সখীপুরে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যানকে অবরুদ্ধ

টাঙ্গাইল লিড নিউজ সখিপুর

সখীপুর প্রতিনিধি ॥
টাঙ্গাইলের সখীপুরে বিনামূল্যে বিদেশে পাঠানোর নামে প্রতারণা ও টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৬ নং কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল মিয়া ও তার ছেলে আলমগীর হোসেন চাঁনেকে ঘন্টা ব্যাপী পরিষদের রুমে তালাবদ্ধ করেছিলেন ভুক্তভোগীরা। বুধবার (১৫ মে) সকাল ১২ টা থেকে ১টা পর্যন্ত ৬০ জন ভুক্তভোগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নির্ধারিত অফিসে তাদের কে তালাবদ্ধ করে রাখেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল মিয়া প্রায় ৮-৯ মাস আগে বিনামূল্যে বিদেশ পাঠানোর কথা বলে একই ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের অর্ধশতাধিক দরিদ্র মানুষের কাছ থেকে পাসপোর্ট নেন। তারা জানান, শুরুতে বিনামূল্যে বিদেশ পাঠানোর কথা বললেও পরবর্তীতে বিভিন্ন খরচের নামে কারো থেকে ৫০ হাজার, কারো থেকে ১ লাখ, আবার কারো থেকে দেড় লাখ পর্যন্ত টাকা আদায় করেন চেয়ারম্যান জামাল মিয়া।
ভুক্তভোগীরা জানান, এরপরে ৮-৯ মাস অতিবাহিত হলেও তারা বিদেশ যেতে না পারলে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন তাদেরই ভোটে নির্বাচিত চেয়ারম্যানের মাধ্যমে তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন। ঢাকায় নিয়ে মেডিকেল করা এবং টাকা নেয়ার সময় ইমেইল মেসেজ দেখানো এসবই ছিল চেয়ারম্যানের প্রতারণার অংশ।
পরে ভুক্তভোগীরা চেয়ারম্যানের কাছে টাকা দাবি করলে তিনি বুধবার (১৫ মে) এর মধ্যে বিদেশ পাঠাতে না পারলে টাকা ফেরত দেয়ার আশ্বাস দেন। ভুক্তভোগীদের বিদেশ পাঠাতে না পারলে চেয়ারম্যানের দেয়া নির্ধারিত সময়ে ভুক্তভোগীরা কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদে টাকা চাইতে গেলে চেয়ারম্যান জামাল মিয়ার ছেলে আলমগীর হোসেন চাঁন ও তার সহযোগীরা ভুক্তভোগীদেরকে পরিষদের একটি কক্ষে আটক করে মারধর করেন বলে ভুক্তভোগীদের কয়েকজন অভিযোগ করেন। পরে সখীপুর থানার এসআই মান্নান ও সঙ্গীও পুলিশ সদস্যরা গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে।
পরে এ খবর জানাজানি হলে ভুক্তভোগী স্থানীয় লোকজন কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কক্ষে চেয়ারম্যান জামাল মিয়া ও তার ছেলেকে দীর্ঘ সময় অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে চেয়ারম্যান জামাল মিয়া ও তার ছেলে আলমগীর হোসেন চান আগামী ২২ মে ভুক্তভোগীদের টাকা এবং পাসপোর্ট ফেরত দেয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২ মে) কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল মিয়ার বিরুদ্ধে মোট ১০ টি অভিযোগ উল্লেখ করে একই ইউনিয়নের ৯ ইউপি সদস্য সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সরকারি বিভিন্ন দফতর বরাবর লিখিত অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেন।
চেয়ারম্যান জামাল মিয়ার বক্তব্য ছেলে আলমগীর হোসেন চান আগামী ৫ জুন আসন্ন সখীপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দাঁড়িয়েছে। তাই সে যেন নির্বাচিত হতে না পারে একারণেই পরিকল্পিতভাবে এসব কথা ছড়ানো হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ হোসেন পাটোয়ারী বলেন, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোর বিষয়ে তদন্ত এখনো চলছে। তিনি দোষী প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অভিযোগের বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিয়ন্তা বর্মন বলেন, এ বিষয়ে যেহেতু এখনো তদন্ত চলছে তাই এখনই কোনো মন্তব্য করা যাবে না।

৩০৯ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *