ঈদে প্রচন্ড গরমে টাঙ্গাইলের বিনোদন স্পটগুলোতে মানুষের আনন্দ

টাঙ্গাইল টাঙ্গাইল সদর টাঙ্গাইল স্পেশাল বিনোদন লিড নিউজ

সাদ্দাম ইমন ॥
পবিত্র ঈদুল ফিতরে প্রচন্ড রোদ ও গরমকে বরণ করে নিয়েছে টাঙ্গাইলবাসী। এরই মধ্যে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে টাঙ্গাইল জেলার বিনোদন স্পটগুলোতে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভীড় দেখা গিয়েছে। এবার টাঙ্গাইল জেলার প্রায় বিনোদন কেন্দ্রে ভীড় লক্ষ্য করা গেছে।
বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকালে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ পরেন ধর্মপ্রাণ মুসুল্লীরা। বিগত বছরে দেখা যায় ঈদের নামাজ পড়ে সবাই বেড় হয়ে পড়েন বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে। কিন্তু এবার সেই দৃশ্য চোখে পড়েছে কম। কারণ টাঙ্গাইল জেলায় প্রচন্ড তাপদাহ চলছে। তাই অনেকেই ঈদ উদযাপন করেছেন বাড়ীতেই পরিবারের সাথে। তারপরও ঈদ আনন্দ উদযাপন করতে ঈদের পরদিন শুক্রবার (১২ এপ্রিল) জেলার বিভিন্ন স্পটগুলোতে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি দেখা গেছে।
ঈদকে কেন্দ্র করে দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখোরিত টাঙ্গাইলের সকল বিনোদন কেন্দ্রগুলো। এবার ঈদে টাঙ্গাইল শহরের অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র ডিসি লেক, এসপি পার্ক, সন্তোষ মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাস, ঘারিন্দা রেলস্টেশনে সকল বয়সী মানুষের ভীর দেখা গেছে। সবাই যে যার মতো করে প্রিয়জনদের নিয়ে ঈদের আনন্দ উপভোগ করছেন। বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে কেউ নাগরদোলা ও দোলনায় দোল খাচ্ছেন। কেউবা আবার দিঘী ও বিলের জলে নৌকায় ভেসে বেড়াচ্ছেন। কেউবা আবার ট্রেনে ছুটে বেড়াচ্ছেন। কেউবা আবার ব্যস্ত আড্ডা ও সেলফি তোলায়। সবাই নিজেদের মতো করে নেচে গেয়ে আনন্দময় সময় কাটাচ্ছেন। সবচেয়ে বেশী আনন্দ উপভোগ করছে শিশুরা।
টাঙ্গাইল জেলার অন্যান্য বিনোদন স্পটগুলো ঘুরে দেখা গেছে, প্রকৃতি উপভোগ করতে মধুপুর বনাঞ্চল, মধুপুর বিএডিসি বীজ উৎপাদন খামার, ধনবাড়ী নবাব বাড়ী, গোপালপুরে নির্মানাধীন ২০১ গম্বুজ মসজিদ, হেমনগর জমিদার বাড়ী, ভূঞাপুর যমুনা নদী র্তীরবর্তী এলাকা, বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকা, যমুনা রিসোর্ট, নৌপথে গোবিন্দাসী থেকে গাবসারা চরাঞ্চল, কালিহাতীর চারান বিল, এলেঙ্গা রিসোর্ট, ঘাটাইলের ধলাপাড়া চৌধুরীবাড়ী, ঘাটাইল-ঝড়কা ও ধলাপাড়া পাহাড়ী সড়ক, ঘাটাইল শাপলা শিশু পার্ক ও সাগরদীঘি অনিক নগর পার্ক, সখীপুর বনাঞ্চল, বাসাইলের বাসুলিয়া বিল, নকির বিল, মির্জাপুর মহেড়া জমিদার বাড়ী, দেলদুয়ার জমিদার বাড়ী, আতিয়া জামে