ করে গ্রামের চায়ের দোকানগুলোতে জম্পেস আড্ডায় নির্বাচনী আলোচনাই হলো মুল বিষয়। এদিকে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় কোথাও কোথাও সংর্ঘষের ঘটনাও ঘটেছে। এসব সংঘর্ষ এড়াতে স্থানীয় প্রশাসন কঠোর অবস্থান নিয়েছে।