
স্টাফ রিপোর্টার ॥
টানা দুই বছর চেষ্টার পর একই জমিকে চার ফসলি জমিতে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছেন টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার কৃষি উদ্যোক্তা শফিকুল ইসলাম। তিনি তার জমিতে দুইবার বোরো, একবার আমন ও একবার সরিষা আবাদ করে এলাকাবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হয়েছেন। তার এই সফলতার গল্প কৃষি বিভাগ অন্য কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।
জানা যায়, টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার গোলাবাড়ী ইউনিয়নের কুড়িবাড়ী গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা শফিকুল ইসলাম। তিনি দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার মানসিকতা থেকে একই জমির বহুমাত্রিক ব্যবহারে উদ্যোগি হন। তিনি হাইব্রীড হীরা ১৯ জাতের বোরো ধান আবাদের মাধ্যমে এই কার্যক্রম শুরু করেন। তার এই উদ্যোগ সফল করতে কৃষি বিভাগের পরামর্শে গোল্ডেন-১ ও পাইজাম ধান এবং সরিষা আবাদ করেন। প্রতিটি ধাপেই তিনি ব্যাপকভাবে সফলতা পেয়েছেন। বর্তমানে তার কৃষি জমিতে সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে।
কৃষি উদ্যোক্তা শফিকুল ইসলাম জানান, তিনি একজন স্বাস্থ্য কর্মী হয়েও কৃষিতে দেশ স্বয়ংসম্পুর্ণ করার সরকারের উদ্যোগকে মনে ধারণ করে বোরো দুইবার, একবার আমন ও সরিষা আবাদ করেছেন। বোরো ধান প্রতি বিঘাতে ৩৫ মন ধান আবাদে সক্ষম হয়েছেন তিনি। আমন ধান হয়েছে ১০ মন। সরিষাও বিঘাতে সাত মনের ওপরে গত বছর পেয়েছেন। এবার ফলন আরো বেশি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
স্থানীয় অনেক কৃষক শফিকুল ইসলামের এই পদ্ধতিতে ফসল আবাদের সফলতায় উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। তারাও একই জমিতে চারবার ফসল উৎপাদন করতে আবাদ শুরু করেছেন। এসব কৃষকরা বলেন, একটু চেষ্টায় আমরাও যদি এই সফলতা পাই তাহলে আমরাও লাভবান হবো। দেশও খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে। শফিকুল ইসলামের তৈরি করা ফসল উৎপাদনের পদ্ধতি ব্যবহার এবং পরিচর্যা অনুসরণ করলে দেশের প্রতিটি কৃষক উপকৃত হবেন। পাশাপাশী দেশের কৃষিখাত আরো সম্প্রসারিত হবে।
এ ব্যাপারে মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন রাসেল বলেন, মধুপুরে চলতি বছর আউশ ও আমন ধান আবাদের মধ্যবর্তী সময়ে দুই হাজার ৫৪০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। অতীতে যে জমি সম্পূর্ণ অনাবাদি পরে থাকতো। মধুপুরে ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধি করণের কাজ বিভিন্ন প্রকেল্পের মাধ্যমে করা হচ্ছে। কৃষকদেরকে সার, বীজসহ বিভিন্ন প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। যার ফলে কৃষকরা জমির বহুমাত্রিক ব্যবহারে উৎসাহিত হচ্ছেন।