টাঙ্গাইল জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে পাঁচজন আহত

টাঙ্গাইল টাঙ্গাইল সদর রাজনীতি লিড নিউজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥
আন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবসে বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পন করতে যাওয়ার সময় টাঙ্গাইল জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন। বিগত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাসিমা বাসেতের নেতৃত্বে একটি পক্ষ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মামুন অর রশিদের (নৌকা) প্রতীকের পক্ষে নির্বাচন করেন। সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌসী আক্তার রুনু’র নেতৃত্বে অপরপক্ষ দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া ছানোয়ার হোসেনের (ঈগল) প্রতীকের পক্ষে অবস্থান নেন। এ নিয়ে টাঙ্গাইল জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ “নৌকা লীগ” এবং “ঈগল লীগে” বিভক্ত হয়ে পড়ে।
জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানান, আন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবসে বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ী জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাসিমা বাসেত তার অনুসারীদের নিয়ে সকাল আটটার দিকে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অবস্থান নেন। এ সময় জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌসী আক্তার রুনু’র নেতৃত্বে অপরপক্ষও জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের ভেতরের কক্ষে অবস্থান নেন।
জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পক্ষের নেতারা সাধারণ সম্পাদক পক্ষের লোকদের সাথে নিয়ে শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক দিতে যাবেন না বলে জানিয়ে দেয়। তারা সাধারণ সম্পাদককে বলেন, যারা (নৌকা) দলীয় প্রতীকের বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছেন, তাদের কোন কর্মসূচীতে সাথে নেবেন না। এ নিয়ে সকাল সাড়ে আটটার দিকে তর্কাতর্কি শুরু হয়। এক পর্যায়ে উভয়পক্ষ হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় চুল টানাটানি ও কিল-ঘুষির ঘটনাও ঘটে। দুই পক্ষের এই সংর্ঘষে অন্তত ৫ জন নারী নেত্রী আহত হয়েছেন। এ সময় শহীদ মিনারে দেয়ার জন্য ফুলের তোড়া ছিড়ে ফেলেন।
টাঙ্গাইল জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌসী আক্তার অভিযোগ করে বলেন, সভাপতি পক্ষের লোকজন প্রথমে তার ওপর হামলা করে। তারা তাকে (ফেরদৌসী) চুল টেনে ধরে ফেলে দেন এবং কিল ও ঘুষি মারেন। এ দৃশ্য ফেরদৌসীর স্বামী মোশারফ হোসেন তার মুঠোফোনের ক্যামেরায় ভিডিও ধারণ করার সময় তার ওপরও হামলা হয়। এ সময় মোশারফ হোসেনের পরনের পাঞ্জাবী ছিড়ে ফেলা হয় এবং তার মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলা হয়।
উভয়পক্ষের সংঘর্ষে ফেরদৌসী আক্তার রুনু ও তার স্বামী মোশারফ হোসেন ছাড়াও তাদের পক্ষের জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন কিবরিয়া এবং শহর মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লাভলী তালুকদার হন।
অপরদিকে এ ঘটনায় টাঙ্গাইল জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পক্ষের নেতা জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমেনা বেগম আহত হন। এ সময় তার গলার সোনার চেইন ছিনতাই হয় বলে জানিয়েছেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাসিমা বাসেত।
ফেরদৌসী আক্তার রুনু আরও জানান, এ ঘটনা তিনি কেন্দ্রীয় এবং জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের জানিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, পরিকল্পিতভাবে তাকে এবং তার স্বামী ও সমর্থকদের ওপর হামলা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাসিমা বাসেত বলেন, ফেরদৌসী আক্তার রুনু আওয়ামী লীগের সাথে বেঈমানী করে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছানোয়ার হোসেনের (ঈগল) প্রতীকের নির্বাচন করেছেন। তাই তাকে আমরা আমাদের কর্মসূচীতে অংশ নিতে নিষেধ করেছি। সে বিশৃঙ্খলা তৈরির জন্য এসেছিলো। তার স্বামী মহিলা আওয়ামী লীগের কর্মসূচীতে সবসময় আসেন। একজন পুরুষ হয়ে কেন সে মহিলা আওয়ামী লীগের কর্মসূচীতে আসবেন। এটা দলের কেউ পছন্দ করেন না।

 

 

 

১৮৭ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *