হাসান সিকদার ॥
দুয়ারে কড়া নাড়ছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলায় পর্যায়ক্রমে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অতি সম্প্রতি শেষ হওয়া দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইলের ৮টি আসনের মধ্যে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন ২ জন। টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনে এবং টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনের এই দুই প্রার্থী সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়ে জয়লাভ করতে পারেনি। নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন চার ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোট হবে আগামী (৪ মে), দ্বিতীয় ধাপের ভোট হবে আগামী (১১ মে), তৃতীয় ধাপের ভোট হবে আগামী (১৮ মে) এবং চতুর্থ ধাপের ভোট হবে আগামী (২৫ মে)।
এদিকে সংসদ নির্বাচনে কয়েক উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থীরা প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নৌকার বিপক্ষে কাজ করেছেন। সব মিলিয়ে আওয়ামী লীগের ওইসব নেতারা এখন পড়েছেন বিপাকে। কারণ দলীয় প্রতীকে হবে না এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। আর বড় মাথাব্যথা সংসদ সদস্যরা তো আছেনই। এছাড়া দলের বিপক্ষে কাজ করায় মাঠ পর্যায়ে তারা তোপের মুখেও রয়েছেন। কারণ ওইসব প্রার্থীরা গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করে চেয়ারম্যান হয়েছেন। অথচ সংসদ নির্বাচনে তারাই কিনা নৌকার বিপক্ষে কাজ করেছেন প্রকাশ্যে। এছাড়া দ্বাদশ সংসদে ভোটের মাঠে জয়লাভ করা সংসদ সদস্যদের বড় টেনশনে রেখেছিলেন উপজেলা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করা চেয়ারম্যানরা। ফলে সবকিছু মিলিয়ে এবার টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলায় তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
চেয়ারম্যান প্রার্থীদের কর্মীসমর্থকরা বলছেন, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের শোধ-প্রতিশোধের রেশ উপজেলা নির্বাচনের মাঠে থাকবে।
টাঙ্গাইল জেলার ১২টি উপজেলা পরিষদের মধ্যে ১০টি উপজেলায় চেয়ারম্যান এবং দুই উপজেলায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দিয়ে চলছে। জানা গেছে, এরই মধ্যে সকল উপজেলাগুলোতে নির্বাচনী মাঠে নেমে পড়েছেন প্রার্থীরা। যেহেতু তারা জানেন যে, এবার দলীয় মনোনয়ন থাকছে না। সে কারনেই প্রার্থীরা বিভিন্ন কৌশল নিয়ে মাঠে নেমেছেন। প্রথমত, তারা স্থানীয় এমপির আর্শিবাদ পেতে জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। দ্বিতীয়ত, সরকার দলীয় জেলা ও উপজেলা কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক এবং প্রভাবশালী নেতাদের সমর্থন পেতে চেষ্টা করছেন। তৃতীয়ত, সংশ্লিষ্ট পৌরসভার মেয়র, ইউপি চেয়ারম্যানদের সহযোগিতা নিতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।
মূলত এই তিন হিসাবকে মাথায় নিয়েই উপজেলা পরিষদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা ভোটের মাঠে নেমে পড়েছেন। এই তিন ক্যাটাগরিতে প্রার্থীরা নির্বাচনী মাঠ গরম করে তুলেছেন। এদিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরাও উপজেলাগুলোতে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের জন্য মাঠে নেমেছেন। এছাড়া বিএনপিসহ অন্যান্য দলগুলো দলীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকা না থাকা বহু প্রার্থীরাও নির্বাচনী মাঠে নেমে পড়েছেন। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, যদি সংসদ নির্বাচনের মতো উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে নির্বাচনে অংশ নিব। তারপরও দলীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকব শেষ পর্যন্ত। সরকার পতনের আন্দোলনের পাশাপাশি খালি মাঠে আওয়ামী লীগকে ছেড়ে দেয়া যাবে না।