স্টাফ রিপোর্টার, মির্জাপুর ॥
তীব্র দাবদাহের মধ্যে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। প্রচণ্ড গরমে হাঁপিয়ে ওঠা মানুষ এখন বিদ্যুতের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দিনে সূর্যের তেজ আর রাতে ভাপসা গরমে অসহনীয় অবস্থায় সময় পার করছে মানুষ। বিদ্যু বিভ্রাটে খেটে খাওয়া মানুষ বৈদ্যুতিক পাখার বাতাস থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে।
ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। শিল্প-কারখানায় উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে। প্রচণ্ড দাবদাহ আর দিনের বেশি সময় বিদ্যুৎ না থাকায় বেচাবিক্রি হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ায় উপজেলাজুড়ে বারবার লোডশেডিং চলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে মির্জাপুর ও গোড়াই পল্লী বিদ্যুৎ অফিস।
মির্জাপুর ও গোড়াই জোনাল অফিসের অধীন এক লাখ ৬০ হাজার বিদ্যুতের গ্রাহক রয়েছে। এছাড়া ছোট-বড় চার শতাধিক শিল্প-কারখানাও রয়েছে। এসব শিল্প-কারখানায় তিন লক্ষাধিক শ্রমিক কর্মরত। গত এক সপ্তাহ ধরে চলছে মির্জাপুরে ঘন ঘন লোডশেডিং। এতে জনজীবন বিপর্যস্ত। মানুষের সঙ্গে প্রাণিকুলের অবস্থাও ওষ্ঠাগত। কয়েক দিন ধরে এ উপজেলায় ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করেছে বলে কৃষি অফিস সূত্র জানিয়েছে। লোডশেডিং হলে বাড়ির মধ্যে দম বন্ধ হওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। শহরের তুলনায় ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ আরো বেশি।
বিশেষ করে এক সপ্তাহ ধরে গড়ে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। শুক্র ও শনিবার (৫ ও ৬ এপ্রিল) দিনে অন্তত ১২ থেকে ১৫ বার বিদ্যুিবভ্রাট হয়েছে। টাঙ্গাইলের একমাত্র শিল্পাঞ্চল খ্যাত উপজেলার গোড়াই শিল্পাঞ্চলের মিল-কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া এই গরমে শিশুরা সর্দি-কাশিসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। মির্জাপুর বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী রিপন রাজবংশী জানান, তীব্র দাবদাহে দোকানে বসে থাকা যায় না। আবার ঘন ঘন লোডশেডিং চলছে। এতে ক্রেতাও কম আসছে।
পল্লী বিদ্যুৎ গোড়াই অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) খালিদ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জানান, তার অফিসের আওতায় ছোট-বড় মিলে ৪৫০ শিল্প-কারখানাসহ ৭২ হাজার গ্রাহকের জন্য বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ৫০ মেগাওয়াট। কিন্তু সরবরাহ করা হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ মেগাওয়াট। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে লোডশেডিং কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।