সাদ্দাম ইমন ॥
টাঙ্গাইলে তীব্র শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আবহাওয়া দপ্তর থেকে জানা গেছে, শনিবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। গত কয়েক দিনে শীতের দাপটে তাপমাত্রা কমতে কমতে শনিবার (১৪ জানুয়ারি) এই তাপমাত্রায় এসেছে। এতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে শীতের তীব্রতা। আর এতে জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। ঘনকুয়াশায় ছেয়ে আছে টাঙ্গাইলের বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়ক। এতে দিনের বেলাতেও হেড লাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করতে হচ্ছে।
মানুষ শীত নিবারনের জন্য আগুনের কুন্ডুলি জ্বালিয়ে দিয়েছে রাস্তায় রাস্তায়। সবচেয়ে বেশি শীতে কাহিল হয়েছে যমুনা, ধলেশ্বরী নদী পরিবেষ্টিত এলাকায় সকাল গড়িয়ে রাতে কনকনে ঠান্ডা বিরাজ করছে। কুয়াশায় ছেয়ে আছে কয়েকদিন যাবৎ সকাল থেকে গড়িয়ে রাত অবধি। এদিকে শীতের আগমনের সাথে সাথে কষ্টে দিন কাটছে ফুটপাতে নিম্ন শ্রেনির আয়ের মানুষ ও চরাঞ্চলের মানুষের। শীত বস্ত্রের অভাবে অনেকেই আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন। নিম্নআয়ের মানুষেরা পড়েছে সবচেয়ে বেশি বিপাকে। শীতের কারণে কাজেও যেতে পারছে না এবং সরকারিভাবেও তেমন কোন সাহায্য না থাকায় কষ্টে দিনযাপন করছেন পরিবারগুলো। তারা পুরনো গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে ভীর করছেন। শামীম হোসেন জানান, গত কয়েকদিন ধরে নদী ও আশেপাশের এলাকায় কনকনে ঠান্ডায় কাতর হয়ে যাচ্ছে দরিদ্র মানুষেরা। আর কুয়াশায় ঢেকে থাকে গোটা এলাকা। গত তিনদিন ধরে সূর্যের কোন দেখা নেই।
আব্দুর রাজ্জাক এবং নুরল ইসলাম শাহ বলেন, প্রচন্ড শীতে জমিতে কৃষিকাজে মেহনতী মানুষেরা যেতে না পারায় কষ্টকর পরিস্থিতিতে পড়েছে। কৃষি শ্রমিক হাসান আলী বলেন, তীব্র শীতে কাজ কমে গেছে, আর যেটুকু মিলছে তাতে মজুরি কম, তাই শীতবস্ত্র কেনার টাকাও নেই, পরিবারের শিশু সন্তান নিয়ে এবার বিপাকে পড়েছি। শীতের কারণে আগের তুলনায় সন্ধ্যার পর শহরে লোকজন কমে যাচ্ছে। ফলে জেলা সদরের পৌর এলাকার ব্যবসা বানিজ্যে থমকে যাওয়া ও মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। বাজারের ব্যবসায়ী হামিদুল ইসলাম বলেন, লোকসমাগম কমে যাওয়ার কারণে বেচা বিক্রি কমেছে। এদিকে শীতের তীব্রতায় বয়স্ক ও শিশুরা কাহিল হয়ে গেছে।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলেন, শীতজনিত কারনে বর্তমানে ৫০ জন শিশু ভর্তি রয়েছে। তাদের চিকিৎসা সেবা যথাযথভাবে দেয়া হচ্ছে। প্রকৌশলী সফিকুল আলম বলেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ চলমান এবং নির্বাচনকালীন বিরোধী দলের কর্মসূচীর কারণে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েকগুণ। তার উপরে এই তীব্র শীতে শহরে লোকসমাগম কমে গেছে।
এদিকে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে চল্লিশ হাজার কম্বল গোটা জেলায় শীতার্তদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। আরও কম্বলের জন্য মন্ত্রনালয়ে আবেদন পাঠানো হয়েছে, এলে বিতরণ করা হবে।