নূর আলম, গোপালপুর ॥
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ লম্বা ব্যক্তির ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকলেও, কক্সবাজারের রামুর জিন্নাত আলীর উচ্চতা ছিলো ৮ ফুট ২ ইঞ্চি। তিনি বিগত ২০২০ সালে মারা যান। বর্তমানে ৭ ফুট ৫ ইঞ্চি উচ্চতার লম্বা মানুষ হিসেবে টাঙ্গাইলের গোপালপুর চরপাড়া গ্রামের দিনমজুর আছর আলী (৫৬) রয়েছেন। এক সময় তিনি গোপালপুর বাজারে কুলির কাজ করতেন। বর্তমানে উচ্চতার কারণে কোন কাজ করতে না পারায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। উচ্চতার কারণে পা কিছুটা বেঁকে যাওয়ায় লাঠির উপর ভর করে কুঁজো হয়ে হাঁটতে হয়। এতে তার বর্তমান উচ্চতা ৭ ফুট এর মতো।
আছর আলী বলেন, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক জানিয়েছেন, মাথায় ব্রেণ টিউমার হয়েছে, এছাড়াও কাঁধ, পিঠ, মাজা ও পায়ের হাড় বেড়েছে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে বিয়েও করতে পারেননি তিনি। তার পায়ের মাপের জুতা কখনো বাজারে কিনতে পারেননি। জুতাসহ জামা-কাপড় বেশি দামে বানিয়ে পড়তে হয়। একমাত্র বৃদ্ধা মা তার সেবাযত্ম করেন। দুইটি গরু ছাড়া আর কোন সম্বল নেই তার। সরকারিভাবে নিয়মিত প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন। এ অবস্থায় আছর আলীর চিকিৎসা করার জন্য অনেক টাকা প্রয়োজন।
আছর আলীর বৃদ্ধা মা ওবিরন বেওয়া বলেন, আমার ছেলে সুস্থ অবস্থায় জন্ম নিয়েছিলো। যুবক অবস্থায় আছর আলী অনেক শক্তিশালী ছিলো। সে ২ মণ ওজনের ধানের বস্তা একাই কাঁধে তুলে নিতে পারতো। ওর জন্য আলাদা কোন খাবার দিতে হতো না। আমাদের সাথে স্বাভাবিক খাবার খেয়ে বড় হয়েছে। কিছুদিন একটা দোকান পরিচালনা করলেও বর্তমানে কিছুই করতে পারে না। এতে ওর চিকিৎসার খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
অপরদিকে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার ভোলারপাড়া গ্রামের ১৮ বছর বয়সী সিয়াম হোসেনের উচ্চতা ৬ ফুট ৮ ইঞ্চি। সদ্য এসএসসি পাশ করা সিয়ামের উচ্চতা বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। শারীরিক কোনো অসুস্থতা নেই সিয়ামের। সে ভলিবল ও ফুটবল খেলায় ব্যাপক পারদর্শী। সুযোগ পেলে সৈনিক হবার স্বপ্ন দেখেন সিয়াম। পায়ের মাপের জুতা বাজারে পাওয়া যায় না বলে সিয়াম জানিয়েছেন।
এদিকে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার খাটো মানুষ হিসাবে পরিচিত ভূঞারপাড়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক (৪০)। সে পেশায় ফল ব্যবসায়ী। এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জনক তিনি। তিনিও সরকারিভাবে নিয়মিত প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন। আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মানুষজন আমাকে দেখলে তাকিয়ে থাকে। হাসাহাসি করে এতে আমার অনেক বিরক্ত লাগে।
এ বিষয়ে গোপালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলিম আল রাজী বলেন, সাধারনত হরমোন ও জেনেটিক কারণে মানুষের উচ্চতা ও খর্বতা হয়ে থাকে। এদের নিয়মিত চিকিৎসকের পরার্মশ মতো চলতে হবে।