স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইলে সদর উপজেলার ঘারিন্দা ইউনিয়নের পয়লা গ্রামে নামযজ্ঞ অনুষ্ঠানে হামলার ঘটনা ঘটেছে। নামযজ্ঞ অনুষ্ঠানে পায়েশ খাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী বাহিনী এই হামলা ঘটিয়েছে বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী। এই ঘটনায় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলো- পার্শ্ববর্তী দরুণ গ্রামের আশরাফ এবং আলামিন। আশরাফ (১৮) দরুন গ্রামের আলিম উদ্দিনের ছেলে এবং আলামিন একই গ্রামের এবাদত আলীর ছেলে। শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেল চারটার দিকে এই ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
নামযজ্ঞ অনুষ্ঠান কমিটি ও স্থানীয়রা জানান, পাশের দরুন গ্রামের চিহ্নিত কিছু মাদকসেবী ও সন্ত্রাসী অনুষ্ঠানে এসে পায়েশ খেতে চাইলে তাদের পায়েশ দেয়া হয়। তাদের চাহিদা মতো পায়েশ দেয়াও হয়। এক পর্যায়ে তারা জোরপূর্বক খাবার ঘরে প্রবেশ করে। সে সময় তাদের বাঁধা দেয়া হলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে চলে যাওয়ার সময় পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক তাদের অন্যান্য সঙ্গীদের ঘটনাস্থলে আসতে বলে এবং তারা বের হয়ে যায়। প্রায় ৪০ মিনিট পর অন্তত ৫০/৬০ জনের একটি স্বশস্ত্র দল দরুন উত্তরপাড়া সনাতন ধর্মীয় সংখ্যালঘু পরিবারের উপর হামলা চালায়। এ সময় তাদের হামলায় অন্তত ৮-১০ জন আহত হয়। এদের মধ্যে দুইজনের আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
চন্দন রাজবংশী জানান, ওরা নেশাগ্রস্ত ছিলো, আমি ওদের ৪/৫ বার পায়েশ দিয়েছি। তারপরও এই ঘটনা ঘটিয়েছে। এতে মনে হয় এটা পূর্বপরিকল্পিত। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সুমন মিয়া বলেন, ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত এবং সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ স্থানীয় এক নেতার নির্দেশে এই হামলা হয়েছে। এ ঘটনার শুনে ওই রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন। তিনি এই ঘটনার তীব্র নিন্দ্রা জ্ঞাপন করেন। এসময় তিনি ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
এ সময় তার সাথে ছিলেন টাঙ্গাইল সদর উপেজলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহজাহান আনসারী, টাঙ্গাইল সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন খান তোফা, ঘারিন্দা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তোফায়েল আহম্মেদ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য আমিরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য একরামুল হক কিসলু, ঘারিন্দা ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হারুন অর রশিদ প্রমুখ।
অন্যদিকে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সোহেল রানার নেতৃত্বে জেলা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তিনি জানান, ইতিমধ্যে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্যদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার জন্য অভিযান শুরু হয়েছে।
এছাড়াও টাঙ্গাইল সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান বিন মুহাম্মদ আলী, টাঙ্গাইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অতনু বড়ুয়া ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ভূক্তভোগীদের অভিযোগ শোনেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন। এই ঘটনায় নামযজ্ঞ অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বাসুদেব সরকার বাদি হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।