সখীপুর-বাসাইল আসনে ভোটের লড়াই জমে উঠেছে চাচা-ভাতিজার

টাঙ্গাইল টাঙ্গাইল স্পেশাল বাসাইল লিড নিউজ সখিপুর

স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক পেয়েছেন এই আসনে চার বারের সংসদ সদস্য প্রয়াত কৃষিবিদ শওকত মোমেন শাহজাহানের ছেলে অনুপম শাজাহান জয়। সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফুফু বলে ডাকেন। গামছা প্রতীকে নির্বাচন করছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম। তিনি শেখ হাসিনাকে বোন হিসেবে সম্মোধন করেন। সেই হিসেবে ভোটের মাঠে সম্পর্কে কাদের সিদ্দিকী ও অনুপম শাজাহান জয় দু’জন চাচা-ভাতিজা। দু’জনেই এই আসনের সখীপুর-বাসাইল দুটি উপজেলার হাট-বাজার ও বাড়িঘর চষে বেড়াচ্ছেন। পথসভা, উঠান বৈঠক অব্যাহত রেখেছেন দু’জনের পরিবার-পরিজন ও নেতাকর্মীরা।
নানা কায়দা, কৌশলে ভোট চাচ্ছেন তারা। কাদের সিদ্দিকীর পক্ষে তার দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও মাঠে রয়েছেন কাদের সিদ্দিকীর স্ত্রী নাসরিন কাদের সিদ্দিকী ও তার মেয়ে ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ব্যারিস্টার কুড়ি সিদ্দিকী, সখীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র সানোয়ার হোসেন সজীবসহ অন্যান্য নেতারা। এ আসনে নৌকার মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে (গামছা) প্রতীক। কারণ এই আসনের বিভিন্ন স্থান এবং উভয় প্রার্থীর গণসংযোগ পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী (নৌকা) প্রতিকের প্রার্থী অনুপম শাজাহান জয় দু’জনেরই জনসমর্থন প্রায় কাছাকাছি। তাদের মধ্যে নির্বাচনে কে জিতবেন তা নির্দিষ্ট করে বলা না গেলেও এ আসনে নৌকা যে এতো সহজেই জিতে যেতে পারবে না একথা বলাই যায়। তবে (নৌকা) প্রতীকের প্রার্থী অনুপম শাজাহান জয় গণসংযোগে বরাবরই দাবি করছেন এ নির্বাচনে তিনিই জনগণের আস্থার জায়গা। ভোটাররা তাকেই বেছে নেবেন।
বিভিন্ন পথসভায় নৌকার পক্ষে ভোট চাইতে গিয়ে অনুপম শাজাহান জয়ের স্ত্রী উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক তামান্না মহসিন মৌ ভোটারদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা প্রতিপক্ষের মিষ্টি কথায় বিভ্রান্ত হবেন না। অনুপম শাহজাহান জয় গণভবনে গিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এক লাখ ভোটের ব্যবধানে জিতে আসবা। সুতরাং আপনারা ভোট নৌকা প্রতীকেই দিবেন। আমার শ্বশুর শওকত মোমেন শাহজাহানের সময় বাসাইল-সখীপুরে শুধু উন্নয়নই হয়েছে। তার ছেলে হলো অনুপম শাজাহান জয়। সে এ আসনের বিভিন্ন মসজিদ-মন্দির ও স্কুল-কলেজে ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। আর প্রতিপক্ষকে (গামছা) দেখবেন-তারা কোনো উন্নয়নের কথা বলতে পারে না। কাদের সিদ্দিকীও তো দু’বার এমপি হয়েছিলেন। তিনি আপনাদের জন্য কী করেছেন? তেমন কোনো কাজই করেননি। তিনি (কাদের সিদ্দিকী) হলেন বটগাছ। বটগাছ কোনো ফল দেয় না। আর অনুপম শাজাহান জয় হলো দ্রুত ফল দেয় এমন চারাগাছ। আপনারা অনুপম শাজাহান জয়কে ভোট দিলে মূলত নিজেদের উন্নয়নকে বেছে নিবেন।
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের (গামছা) প্রতিকের সমর্থকরা বলেন, সখীপুর-বাসাইল আসনে নৌকার পক্ষে জনসমাগম দেখা গেলেও তাদের জনসমর্থন কম। তাছাড়া গত ১৭ জুলাই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও সখীপুরে চার ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীরা পরাজিত হন। ধারণা করা হচ্ছে, বিএনপি নির্বাচনে না আসায় এ আসনে ভোটারদের ব্যাপক সমর্থন পাবেন (গামছা) প্রতিকের প্রার্থী বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। তিনি বিএনপিসহ অন্য দলের সমর্থকদের ভোট পাওয়ার পাশাপাশি খোদ আওয়ামী লীগেরও অনেক ভোট পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। (নৌকা) প্রতিকের সমর্থকরা জানান, এ আসনে কোন জোট হয়নি। বিপুল ভোটে নৌকা বিজয়ী হবে। এদিকে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সমর্থকরা বলেন, এবার সাধারণ ভোটাররা মনে করে বিগত ২০০৮ সালের পরে কাদের সিদ্দিকী নির্বাচনে আসতে পারেনি। শেষ বয়সে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী নির্বাচনে এসেছেন। তাই এবার ভোটাররা গামছা প্রতীকেই ভোট দিবেন। শেষ পর্যন্ত বিজয়ের হাঁসি কে হাসবেন চাচা না ভাতিজা। তা আগামী (৭ জানুয়ারি) ভোটের মধ্য দিয়ে বোঝা যাবে।

 

 

 

১৫৭ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *