হাঁস-মুরগি পালনে স্বপ্নের জাল বুনছেন নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী

টাঙ্গাইল মধুপুর

হাবিবুর রহমান, মধুপুর ॥
টাঙ্গাইলের মধুপুরে সমতল এলাকার ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর মানুষেরা আয়বর্ধক কর্মসূচিতে সরকারি ভাবে প্রশিক্ষণসহ জীবন মান উন্নয়নে হাঁস মুরগী, ভেড়া, গরু, ছাগল পালন করে স্বপ্নের জাল বুনছেন। লাল মাটির মধুপুর উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নে চলছে এ কার্যক্রম। ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর গারো কোচ বর্মণ নারী পুরুষেরা প্রাণী সম্পদ বিভাগের প্রশিক্ষণ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রাণী সম্পদ বিভাগ বলছে, বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ নিয়ে মুরগির ঘরসহ মুরগী গরু ছাগল ভেড়া পেয়ে তারা এগিয়ে যাবে। এ কর্মসূচিতে গরু ছাগল ভেড়া ও হাঁস মুরগী পেয়ে খুশি তারা । প্রাণী সম্পদ বিভাগ বলছে, সমতল এলাকার ক্ষুদ্র্র জনগোষ্ঠির জীবন মান উন্নয়নে কাজ করছে সরকার।
সমতল এলাকার লাল মাটিতে গারো কোচ বর্মণদের বসবাস। এ এলাকার ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর গারো কোচ বর্মণদের জীবন মান উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক ভাবে এগিয়ে নিতে সরকারের প্রকল্পের মাধ্যমে প্রাণী সম্পদ বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে । প্রশিক্ষণের পাশাপাশি হাঁস মুরগীর ঘর ও হাঁস মুরগী গরু, ছাগল, ভেড়া দিচ্ছে বিনা মূল্যে। প্রায় ৪৯৯ জন প্রান্তিক গারো কোচ নারী পুরুষ মুরগী পেয়ে স্বপ্নের জাল বুনছেন তারা। এগিয়ে যাওয়ার নিরন্তর প্রচেষ্টা দেখা দিয়েছে তাদের মাঝে। নিজেদের বসত বাড়ির আঙিনায় সরকারের সহযোগিতায় সংসারের নিত্য দিনের কাজ শেষে অবসর সময়ে হাঁস মুরগী পালন করে পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি আর্থিক ভাবে লাভবান হবে এমটাই ভাবনা তাদের। তবে সংশ্লিষ্ট বিভাগের তদারকিসহ বিনামূল্যে বিতরণকৃত প্রাণীদের চিকিৎসার দাবি স্থানীয়দের।
হতদরিদ্র সমতল এলাকার গারো কোচ সুবিধা ভোগীরা সরকারের এমন সুবিধা পেয়ে তারা খুশি। এতে তাদের পুষ্টির যোগানের পাশাপাশি সন্তানদের পড়াশোনা ও সংসারের অভাব ঘোচাতে সহায়ক হবে এমনটাই জানালেন সুবিধাভোগীরা। এ প্রকল্পের মাধ্যমে সমতল এলাকার গারো কোচরা এগিয়ে যাবে। হাঁস মুরগী পালন করে নিজে পায়ে দাঁড়াতে পারবে। এতে তারা লাভবান হতে পারবে এমনটাই জানালেন এ আদিবাসী নেতা জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সাবেক সভাপতি অজয় এ মৃ।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার পাল জানান, সম্পদ অধিদপ্তরের সমতল এলাকার নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের সমন্বিত প্রকল্পে গরু ছাগল ভেড়া ও ৪৯৯ জন প্রান্তিক নারী পুরুষকে প্রশিক্ষণসহ মুরগী পালনের উপকরণসহ মুরগী বিতরণ করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) দুপুরে ৬৬৫ জনের মধ্যে ২৫০ জন হাঁস সুবিধা ভোগীদের মাঝে জনপ্রতি ২০ টি করে হাঁস বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: জোবায়র হোসন, উপজেলা চেয়ারম্যান ছরোয়ার আলম খান আবু, সহকারী কমিশনার ভূমি জাকির হোসাইন, ইউপি চেয়ারম্যান এডভোকেট ইয়াকুব আলী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান যষ্ঠিনা নকরেক, প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার পাল, মধুপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হাবিবুর রহমান, ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম প্রমুখ।
এ প্রকল্পটি সফল ভাবে বাস্তবায়ন হলে এগিয়ে যাবে সমতল এলাকার নৃতাত্তি¦ক জনগোষ্ঠীর গারো কোচ নারী পুরুষেরা। সংসারে যোগাবে অভাব, হবে পুষ্টির যোগান। পরিবারের ছোট খাটো অর্থের যোগানও হবে হাঁস মুরগি পালন থেকে। প্রকল্পটির সুবিধা ভোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে, বাড়বে অর্থনৈতিক সচ্ছলতা এমনটাই ধারণা সংশ্লিষ্টদের।

 

৩০৪ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *