
আদালত সংবাদদাতা ॥
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার চাম্বলতলা গ্রামের চৌরাসা মিনহাজ তালুকদার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির একছাত্রীকে অপহরণের পর ২২ দিন আটকে রেখে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ঘাটাইল থানা পুলিশ অভিযোগ আমলে না নেওয়ায় রোববার (২১ এপ্রিল) দুপুরে টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবার।
মামলায় ঘাটাইল উপজেলার রহমতখার বাইদ গ্রামের দুলাল মন্ডলের ছেলে নাজমুল হাসানকে (২৬) প্রধানসহ যৌন নিগ্রহে সহযোগিতা করায় আরও তিনজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হচ্ছেন- একই গ্রামের মৃত সরাফত আলীর ছেলে ঝুমুর আলী (৪৫), জবেদ আলী মন্ডলের ছেলে দুলাল মন্ডল (৬০) ও দুলাল মন্ডলের স্ত্রী নাজমা বেগম (৫০)।
মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার চাম্বলতলা গ্রামের চৌরাসা মিনহাজ তালুকদার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থী স্কুলে যাওয়া-আসার পথে বিভিন্ন সময় নাজমুল তাকে কু-প্রস্তাব দেয়। পরে চলতি বছরের (২০ মার্চ) সন্ধ্যায় ওই শিক্ষার্থী প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘরের বাইরে বের হলে নাজমুল ও তার সহযোগীরা তাকে অপহরণ করে। পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার উপর একাধিকবার যৌন নিগ্রহ চালায়। মেয়েকে না পেয়ে পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজির পর জানতে পারে তাকে নাজমুল অপহরণ করে নিয়ে গেছে। এরমধ্যে ওই শিক্ষার্থীকে নাজমুল বিয়ে করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।
অভিযুক্ত সহযোগীদের সহায়তায় নাজমুলের বাড়িতে তাকে আটকে রাখে এবং বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে যৌন নিগ্রহ চালাতে থাকে। পরে পরিবারের লোকজন একত্রিত হয়ে গত (১২ এপ্রিল) ওই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিরে আসে। এ সময় ওই শিক্ষার্থী জানায়, তার উপর ধারাবাহিকভাবে যৌন নিগ্রহ চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় গত (১৪ এপ্রিল) ঘাটাইল থানায় ওই ছাত্রীর মা বাদি হয়ে মামলা করতে গেলে পুলিশ তা আমলে নেয়নি। অনুনয়-বিনয় করার পরও পুলিশ তাদের অভিযোগ নেয়নি। পরে যৌন নিগ্রহের বিচার পেতে টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার বাদি ওই স্কুলছাত্রীর মা জানান, থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ কোন কথা না শুনে তাকে তাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি অনুনয়-বিনয় করে অভিযোগ নিতে বললেও তা রাখা হয়নি। তিনি মেয়ের উপর যৌন নিগ্রহের উপযুক্ত বিচার দাবি করেন।
এ বিষয়ে ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালামের সাথে মুঠোফোনে বলেন, এ বিষয়ে ওই পরিবারের কারও সাথে আমার সামনা সামনি কথা হয়নি। আমি খোঁজখবর নিচ্ছি।
মামলায় বাদি পক্ষের আইনজীবী আরফান আলী মোল্লা জানান, এক স্কুলছাত্রীর মা বাদি হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অপহরণ ও যৌন নিগ্রহের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। বাদি যাতে ন্যায় বিচার পান সে বিষয়ে তিনি লক্ষ্য রাখবেন।