স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে যৌতুক দিতে অস্বীকার করায় তিন মাসের অন্তস্বত্ত্বা এক গৃহবধুসহ দুই গৃহবধূকে স্বামীসহ পরিবারের লোকজন বেধড়ক পিটিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাঁদেরকে স্বামীর বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের কোদালিয়া এবং বানাইল ইউনিয়নের নামদারপুর গ্রামে। এ ঘটনায় মির্জাপুর থানায় পৃথক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
মির্জাপুর থানায় গৃহবধূ আখি আক্তার নামে বাবা উপজেলার তরফপুর ইউনিয়নের টাকিয়া কদমা গ্রামের জুমুর আলীর করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, প্রায় চারমাস আগে কোদালিয়া গ্রামের বাদশা মিয়ার সঙ্গে তাঁর মেয়ের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তিনি যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকেন। এ নিয়ে মাঝে মধ্যেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া লাগতো। এরই মধ্যে আখির গর্ভে সন্তান আসে। গত ২৭ ডিসেম্বর রাত ১১ টার দিকে বাদশা মিয়া তাঁর স্ত্রী আখিকে পূর্বের দাবিকৃত যৌতুকের ৩ লাখ টাকা তাঁর বাবার বাড়ি থেকে আনতে চাপ দেন। এতে আখি অস্বীকৃতি জানালে তাঁকে তাঁর স্বামী বাদশা বেধড়ক পেটানো শুরু করেন। এক পর্যায়ে বাদশার ভাই মুসা ও আবু বকরও তাঁকে গালমন্দ শুরু করেন। এ সময় আখির আর্ত চিৎকারে প্রতিবেশিরা ছুটে এসে তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে মির্জাপুরের কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে আটদিন চিৎিসার পর গত ৪ জানুয়ারি আখি হাসপাতাল থেকে ছাড় পান। পরে এ ঘটনায় জুমুর আলী মির্জাপুর থানায় অভিযোগ করেন।
আখি আক্তার জানান, তাঁর স্বামী তলপেটসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড় পেলেও তাঁর শরীরের অবস্থা খুবই খারাপ। তাঁর গর্ভে থাকা বাচ্চা সুস্থতা পাবে কিনা তা নিয়ে চিন্তিত।
এদিকে উপজেলার বানাইল ইউনিয়নের নামদারপুর গ্রামের লতিফ খানের ছেলে রেজাউল খানের সঙ্গে গত ৯ বছর আগে একই ইউনিয়নের কুড়ালিয়াপাড়া গ্রামের ছালাম মিয়ার মেয়ে শাহিদা বেগমের বিয়ে হয়। তাদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। রেজাউল খান নেশায় আশক্ত হয়ে পড়ে। নেশার টাকা যোগার করতে না পেরে বিয়ের ৯ বছর পর স্ত্রীকে যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে। শাহিদা বেগম স্বামীর চাওয়া যৌতুকের ৫ লাখ টাকা না দেয়ায় রেজাউল খান তার সহযোগী মাসুদ, ইব্রাহীম, নিলুফা বেগম, নুরজাহান বেগমকে সাথে নিয়ে গত ৭ জানুয়ারি শাহিদাকে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করে। পরে তাকে জামুর্কীস্থ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের ভর্তি করা হয়। শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) সেখান থেকে ছাড় পাওয়ার পর স্বামী রেজাউল খানসহ পাঁচজনকে আসামী করে মির্জাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।