স্টাফ রিপোর্টার, মির্জাপুর ॥
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে প্রকৌশলী ভাতিজা কাজী কামরুজ্জামান পলাশ তার বড় চাচা প্রাক্তন স্বাস্থ্য পরিদর্শক কাজী আলমকে শুকনা মরিচের গুড়া পানিতে মিশিয়ে শরীরে ছিটিয়ে এবং লাঠি দিয়ে পিটিয়ে তাকে খুন করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রবিবার (৩১ মার্চ) রাতে মির্জাপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের কুরনী গ্রামের কাজীপাড়ায় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। কাজী কামরুজ্জামান পলাশ ঢাকার আগারগাঁও এলজিইডিতে কর্মরত আছেন বলে তার মা কহিনুর বেগম জানিয়েছেন। নিহত কাজী আলম কুরনী গ্রামের মৃত কাজী মোকছেদের ছেলে ও মির্জাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রাক্তন স্বাস্থ্য পরিদর্শক।
পরিবারিক সূত্র ও এলাকাবাসী জানান, বাড়ির সীমানা নিয়ে দুই ভাই কাজী আলম ও কাজী রফিকুল ইসলাম বাবুলের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিলো। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহ যাবত ঝগড়া চলছিলো। বিষয়টি কাজী রফিকুল ইসলাম বাবুলের ছেলে প্রকৌশলী কাজী কামরুজ্জামান পলাশ জানতে পেরে রবিবার (৩১ মার্চ) বিকেলে বাড়ি আসেন। সন্ধ্যায় ধারালো অস্ত্র নিয়ে চাচা কাজী আলমের পরিবারকে গালিগালাজ ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে।
বিষয়টি জানতে পেরে ইফতারের আগ মুহুর্তে আশপাশের বাড়ির লোকজন ওই বাড়িতে গিয়ে উভয় পক্ষকে শান্ত করেন। সন্ধ্যার পর পলাশ কাজী আলমের ঘরের জানালা দিয়ে শুকনা মরিচের গুড়া মেশানো পানি ঘরের ভেতর ছুরে মারে। রাত সাড়ে আটটার দিকে কাজী আলম এশার নামাজ শেষে নাতি মারুফকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি এসে কবুতরের ঘর আটকাচ্ছিলেন। এ সময় পলাশ পেছন থেকে তাকে শুকনা মরিচের গুড়া মেশানো পানি ছুড়ে মারে। কাজী আলম মরিচের যন্ত্রনায় ছটপট করতে থাকে। পরে পলাশ তাকে লাঠি দিয়ে এলোপাতারি পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। দাদা-নাতির চিৎকারে বাড়ির লোকজন ঘর থেকে বেরিয়ে শরীর ধুয়ে দেন এবং কুমুদিনী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। ভোর চারটার দিকে তার মৃত্যু হয়।
নাতী মারুফ জানায়, দাদার সাথে রাতে নামাজ শেষে বাড়ি আসি। দাদা কবুতরের ঘর আটকাতে গেলে পলাশ চাচা মরিচের গুড়া মেশানো পানি ছিটিয়ে লাঠি দিয়ে মেরেছে।
কাজী কামরুজ্জামান পলাশের মা কহিনুর বেগম জানান, বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধ চলছিলো। এ নিয়ে কাজী আলমের পরিবারের লোকজন আমাকে মারপিটও করে। এ খবর পেয়ে ছেলে রবিবার (৩১ মার্চ) বিকেলে বাড়ি আসে। কোথা থেকে ছেলে মরিচের গুড়া সংগ্রহ করেছে তা আমার জানা নেই। আমার ছেলে মরিচের গুড়া মেশানো পানি শরীরে দিয়ে চাচাকে পিটিয়েছে সত্য। আমার ছেলেকে বাঁচান।
এ বিষয়ে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কেউ পুলিশকে অবহিত করেননি।