মসজিদ, নাগরপুর জমিদার বাড়ী, উপেন্দ্র সরোবর, ধলেশ্বরী সেতু, পাকুটিয়া জমিদার বাড়ী, নাগরপুর ধুবুরিয়া স্বপ্ন বিলাস চিরিয়াখানা, দাবনজর ওয়াটার গার্ডেন, বরুহা বুরো ট্রেনিং সেন্টার, টাঙ্গাইলের ডিসি লেক, টাঙ্গাইলের এসপি পার্ক, দি টাঙ্গাইল ফিলিং স্টেশন এন্ড দ্রুব ইন রেস্টুরেন্ট, চিকি রেস্টুরেন্ট, ঘারিন্দা রেলস্টেশন ছাড়াও যমুনা নদী তীরবর্তী নির্মানাধীন বাধ এলাকাগুলোতে দর্শনার্থীদের অনেক ভিড়। বহু বিনোদন পিপাসু মানুষ তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদের আনন্দ উপভোগ ও সময় কাটিয়েছেন ঘুরে বেরিয়ে। এদের মধ্যে যুবকরাই বেশি রয়েছে। তারা মোটরসাইকেল নিয়ে বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রগুলো ঘুরছে। ফাঁকা সড়ক, মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
ঈদের সময়ে স্বপরিবারে বেড়াতে বের হয়েছেন জসিম উদ্দিন। তিনি টাঙ্গাইল নিউজবিডিকে জানান, প্রচন্ড গরমকে উপেক্ষা করে আজ ছেলে-মেয়েদের আবদার রক্ষা করতে একটু বের হতে হয়েছি। বিগত ঈদে অনেক মজা করেছি। এবারও পরিবারের সকলকে নিয়ে মজা ও আনন্দ করছি। সব কিছু বন্ধ থাকায় যানজটের কবলে পড়তে হচ্ছে না। টাঙ্গাইলে ঘুরতে আসা আরেক দর্শনার্থী রুনা আক্তার টাঙ্গাইল নিউজবিডিকে জানান, গাড়ী বন্ধ থাকায় দুরে কোথাও যাওয়া হচ্ছে না। তাই রিকশায় করে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছি। মোটরসাইকেল নিয়ে আড্ডারত ৭-৮ জন যুবক টাঙ্গাইল নিউজবিডিকে জানান, প্রতিবার আমরা টাঙ্গাইলের প্রায় সব বিনোদন কেন্দ্রে ঘুরে বেড়াতাম। কিন্তু এবার গরমের কারনে কয়েকটা জায়গায় গিয়েছিলাম। সাধ্যমতো মজা করেছি। এখন তাই বসে বসে আড্ডা দিচ্ছি।
ঈদ উপলক্ষে যমুনা নদীর পাড়ে বহু দর্শনার্থী বেড়াতে এসেছে। বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব এলাকায় গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। মূলত ঈদ উৎসবকে কেন্দ্র করে টাঙ্গাইলসহ আশপাশের জেলা থেকে ঘুরতে এসেছে দর্শনার্থীরা। বন্ধুবান্ধবদের পাশাপাশি পরিবার নিয়ে এসেছে অনেকেই। মোটামুটি ভালই ভিড় রয়েছে। টাঙ্গাইল সদর থেকে আসা যুবক মানিক মিয়া টাঙ্গাইল নিউজবিডিকে বলেন, গরমের কারণে জেলার সব বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে গিয়ে শান্তি নাই। তাই বন্ধুদের সঙ্গে যমুনা নদীর পাড়ে ঘুরতে এসেছি। শিশু সিনথিয়া টাঙ্গাইল নিউজবিডিকে জানায়, ঈদ উপলক্ষে বাবা ও ভাইয়ের সঙ্গে বেড়াতে এসেছে সে। বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব এলাকার বেলটিয়া গ্রামের বাসিন্দারা টাঙ্গাইল নিউজবিডিকে জানান, ঈদ উপলক্ষে শত শত মানুষ সেতু এলাকায় বেড়াতে আসছে। এতে আমরাও অনেক মজা করছি।

 

 

 

৩৪৯ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *